অর্পিত সম্পত্তির মামলা নিষ্পত্তিতে ঘুষ ২২৭০ কোটি টাকা

 In প্রধান খবর

দেশে অর্পিত সম্পত্তির মামলা নিষ্পত্তিতে বিলম্বের জন্য আদালতের বাইরে স্থানীয় ভূমি অফিসগুলোই দায়ী। দুর্নীতিপরায়ন ও অদক্ষ ভূমি কর্মকর্তারা প্রয়োজনীয় নথিপত্র প্রেরণে এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সেবা প্রদানে ঘুষ দাবি করেন।

বর্তমান গবেষণা অনুযায়ী, অর্পিত সম্পত্তি আইনে ক্ষতিগ্রস্ত প্রত্যেক পরিবারকে গড়ে প্রায় দুই লাখ ২৭ হাজার টাকা ব্যয় করতে হয়েছে। এ ব্যয়ের অন্তত ৫০ শতাংশও যদি ঘুষের জন্য দেয়া হয় তাহলে এ পর্যন্ত দায়েরকৃত দুই লাখ মামলায় ঘুষের পরিমাণ দাঁড়ায় দুই হাজার ২৭০ কোটি টাকা, যা ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বার্ষিক উন্নয়ন বাজেটের এক দশমিক ৯৪ শতাংশ।

‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন এবং বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার ফলাফল’ শীর্ষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে এ গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরা হয়। এএলআরডির সহায়তায় প্রতিবেদন তৈরি করে হিউম্যান ডেভেলপমেন্ট রিসার্স সেন্টার।

অধ্যাপক আবুল বারাকাতের নেতৃত্বে গবেষণা দলে ছিলেন গাজী মোহাম্মদ সোহরাওয়ার্দী, সুভাস কুমার সেনগুপ্ত, মো. অলিউল ইসলাম, রাহিনুর বিনতে রফিক, আসামার ওসমান এবং এএসএম ওবায়দুর রহমান।

গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, আইনসঙ্গত মালিকদের কাছে অর্পিত সম্পত্তিগুলো ফিরিয়ে দেয়ার ব্যাপারে আইনি রূপরেখা ও অনুসরণীয় প্রক্রিয়া পরীক্ষা করা হয়েছে এবং এতে বেশকিছু অন্তরায় লক্ষ্য করা গেছে। এর মধ্যে দীর্ঘসূত্রতা, ঘুষ ও অন্যান্য হয়রানি উল্লেখযোগ্য।

আদালতে মামলা নিষ্পত্তি বিলম্বের জন্য বিপুলসংখ্যক মামলার তুলনায় আদালত বা বিচারক স্বল্পতা এবং মামলার প্রতি কম গুরুত্ব দেয়া বিশেষভাবে দায়ী। আগে অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন সম্পর্কে অধিকাংশ বিচারকের ধারণা বা জ্ঞান ছিল না। আইনটি অনুধাবনের প্রাথমিক দুর্বলতা, বিচারক স্বল্পতা এবং পৃথক বেঞ্চের অভাব মামলাগুলোর নিষ্পত্তি ব্যাহত করেছে। মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য প্রয়োজনীয় বিচারকের যেমন অভাব রয়েছে, তেমনই বিচারকের জন্য কোনো বিশেষ প্রণোদনার ব্যবস্থা নেই।

গবেষণায় আরও বলা হয়, সরকারি আইনজীবীরা বারবার শুনানির আবেদন দাখিলের মাধ্যমে অহেতুক সময় নেন ও আইনি প্রক্রিয়া বিলম্বিত করেন। ক্ষেত্রবিশেষে সুবিধা আদায়ের জন্য বাদীর পক্ষের আইনজীবী দীর্ঘ সময়ের জন্য মামলা ধরে রাখেন। মামলা দীর্ঘায়িত করার জন্য তারা অসৎ উপায় অবলম্বন করেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও মানবাধিকারকর্মী অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, গবেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আবুল বারাকাত, এএলআরডির নির্বাহী পরিচালক শামসুল হুদা, অধ্যাপক এমএম আকাশ, খুশী কবির, অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, তবারক হোসেন, সুব্রত চৌধুরী, অ্যাডভোকেট এসএম রেজাউল করিম প্রমুখ।

Recent Posts

Leave a Comment