ভুয়া ঋণে বিপুল অর্থ আত্মসাৎ

 In ব্যবসা বাণিজ্য
রাজধানীর আদাবর প্রাইম ব্যাংকের রিংরোড শাখায় ভয়ংকর জালিয়াতির ঘটনা ঘটেছে। খোদ ব্যাংক কর্মকর্তাদের যোগসাজশে ১৫ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়ার সত্যতা মিলেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রাথমিক তদন্তে। এতে প্রাইম ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখা ব্যবস্থাপক থেকে শুরু করে উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের জড়িত থাকার বিষয়ে সন্দেহ করা হয়েছে। পাশাপাশি একই ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংকের আরেকটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি ইতিমধ্যেই তাদের প্রতিবেদন গভর্নরের কাছে জমা দিয়েছে।

এছাড়া ওই জালিয়াতির ঘটনার তদন্তে মাঠে নেমেছে রাষ্ট্রের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থা ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব তদন্ত শেষ হলে আত্মসাৎকৃত অর্থের পরিমাণ আরও বেড়ে যাবে বলে আভাস দিয়েছেন তদন্ত সংশ্লিষ্টরা।

জানা গেছে, ব্যাংকটিতে নজিরবিহীন এই জালিয়াতির ঘটনার শুরু এখন থেকে পাঁচ বছর আগে। ২০০৯ সালের অক্টোবরে প্রাইম ব্যাংকের রিংরোড শাখা খোলার শুরুতেই। জালিয়াতির মাধ্যমে বন্ধকি সম্পত্তি আত্মসাৎ এবং গ্রাহকের গচ্ছিত আমানতের বিপরীতে ভুয়া ঋণ দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়। তবে বিস্ময়কর তথ্য হচ্ছে- জালিয়াতির এমন ঘটনার বিষয়ে ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে পূর্বাভাস পাঠানো হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ রহস্যজনক কারণে তা আমলে নেয়নি। শুধু তাই নয়, পর্দার আড়ালে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ।

অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। গত সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক ঝটিকা পরিদর্শনে বেরিয়ে আসে ‘থলের বিড়াল’। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শনে অন্তত ৫৩টি জালিয়াতির সুম্পষ্ট প্রমাণ মেলে। এতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। আর ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অর্থ ও বন্ধকি জমি ফিরিয়ে দিতে দিকনির্দেশনা দেয়া হয় প্রতিবেদনে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ২৪ সেপ্টেম্বর প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) বরাবরে প্রতিবেদনের কপি পাঠায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। তবে এখন পর্যন্ত এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রাইম ব্যাংক। এমন পরিস্থিতিতে প্রতিকার চেয়ে প্রতিদিনই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন ভুক্তভোগীরা।

জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) কাছে আসা একজন ভুক্তভোগীর অভিযোগের সূত্র ধরে উল্লিখিত চাঞ্চল্যকর তথ্য-উপাত্ত যুগান্তরের হাতে আসে। এরপর নিজস্ব অনুসন্ধানে মিলেছে এসব তথ্যের প্রাথমিক সত্যতা।

এ প্রসঙ্গে প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আহমেদ কামাল খান চৌধুরীর মন্তব্য নিতে বুধবার বিকাল ৪টা ৭ মিনিট ও ৪টা ১৪ মিনিটে দু’দফায় তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কেউ রিসিভ করেননি। এরপর ৪টা ১০ মিনিটে একই মোবাইল নম্বরে এমডির বক্তব্য চেয়ে একটি এসএমএস পাঠানো হয়। এতেও সাড়া দেননি তিনি। তবে ৪টা ২৪ মিনিটে এই প্রতিবেদকের মোবাইল ফোনে কল করেন প্রাইম ব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও জনসংযোগ প্রধান মো. মনিরুজ্জামান। তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, এমডি স্যারের কাছে কি জানতে চান। বিষয়টি জানানো হলে তিনি বলেন, একটু অপেক্ষা করেন, এমডি স্যারের সঙ্গে কথা বলে জানাচ্ছি। রাত সাড়ে ৮টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তিনি আর ফিরতি ফোন করেননি। এমনকি রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত তার নম্বরে দু’বার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

