চাঁদপুরে এবছর ১ লাখ ১৭ হাজার মে. টন সবজি উৎপাদনের লক্ষ্য

 In বিশেষ প্রতিবেদন, লিড নিউজ, শীর্ষ খবর

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরে চলতি বছর ১ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন শাক-সবজি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। প্রতিবছরই চাঁদপুরের ৮ উপজেলাসহ চরাঞ্চলগুলোতে শাক-সবজির ব্যাপক চাষাবাদ হয়ে থাকে। এসব শাক-সবজি বিক্রি করে এ অঞ্চলের কৃষকরা আর্থিক ভাবে এখন অনেকটা স্বাবলম্বী। যে কারনে তারা প্রতি বছরই রবি শস্যের পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি উৎপাদনে বেশ আগ্রহী হয়ে পড়েছে। তবে এসব চাষাবাদে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাই প্রধান ভূমিকা পালন করছে। দিনরাত পরিশ্রম করে শাক-সবজি উৎপাদনে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।
চাঁদপুর কৃষি বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, এ বছর পুরো জেলায় ৫ হাজার ৭শ ৯০ হেক্টর জমিতে শাক-সবজি চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। বিপরীতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ১ লাখ ১৭ হাজার ৭শ ১১ মেট্রিক টন। আবহাওয়ার অনুকূল পরিবেশ, পরিবহন সুবিধা, কৃষি বিভাগের সার্বক্ষনিক তদারকি, সহজলভ্য কৃষি উপকরন, কৃষিঋন প্রদান ইত্যাদি কারনে চাঁদপুরে ব্যাপক হারে শাক-সবজির উৎপাদন বেড়েছে।
সুত্র মতে উপজেলাওয়ারী পরিসংখ্যান হচ্ছে, চাঁদপুর সদরে ১ হাজার ১০৫ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৪শ ৬৬ মেট্রিক টন। মতলব উত্তরে ৯৫০ হেক্টর জমিতে ১৯ হাজার ৩শ ১৩ মেট্রিক টন, মতলব দক্ষিণে ৫শ হেক্টর জমিতে ১০ হাজার ১৬৫ মেট্রিক টন, হাজীগঞ্জে ৬৬৫ হেক্টর জমিতে ১৩ হাজার ৫১৯ মেট্রিক টন, শাহরাস্তিতে ৫৬০ হেক্টর জমিতে ১১ হাজার ৩৮৫ মেট্রিক টন, কচুয়ায় ৪শ হেক্টর জমিতে ৮ হাজার ১৩২ মেট্রিক টন, ফরিদগঞ্জে ৮৭০ হেক্টর জমিতে ১৭ হাজার ৬৮৭ মেট্রিক টন ও হাইমচরে ৭৪০ হেক্টর জমিতে ১৫ হাজার ৪৪ মেট্রিক টন উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এসব জমিতে আলু, ফুলকপি, বাধাকপি, বেগুন, লালশাক, লাউ, কুমড়া, সিম, মুলা, গাজর, খিরা, টমেটু, করলা, বরবটি, পালংশাক, ধনিয়া ইত্যাদি শাক-সবজি চাষাবাদ করা হয়ে থাকে।
বিশেষ করে মতলবের চরইলিয়ট, চর কাসিম, ষষ্ট খন্ড বোরোচর, সদরের রাজরাজেস্বও, জাহাজমারা, লগ্মিমারাচর, বাঁশগাড়ি, চিরারচর, ফতেজংপুর, হাইমচরের ঈশানবালা, চরগাজীপুর, মনিপুর, মধ্যচর, মাঝিরবাজার, সাহেব বাজার ইত্যাদি চরাঞ্চল এলাকার কৃষকরা ব্যাপক শাক-সবজি উৎপাদন করে থাকে। কিন্তু এসব অঞ্চলের কৃষকরা নদী ভাংতির কারনে ব্যাংকগুলো থেকে কৃষিঋণ পায় না। এছাড়াও চাঁদপুরের কুমারডুগি, মহামায়া, দেবপুর, মাস্টার বাজার, সুন্দরদিয়া, বলাখাল, রালদিয়াসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় এসব শাক-সবজি উৎপাদন হয়ে থাকে।
চাঁদপুরের চরাঞ্চলের কৃষকরা জানায়, আমরা সরকারি সুযোগ-সুবিধা সঠিক ভাবে পাচ্ছি না। বিনামূল্যে সার, বীজ ও কৃষি উপকরন পেলে আমরা চরাঞ্চলের কৃষকরা আরো বেশি পরিমানে শাক-সবজি উৎপাদন করতে পারতাম। তাই কৃষিঋণ ও সরকারি সব ধরনের সুবিধা গ্রহনের মাধ্যমে এ অঞ্চলে কৃষি ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি লাভের ইচ্ছা ব্যক্ত করেন তারা।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আলী আহমেদ জানান, চাঁদপুরের কৃষি বিভাগ কৃষকদের উন্নয়নে সর্বদাই সহযোগীতা করছে। ইতোমধ্যে প্রতিটি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে কৃষকদের সঠিক তালিকা তৈরী করে জমা দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে কৃষকরা সরকারি সকল সুবিধা যেনো পেতে পারে, সে ব্যাপারে আমরা সার্বক্ষনিক চেষ্টা করছি।

Recent Posts

Leave a Comment