নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের স্কুল শিক্ষা সম্প্রসারণে কাজ করে এমন একটি প্রতিষ্ঠান মামুনস টিউটোরিয়াল এর উদ্যোক্তা, গণিত শিক্ষক শেখ আল মামুন এই প্রতিবেদকের সাথে কথা প্রসঙ্গে জানান, নতুন এই উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে, বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের প্রায় ৯৫ ভাগ পরিবার এই বিনামূল্যে উচ্চশিক্ষার সুবিধা পাবে। ২০১৪ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী এখানে বাংলাদেশিদের গড় বাৎসরিক আয় পরিবার প্রতি ৫৫ হাজার ডলার। তবে এই ৫৫ হাজার ডলার আয় করেন মুষ্টিমেয় কিছু পরিবার। বাদ বাকী সবাই মূলত দারিদ্র সীমার নিচেই বাস করেন। সেক্ষেত্রে ১ লাখ ২৫ হাজার ডলারের যে মাপকাঠি, সেটির বিচারে বেশিরভাগ পরিবার পড়তে পারেন বলে মূল্যায়ন তার।
অবশ্য এখনই এটি বাস্তবায়িত হচ্ছে না। নিউইয়র্ক গভর্নর এই লক্ষ্যে আনুষ্ঠানিক ভাবে আন্দোলন শুরু করেছেন মাত্র। বছরে সরকারের তহবিল থেকে অতিরিক্ত ১৮৬ মিলিয়ন ডলার খরচ বাড়বে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে হলে। সেটি আসবে সরকারি তহবিল আর সক্ষমদের তরফে আদায় করা বাড়তি আয়কর থেকে। সে কারণে এই ২ বছরের মধ্যে প্রাথমকি আন্দোলন, দেশের উন্নয়নের জন্যেই ভবিষ্যৎ নাগরিকদের গড়ে তোলাকে মানুষে মানুষে সচেতনতা বৃদ্ধি করার প্রাথমিক কাজটি করা হবে। এরপর এই রাজ্য প্রস্তাব কংগ্রেসে উঠবে, আর চুড়ান্তভাবে সিনেটে সেটি পাস হতে হবে। সব মিলিয়ে বাস্তবায়নের সময়সীমা ধরা হয়েছে ২০১৯ সাল।
‘সবাইকে বোঝাতে হবে যে নিউইয়র্কের ছেলে মেয়েদের উচ্চশিক্ষার জন্য, বাসিন্দাদের মনোযোগ প্রয়োজন, চিন্তার ধারণা পরিবর্তন প্রয়োজন। আমরা ন্যূনতম মুজুরি ১৫ ডলারে উন্নীত করে ইতিহাস সৃষ্টির পথে এগিয়েছি।
সমকামীদের সামাজিক নিরাপত্তা আর বিবাহের বিধান প্রবর্তন করে যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছি তা ছড়িয়ে গিয়েছে প্রতিটি রাজ্য, আর বিশ্বের অন্যন্য প্রান্তে। আমি বিশ্বাস করি, এই বিনামূল্যে কলেজ শিক্ষার পদক্ষেপটি হবে যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক সমতা সৃষ্টির পথে আরেকটি মাইল ফলক’- দ্য এক্সেলস্কলার প্রোগামের ঘোষণা প্রদান কালে বলছিলেন নিউইয়র্ক গভর্নর এন্ড্রু কুমো।
এদিকে নিউইয়র্কের কুইন্সে আয়োজিত গভর্নর কুমোর এই দ্য এক্সেলর স্কলারশিপ ঘোষণায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্সিয়াল প্রার্থী বার্নি স্যান্ডার্স। তিনি উচ্ছ্বসিত এবং আবেগে আপ্লুত ছিলেন, তার নির্বাচনী জাগরণ সৃষ্টিতে তরুণদের সর্বাধিক পছন্দের এই দাবিটিকে আমলে নেওয়ার জন্য। খেটে খাওয়া আর শ্রমজীবী মানুষের সন্তানদের উচ্চশিক্ষার পথ সহজ করতে রাষ্ট্রীয় যে দায়িত্ব সেটির জন্য দীর্ঘদিন ধরে কথা বলছেন বার্নি স্যান্ডার্স। বার্নি স্যান্ডার্স তার বক্তৃতায় আশা প্রকাশ করেন, একবার নিউইয়র্ক যখন এই বিনামূল্যে উচ্চ শিক্ষার পথে হেটেছে, তখন আমেরিকার বাদ বাকী রাজ্যেগুলোতেও শ্রমজীবী মানুষের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষার পথ খুলে যাবে। এটা আমেরিকার রাজনীতি আর সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করার পথে বড় একটি অগ্রগতি বলেই উল্লেখ করেন বার্নি স্যান্ডার্স।