পুলিশের একটি সূত্র স্টার অনলাইনকে বলেছে, ‘দেশটির কর্তৃপক্ষ বিশ্বাস করে সন্দেহভাজন ব্যক্তি নিজ দেশে (বাংলাদেশে) হামলার পরিকল্পনা করতেন। সে লক্ষ্যে তিনি প্রতিদিনই স্বদেশীদের নিয়ে বৈঠক করতেন।’
ওই সূত্রটি আরো জানায়, সন্দেহভাজন ব্যক্তিটি বাংলাদেশে একে-৪৭ রাইফেল চোরাচালানের সঙ্গেও জড়িত।
মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আন্দালিব ২০১২-২০১৫ পর্যন্ত মালয়েশিয়ায় অবস্থান করেন। এরপর তিনি তুরস্কের ইস্তানবুলে চলে যান।
মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান (আইজিপি) তান শ্রী খালিদ আবু বকর বলেন, ‘আগস্টের ২ তারিখ থেকে ১৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই ব্যবসায়ীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছিল কাউন্টার টেররিজম বিভাগের বুকিত আমান স্পেশাল ব্রাঞ্চ।’
‘এই বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেফতার করা হয়েছিল ১৯ আগস্ট। তিনি ইন্টারপোলের রেড নোটিসের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তাকে ২ সেপ্টেম্বর দেশ থেকে বিতারণ করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।’ বৃহস্পতিবার এক বিবৃতে জানান মালয়েশিয়ার পুলিশ প্রধান।
গত ১ জুলাই গুলশানে হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিকসহ ২০ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরদিন ভোরে কমান্ডো অভিযানে পাঁচ জঙ্গি নিহত হন। তাদের একজনের নাম আন্দালিব আহমেদ বলে সে সময় ফেইসবুকে আলোচনা শুরু হয়। তবে নিহতদের মধ্যে কেউ আন্দালিব নন বলে পরে পুলিশ নিশ্চিত করে।
এদিকে, কুয়ালালামপুর থেকে যে বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠানোর কথা জানিয়েছে স্টার অনলাইন তার বিষয়েও কোনো তথ্য পুলিশের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। একইসঙ্গে আন্দালিবের বিষয়টিও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
বিশেষ অভিযানে গ্রেফতার বাকি তিনজনের মধ্যে রয়েছেন ৩৮ বছর বয়সী নেপালী একজন ব্যবসায়ী, ২৬ বছর বসয়ী একজন মরোক্কান নাগরিক এবং ৩৪ বছর বয়সী একজন মালয়েশিয়ান নাগরিক।
‘নেপালী নাগরিক গ্রেফতার হয়েছিলেন ১৯ আগস্ট এবং দেশ থেকে বিতারণ করা হয় ২ সেপ্টেম্বর। তিনি হোটেল এবং একটি বিনোদন কেন্দ্র পরিচালনা করতেন।’
‘আমরা বিশ্বাস করি তিনি সন্ত্রাসীদের গমনাগমনের ক্ষেত্রে ভুয়া কাগজপত্র তৈরিতে সিদ্ধহস্ত ছিলেন।’ বলেন খালিদ।
তিনি বলেন, ‘তৃতীয় সন্দেহভাজন মরোক্কোর নাগরিক পেশায় একজন ওয়েল্ডার (ঢালাইকর)। তিনি মরক্বোর প্রশাসনকে ফাঁকি দিতে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান।’
‘সিরিয়ায় অবৈধ প্রবেশ করার অপরাধে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ এর আগে তাকে গ্রেফতার করেছিল। ছাড়া পাওয়ার পর তিনি মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করেন।’ বলেন পুলিশ প্রধান খালিদ আবু বকর।
তাকে ২ আগস্ট গ্রেফতার করে ২১ সেপ্টেম্বর দেশ থেকে বিতাড়িত করা হয় বলে জানান তিনি।
আইজিপি বলেন, ‘চতুর্থ সন্দেহভাজন মায়েশিয়ান নাগরিক পেশায় এক ব্যবসায়ীর গাড়ি চালক। চরমপন্থী হিসেবে পরিচিত মোহাম্মাদ ওয়ান্দি মোহাম্মাদ জেদির সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন তিনি।’
‘আমরা বিশ্বাস করি তিনি ফেসবুকের মাধ্যমে আইএসের প্রচারণা ও আদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ করতেন। গোপন সূত্রে জানা গেছে তিনি ২০১৪ সাল থেকে আইএসের সঙ্গ জড়িত।’ – বলেন পুলিশ প্রধান।
ওই ব্যবসায়ী গাড়ির আমদানি করতেন পোর্ট ক্লাংয়ে।
মালয়েশিয়ায় ২০১৩ সালের ফ্রেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত জঙ্গি সন্দেহে ২৪০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্টার অনলাইন।