মঙ্গলবার সারাদেশে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধ : বিএমএ

 In প্রধান খবর

রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (২৩ মে) সারাদেশে প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ)।

শনিবার সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির এক জরুরি সভায় এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এছাড়া রোববার (২১ মে) থেকে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি সব হাসপাতালে দায়িত্বরত চিকিৎসকরা কালোব্যাজ ধারণ করবেন। হাসপাতালের বাইরে বিকেলেও কালোব্যাজ ধারণ করে সেবা দেবেন চিকিৎসকরা। বিএমএ সব শাখার তত্ত্বাবধানে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত এক ঘণ্টা মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হবে।

সভায় বিএমএ’র কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ নেতারা সম্প্রতি রাজধানীর সেন্ট্রাল হাসপাতালে হামলা, মামলা ও ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানিয়ে আগামী সাত দিনের মধ্যে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেফতার করে দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

নেতারা গত ১৮ মে সেন্ট্রাল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আফিয়া জাহান চৈতি’র  অকাল মৃত্যুতে গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। সভায় বক্তারা বলেন, রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নামধারী কিছু সন্ত্রাসী ওইদিন হাসপাতালে ভাঙচুর ও সেখানে কর্তব্যরত সিনিয়র চিকিৎসকসহ অন্যান্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীকে মারধর করে মারাত্মকভাবে আহত করে। শুধু তাই নয়, আহত দুইজন চিকিৎসককে পুলিশ নিরাপদ হেফাজতের নামে থানায় নিয়ে মামলায় গ্রেফতার দেখায়। এছাড়া বাংলাদেশের জাতীয় ও সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মান একুশে পদকপ্রাপ্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন  অধ্যাপক ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহসহ অন্য চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

আজ শনিবার বিএমএ’র প্রচার ও জনসংযোগ সম্পাদক ডা. মো. মাহবুবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বিএমএ গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে ইদানীং যেকোনো হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে কিছু উচ্ছৃঙ্খল মানুষ হাসপাতালে ভাঙচুর ও চিকিৎসকদের উপর হামলায় লিপ্ত হচ্ছে। অপরদিকে কিছু গণমাধ্যম চিকিৎসকের অবহেলায় রোগীর মৃত্যু হয়েছে বলে প্রচার করে এক আত্মঘাতী খেলায় মেতে উঠেছেন।’

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে নেতারা বলেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। ভুল চিকিৎসায় যদি রোগীর মৃত্যু হয়ে থাকে তাহলে মৃত্যুর কারণ উদঘাটন না করে  তড়িঘড়ি করে পোস্টমর্টেমের মাধ্যমে মৃতদেহের দাফন করা হলো কেন? কিছু গণমাধ্যম যদি ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর কারণ উল্লেখ করে থাকে তাহলে সারাদেশে এত স্বাস্থ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকদের লেখাপড়া শেখানো হচ্ছে কেন?

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয় ‘আমরা বলতে চাই , যথেষ্ট হয়েছে আর নয়। আমরা প্রতিবাদী হব এবং আমরা দোষীদের বিচারে যেকোনো কর্মসূচি দিয়ে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব। সবাইকে স্মরণ করে দিতে চাই, আমরা চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া  শিখেছি মানুষের রোগ নিরাময় করার জন্য, কাউকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেয়ার জন্য নয়। সেন্ট্রাল হাসপাতালের ঘটনার জন্য যিনি মামলা করেছেন তাকেই প্রমাণ করতে হবে রোগীর মৃত্যু হয়েছে ‘অবহেলায়’। অন্যথায় হাসপাতাল ভাঙচুর ও চিকিৎসক লাঞ্ছনার সব দায়িত্ব তাকে বহন করার জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’

Recent Posts

Leave a Comment