‘ধর্ষণকারীর চাচা আ’লীগ নেতা তাই পুলিশ ধরছে না’

 In প্রধান খবর

 

‘ধর্ষণকারীর চাচা আ’লীগ নেতা তাই পুলিশ ধরছে না’

ধর্ষণের শিকার রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের শহীদ জিয়াউর রহমান স্কুলের নবম শ্রেণীর ছাত্রী মামলা করে বিপাকে পড়েছেন। আসামিরা মামলা তুলে নিতে প্রতিনিয়ত তার পরিবারের সদস্যদের হুমকি ধমকি দিচ্ছেন। ছাত্রীটির অভিযোগ ধর্ষণকরারীর চাচা আওয়ামী লীগ নেতা হওয়ায় পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।

সে জানায়, তাকে স্কুল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। ‘নষ্টা মেয়ের’ অপবাদ দিয়ে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।

‘ধর্ষক’ রাশেদুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও তার চাচা আওয়ামী লীগ নেতা বড়বালা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেব আলী ও তার তিন সহযোগী এখনও গ্রেফতার হয়নি। তারা প্রকাশ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছে।

ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে ১ সেপ্টেম্বর রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার বড়বালা ইউনিয়নের তরফ বাহাদি গ্রামের।

ভুক্তভোগী ছাত্রীটি স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ছড়ান বাজারে অবস্থিত স্টুডিওর মালিক রাশেদুল ইসলাম তাকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত। তাকে ১ সেটেম্বর জোর করে স্টুডিওর ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করে।

এরপর ওই ছাত্রী অভিভাবকদের বিষয়টি জানালে রাশেদুলের বাবা শাহাদুর রহমান দুলাল, ইউপি চেয়ারম্যান সাহেব আলী সরকারসহ অন্যরা ধর্ষিতা স্কুলছাত্রী ও তার স্বজনদের মারপিট করে। এতে গুরুতর আহত অবস্থায় ওই ছাত্রীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।

এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর মা ইউপি চেয়ারম্যান সাহেব আলী সরকারসহ পাঁচজনকে আসামি করে মিঠাপুকুর থানায় মামলা করে। পরে পুলিশ রাশেদুলকে গ্রেফতার করে।

হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে ছাত্রীটি বাড়ি ফিরলে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান তার হাতে টিসি (ট্রান্সফার সার্টিফিকেট) দিয়ে তাকে স্কুলে থেকে বের করে দেয়।

এ ঘটনা জানাজানি হলে স্থানীয়ভাবে তোলপাড় শুরু হয়। গত মঙ্গলবার মিঠাপুকুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ, এসি ল্যান্ড মাসুমা আরেফিন ও ওসি হুমায়ুন কবীর ওই স্কুলে যান। তারা প্রধান শিক্ষকের কাছে জানতে চান, কেন স্কুলছাত্রীকে টিসি দেওয়া হলো।

প্রধান শিক্ষক আনিসুর রহমান ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি লুৎফর রহমান কোনো যুক্তি দেখাতে পারেননি। ফলে ওই ছাত্রীকে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার ‍সুযোগ দিতে স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে প্রধান শিক্ষক নিজে গিয়ে ওই ছাত্রীকে স্কুলে নিয়ে আসেন।

ইউপি চেয়ারম্যান সাহেব আলীসহ বাকি চার আসামি এখনও গ্রেফতার হয়নি। ছাত্রীর মা আফরোজা বেগম অভিযোগ করেন, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তিনি আসামিদের দ্রুত বিচার দাবি করেছেন।

মিঠাপুকুর থানার ওসি হুমায়ুন কবীর জানান, ‘রাশেদুল ইসলামকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামমুনুর রশীদ জানান, ‘স্কুল কর্তৃপক্ষ বেআইনিভাবে ওই ছাত্রীকে টিসি দিয়েছিল। এ ব্যাপারে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

মামলার অন্য আসামিদের গ্রেফতার করতে পুলিশকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

Recent Posts

Leave a Comment