ঢাকার পথে পথে চন্দ্রবিলাস

 In শীর্ষ খবর

চাঁদের আলোর ভেতরে এক ধরনের মাদকতা আছে। বাংলা সাহিত্যে চাঁদ দেখা নিয়ে সবচেয়ে বেশি মাতামাতি পাওয়া যায় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ স্যারের লেখায়। তাঁর লেখায় চরম জোৎস্না বিলাস দেখেছি আমরা। সেসব লেখালেখির কারণে কিনা জানি না, ইদানীং দেখা যাচ্ছে চাঁদ দেখা অথবা পূর্ণিমায় জোৎস্না অবগাহন শহুরে মানুষের শখে পরিণত হচ্ছে। শুক্র-শনিবারে পূর্ণিমা থাকলে ঢাকা থেকে দলে দলে তরুণ-তরুণী অথবা নানা বয়সী চন্দ্রবিলাসী মানুষ ঢাকার বাইরে বেড়াতে যায়। কারণ ঢাকার নিয়ন থেকে সোডিয়াম বাতি, তারপর অনেকটা সময় পেরিয়ে এখন এলইডি বাতিতে পরিণত হয়ে ঢাকার আকাশে চাঁদের অস্তিত্বকে অলমোস্ট বিপন্ন করে ফেলেছে।

বেশ কিছুদিন ধরে খেয়াল করছি এলইডি লাইট আসার পর চাঁদ মামা এখন ঢাকার আকাশে ফ্যাকাশে চেহারা নিয়ে লজ্জায় মুখ ঢাকার পথ খুঁজতেছে। ঢাকার মানুষ দেখতে পাক আর না পাক, এখনও আকাশে আগের মতো চাঁদ ওঠে, পূর্ণিমা হয়, অন্ধকার প্রকৃতি চাঁদের রহস্যময় আলোয় ভেসে যায়। কিছু মানুষ চন্দ্রাহত হয়ে মুগ্ধ হয়ে চাঁদ দেখে। আবার চাঁদের আলো কমে আসে, এভাবেই হয়ত আমাবস্যা আর পূর্ণিমার আলো আঁধারের খেলা চলছে, চলবে অনন্তকাল।

ঢাকায় চাঁদের দেখা পাওয়া দুষ্কর। তারপরও কিছু কিছু যায়গায় চেষ্টা করলে চাঁদ মামার দেখা পাওয়া যায়। তার মধ্যে ধানমণ্ডি লেকের পারের বড় বড় গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে চাঁদ মামার ফ্যাকাসে মুখটি রাত বাড়ার সাথে সাথে যেন উজ্জ্বল হয়ে উঠতে থাকে। আজ পূর্ণিমার দিনে আমরা তিন বন্ধু চাঁদ দেখতে এবং লেকের পারে হাঁটাহাঁটি করে আড্ডা দেওয়ার জন্য ধানমণ্ডিতে হাজির হয়েছিলাম।

ধানমণ্ডি লেকের পার্কটি এখন এলইডি বাতির রোশনিতে আলোময়। চাঁদের নরম আলোর সাধ্যি নাই এই তীব্র আলোর সাথে পাল্লা দেয়। আমরা চাঁদ দেখার জন্য বেছে নিয়েছিলাম এলইডি লাইট থেকে দূরের গাছে ঢাকা অন্ধকার জায়গা। যেখান থেকে গাছের ফাঁকে চাদের নরম আলো যেন চুঁইয়ে পড়ছিল। আমার মোবাইল ফোনে এখন ডিএসএলআরের অপশন আছে। চাঁদের ছবি ধরে রাখার মতো অপশন এবং আমার কারিগরি জ্ঞানের ব্যবহারে চাঁদের আলো মাখা গাছপালার ছবিটিই বলা যায় আমাদের চন্দ্রবিলাসের উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

Recent Posts

Leave a Comment