জালিয়াতির অবিশ্বাস্য ঘটনা : অনুসন্ধানে জানা গেছে, আবু জাফর মোহাম্মদ ছালেহ নামের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা চাকরি জীবনের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে মোহাম্মদপুর কাটাসুর মৌজায় চার দশমিক ৫ শতাংশ জমি কিনেছিলেন। সেখানে তিনি বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনা করছিলেন। ইতিমধ্যে কুয়েতের বাংলাদেশ দূতাবাসে তার পোস্টিং হয়ে যায়। কিন্তু ২০০৯ সালে ছুটিতে তিনি দেশে ফিরলে তার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। তিনি জানতে পারেন তার জমিটি নাকি নিলামে উঠেছে। ঋণখেলাপির দায়ে তার ওই জমি বিক্রির জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ করেছে প্রাইম ব্যাংক। ঘটনা জেনে আবু জাফর হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। তিনি নিলাম বিজ্ঞপ্তির কাটিং নিয়ে প্রাইম ব্যাংকের রিংরোড শাখায় ছুটে যান। কিন্তু ব্যাংক কর্মকর্তারা তার সঙ্গে কোনো কথাই বলতে চায়নি। এমনকি তাকে ব্যাংক থেকে একরকম ঘাড় ধরে বের করে দেয়া হয়। এরপর তিনি যান সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিসে। ভূমি অফিস তার কাগজপত্র দেখে প্রাইম ব্যাংকের কাছে ওই জমির বন্ধকি কাগজপত্র তলব করে। ব্যাংক জমি সংক্রান্ত কাগজপত্র নিয়ে হাজির হলে প্রাইম ব্যাংকের জালিয়াতির অভিনব চিত্র বেরিয়ে আসে। এতে দেখা যায়, ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশেই জালিয়াতির ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এজন্য আতিকুল ইসলাম রতন নামের এক গ্রাহককে ব্যবহার করা হয়। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে প্রাইম ব্যাংক থেকে আতিকুল ইসলামের নামে ওই ব্যক্তিকে ২ লাখ টাকার ব্যক্তিগত ঋণ দেয়া হয়। কিন্তু ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করে রতন ঋণখেলাপিতে পরিণত হন। এরপরও তার নামে বৃত্ত বিজনের সেন্টার নামের আরেকটি ভুয়া ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব খোলা হয়। তার এই ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে কাটাসুর মৌজার চার দশমিক পাঁচ শতাংশ জমি বন্ধক রেখে মোটা অংকের ঋণ ইস্যু করা হয়।

ওই ভুয়া ঋণ সংক্রান্ত নথিপত্র ঘেঁটে দেখা যায়, এই জালিয়াতির জন্য আতিকুল ইসলাম রতনকে জমির মালিক সাজিয়ে দলিল, খাজনা, খতিয়ানসহ বিভিন্ন কাগজপত্র হুবহু নকল করা হয়। এরপর এসব ভুয়া কাগজপত্রের ভিত্তিতে দু’দফায় ৪০ লাখ টাকা ঋণ মঞ্জুর করে প্রাইম ব্যাংক। এর কিছুদিন পর ঋণখেলাপির অজুহাতে ব্যাংকের পক্ষ থেকে জমিটি নিলামে বিক্রির তোড়জোড় শুরু হয়। ব্যাংকের এই নিলাম বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর জমির প্রকৃত মালিক আবু জাফর মোহাম্মদ ছালেহ সীমাহীন ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। জমি উদ্ধারে তিনি বিভিন্ন দফতরে ধরনা দিতে শুরু করেন।

