এ জায়গাটি সে সময়কার মানুষদের কাছে প্রার্থনা ও সভাস্থল হিসেবে বিবেচিত হতো। কোন কোন প্রত্নতাত্ত্বিক পায়ের চিহ্ন দেখে মনে করেন জায়গাটাতে নৃত্য করা হতো এ জন্য তারা এটাকে ‘ড্যান্স হল’ নাম ও দিয়েছেন।
জায়গাটি প্রথমদিকে হয়তো কর্দমাক্ত ছিল এবং তখনকার মানুষগুলো সেখানে ধর্মীয় বা গোষ্ঠিগত কারণে জমায়েত হয়েছিল। নয় কিলোমিটার দূরে থাকা ওল দৈন্ন লেঙাই আগ্নেয়গিরীর অগ্নোৎপাতের ফলে হয়তো সে জায়গাটি শক্ত হয়ে যায়। সেটাও আবার বেশিবছর হয়তো থাকতো না যদি এর উপরে আবার আগ্নেয়গিরীর ছাই জমা না পড়তো। তার উপর আরও কয়েকবার ছাপ পড়ে টিকে যায় সে পদচিহ্নগুলো। আমাদের আদি পুরুষদের জীবনযাত্রা এবং আচার আচরণ বুঝতে খুবই কাজে দেবে আফ্রিকাতে পাওয়া এ পদচিহ্নগুলো। আফ্রিকা মহাদেশেই মানবজাতির পথচলা শুরু হয়েছে বলেই মনে করেন বেশিরভাগ ঐতিহাসিক ও পুরাতাত্ত্বিক। প্রায় ১৯ হাজার বছর পুরনো পদচিহ্ন আবিষ্কার নৃতাত্ত্বিক ও পুরাতাত্ত্বিকদের সামনে ভাবনার উপকরণ নিয়ে হাজির হবে সেটা বলাই বাহুল্য।
নিউ ইয়র্ক (যুক্তরাষ্ট্র) সিটি ইউনিভার্সিটির পুরাতাত্ত্বিক উইলিয়াম হারকোর্ট স্মিথ ন্যাশনাল জিওগ্রাফিককে বলেন-‘এটা আসলে খুবই জটিল একটা সাইট। একটা জায়গাতে অনেকগুলো পায়ের চিহ্ন। আমরা তো এর নিকনেইম দিয়েছি ‘ড্যান্স হল’ বলে। আমি কখনো একসাথে এত পায়ের চিহ্ন দেখিনি। ব্যাপারটা আসলে নাড়া দেওয়ার মতোই।
অ্যাপলেচিয়ান স্টেইট ইউনিভার্সিটির ভূতাত্ত্বিক ও ন্যাশনাল জিওগ্রাফিকের ট্রাস্টি ড. সিনথিয়া লিওটকাস পিয়ার্স এর নেতৃত্বে একটি গবেষকদল সেখানে গবেষণা চালাচ্ছেন।
ড. সিনথিয়া বলেন-‘এই পায়ের চিহ্নগুলো তৈরি হয়েছে ১০ থেকে ১২ হাজার বা ১৯ হাজার বছর পূর্বে। তার মানে এনগারে সারোর এই পদচিহ্নগুলো প্লাইস্টোসিন যুগের আদি নিদর্শন। বিশ্বের একটি বিস্ময়কর নিদর্শন এ চিহ্নগুলো। প্লাইস্টোসিন যুগে আমাদের আদিমানবরা কীভাবে থাকত, তাদের জীবনযাত্রা কেমন ছিল, আচার-আচরণ কেমন ছিল তা বুঝতে খুব কাজে দেবে এ নিদর্শনগুলো।’
এখনো আফ্রিকার মাসাই সম্প্রদায় সে আগ্নেয়গিরীকে খুবই পবিত্র বলে মনে করে। মাসাইরা তাদের এই তীর্থস্থানে দেবতা এনগাইকে শ্রদ্ধা জানাতে আসে। সূত্র : ডেইলি মেইল