আবু জাফর  বলেন, জমির নিলাম হচ্ছে শুনে তিনি বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন। নানা দেনদরবারের পর ভূমি অফিস থেকে আদালত সবখানেই তিনি তার পক্ষে রায় পান। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নিলাম স্থগিতের আদেশ দিয়ে অবিলম্বে প্রকৃত মালিককে জমি বুঝিয়ে দিতে নির্দেশ দেয় ভূমি অফিস। কিন্তু প্রাইম ব্যাংক জমির দখল ছাড়তে রাজি হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ১৮ এপ্রিল ঘটনার বিস্তারিত জানিয়ে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে চিঠি লেখেন। তার চিঠির সূত্র ধরে প্রাইম ব্যাংকের রিংরোড শাখায় ঝটিকা পরিদর্শন চালায় বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন উপবিভাগের একটি সূত্র জানায়, সংশ্লিষ্ট অভিযোগ পেয়ে প্রাইম ব্যাংকে একটি নিবিড় পরিদর্শন পরিচালনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়। তারা ২০ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংকের রিংরোড শাখায় হাজির হয়। টানা দু’দিন ধরে এ সংক্রান্ত দলিল- দস্তাবেজ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পরিদর্শন দলের সদস্যরা গভর্নরের কাছে তিন পৃষ্ঠার গোপনীয় প্রতিবেদন জমা দেয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদনে যা আছে : বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর প্রাইম ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের একটি কপি পাঠানো হয়। এতে বলা হয়, শুধু আবু জাফরের জমি নয়, প্রাইম ব্যাংকের রিংরোড শাখা থেকে অন্তত ৫৩টি অনিয়মিত ঋণ সৃষ্টির মাধ্যমে বিপুল অংকের অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়েছে। জালিয়াতির এই বিষয়টিতে ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ, নিরীক্ষা ও ক্রেডিট ডিভিশনের দায়িত্বহীনতা প্রমাণিত। প্রতিবেদনে জালিয়াতির সময়কালে এসব বিভাগে কর্মরত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দায়-দায়িত্ব নিরূপণ করে তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিদর্শন প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রাপ্ত ঋণ বিবরণী অনুযায়ী রিংরোড শাখায় সংঘটিত ঋণ অনিয়মের মধ্যে ৫০টি ঘটেছে তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপক জাহানারা বেগম ও অপারেশন ম্যানেজার গোলাম মোস্তফার দায়িত্ব পালনকালে। এই দুই কর্মকর্তাসহ একটি সংঘবদ্ধ চক্র দিনের পর দিন পারস্পরিক যোগসাজশে ব্যাংক থেকে প্রায় ১৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, গ্রাহকের অর্থ ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাৎসহ আরও বেশ কয়েকটি অভিযোগের ভিত্তিতে অপারেশন ম্যানেজার গোলাম মোস্তফাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। কিন্তু তৎকালীন শাখা ব্যবস্থাপকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এছাড়া ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে শাখার সুপারিশের ভিত্তিতে প্রধান কার্যালয়ের অনুমোদনক্রমে ঋণ প্রদান করা হয়ে থাকে। তাই প্রাইম ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ, ক্রেডিট ডিভিশন কোনোভাবেই তাদের দায় এড়াতে পারে না। এক্ষেত্রে এসব বিভাগের নজরদারির অভাবে অথবা তাদের যোগসাজশেই এ ধরনের অনিয়ম সংঘটিত হয়েছে বলে প্রতীয়মান হয়। তাছাড়া প্রধান কার্যালয়ের নজরদারির অভাবে অভিযুক্ত শাখা ব্যবস্থাপক জাহানারা বেগম গং ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া ঋণ সৃষ্টির মাধ্যমে বিপুল অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়ে নির্বিঘেœ অবসরে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দলের একজন কর্মকর্তা  বলেন, ‘জনৈক আতিকুল ইসলাম রতনকে জমির ভুয়া মালিক সাজিয়ে প্রাইম ব্যাংক অন্যের জমি বিক্রির চেষ্টা করেছে। এজন্য যথাযথভাবে যাচাই-বাছাই না করেই প্রাইম ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় ঋণখেলাপির দায়ে বন্ধকি সম্পত্তিটি বিক্রির জন্য চিঠিও ইস্যু করেছে। অথচ আইনত ওই সম্পত্তির ওপর কোনোভাবেই ব্যাংকের মালিকানা স্বত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়নি।’

সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য : অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে সাবেক শাখা ম্যানেজার জাহানারা বেগম রোববার তার পরিবাগের বাসায় বসে আত্মপক্ষ সমর্থন করে বলেন, জালিয়াতির সব ঘটনা সম্পূর্ণ তার অজ্ঞাতে ঘটেছে। তাকে অন্ধকারে রেখে অত্যন্ত সুকৌশলে প্রতিটি জালিয়াতির ঘটনা ঘটিয়েছে তার অপারেশন ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা। শুধু প্রাইম ব্যাংক নয়, গোলাম মোস্তফা রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংক থেকেও ১৬ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, গোলাম মোস্তফা প্রাইম ব্যাংকের নওগাঁও শাখায় কর্মরত থাকার সময় সেখানে বড় ধরনের আর্থিক কেলেংকারি করেন। প্রাইম ব্যাংকে যোগদানের আগে যমুনা ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন। সেখানেও তার বিরুদ্ধে চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আসে। এসব জেনেশুনেও তাকে শাখা ওপেনিংয়ের দায়িত্বে পাঠানোর সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল না। সাবেক এই ম্যানেজার আরও দাবি করেন, প্রাইম ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগও প্রমাণ করতে পারেনি। আর এ কারণেই যথাযথ নিয়মে তিনি সব সুযোগ-সুবিধাসহ অবসর গ্রহণের সুযোগ পান।

বরখাস্তকৃত সাবেক অপারেশন ম্যানেজার গোলাম মোস্তফা প্রাইম ব্যাংকের দায়েরকৃত মামলায় গ্রেফতার হয়েছিলেন। কিন্তু তাকে বেশিদিন জেলে থাকতে হয়নি। সম্প্রতি জেল থেকে জামিনে বেরিয়ে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলেছেন তিনি। বুধবার গোলাম মোস্তফা  বলেন, ‘যা কিছু ঘটেছে তার সবকিছুই হয়েছে উচ্চপর্যায়ের নির্দেশে। কিন্তু প্রাইম ব্যাংকের উচ্চ পর্যায় এখন ঘোলাপানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে। তিনিও নিজেকে সম্পূর্ণ নির্দোষ দাবি করেন।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনারা প্রাইম ব্যাংকের কাছে ঘটনার বিষয়ে জানতে চান। তারাই প্রকৃত ঘটনা জানে। আমরা তো মাঠ পর্যায়ে কাজ করেছি। কাউকে একটি টাকা ঋণ দেয়ার ক্ষমতাও অপারেশন ম্যানেজারের নেই।’ ঘটনার বিষয়ে জানতে প্রাইম ব্যাংকের রিংরোড শাখায় গেলে দায়িত্বরত ব্যাংক কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে বিব্রতবোধ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, এই শাখায় দায়িত্ব পালন করতে এসে তারা চরম বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন। প্রায় প্রতিদিনই একাধিক ভুক্তভোগী ব্যাংকে হৈ-হট্টগোল করেন। এতে ব্যাংকের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। একজন কর্মকর্তা ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, রিংরোড শাখার আশপাশে বহু বাসিন্দা পাওনা টাকার জন্য প্রতিদিনই ব্যাংকে আসছেন। প্রতিদিনই তাদের গালিগালাজ শুনতে হচ্ছে। সাবেক কর্মকর্তাদের অপকর্মের দায়ভার তাদের বহন করতে হচ্ছে।

Recent Posts

Leave a Comment