বদির সাম্রাজ্যে পতনের সুর

 In প্রধান খবর
কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসন থেকে টানা দ্বিতীয় দফায় নির্বাচিত আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদির সাম্রাজ্যে পতনের সুর বেজে উঠেছে। ‘মাদক সম্রাট’ হিসেবে আলোচিত-সমালোচিত এ সংসদ সদস্যকে আগামী নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন দেয়া হবে না- এমন খবরে নোনাজলের তীর ঘেঁষা জনপদে স্বস্তির বাতাস বইছে। বদলে যেতে শুরু করেছে স্থানীয় রাজনীতির দৃশ্যপট। নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছে উখিয়া ও টেকনাফ জনপদের আশাহত মানুষ।

শুক্রবার কক্সবাজার জেলার টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ সড়ক দিয়ে ঘূর্ণিঝড় মোরায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় যাওয়ার সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুর রহমান বদিকে একহাত নেন। ওবায়দুল কাদের তাকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘দুই দুইবার এমপি হইলা। কিন্তু সামান্য ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক ঠিক করতে পারলা না। জনগণের এই ভোগান্তির জন্য তোমার শিক্ষা পাওয়া উচিত। আর যাই হোক তোমাকে আগামীবার আর নমিনেশন দেয়া হবে না।’

দলের সাধারণ সম্পাদকের এ ঘোষণা পরদিন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পরপরই আবদুর রহমান বদির নির্বাচনী এলাকা উখিয়া ও টেকনাফে বইতে শুরু করে স্বস্তির বাতাস। খবরটা শুনে বদিবিরোধী শিবির আনন্দে ফেটে পড়ে। অনেকেই মিষ্টি বিতরণ করে উল্লাস করেন।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বঙ্গমাতা মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী শনিবার যুগান্তরকে বলেন, “আবদুর রহমান বদি একজন চিহ্নিত ইয়াবা ও মাদক ব্যবসায়ী। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হওয়ার পর একদিকে যেমন তার বেপরোয়া উত্থান ঘটেছে, অন্যদিকে তার হাত ধরে দেশব্যাপী ইয়াবাসহ মাদক ব্যবসারও বিস্তার ঘটেছে। শুধু একজন বদির কারণে সারা দেশেই আজ আওয়ামী লীগের রাজনীতি প্রশ্নবিদ্ধ। সে এখন দলের জন্য ‘বিষফোঁড়া’। যত দ্রুত তাকে বাদ দেয়া হবে ততই দেশ ও দলের জন্য মঙ্গল।”

জানা গেছে, আবদুর রহমান বদি শুধু কক্সবাজারের টেকনাফ-উখিয়াই নয়, সারা দেশে এখন একটি আলোচিত নাম। সমালোচনার ঝড়ে তছনছ তার মানসম্মান। তবে এসবের ধার ধারেন না তিনি। এলাকাবাসীর বক্তব্য, তার বদ আমলের জন্যই তাকে সবাই বলে বদির বদ। আওয়ামী লীগের টিকিটে ২০০৮ সালে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েই নেমে পড়েন আখের গোছানোর কাজে। দল নয়, নিজের ভাগ্যের পরিবর্তনে টেকনাফ ও উখিয়াকে ঘিরে একটা আলাদা সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন আবদুর রহমান বদি।

স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, আবদুর রহমান বদির ‘সারা দেশে ব্যাপকভাবে পরিচিত’ হওয়ার কারণ তার নেতিবাচক ভাবমূর্তি। বদনামের কারণেই বারবার খবরের শিরোনাম হয়েছেন তিনি। তার বহু কর্মকাণ্ড দেশজুড়ে সমালোচিত হয়েছে। ক্ষমতার দাপটে একপর্যায়ে বদি হয়ে উঠেন অন্ধকার জগতের মুকুটহীন সম্রাট। নানা কারণে সমালোচিত হলেও বদির বিরুদ্ধে সবচেয়ে বড় অভিযোগ, তিনি ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। ইয়াবা সম্রাট হিসেবেও দেশের মানুষ চেনে সরকারদলীয় এই সংসদ সদস্যকে।

‘মামলা করে আমাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য আমি দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন) চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাই। আর সাংবাদিকদের প্রতি স্যালুট ও কৃতজ্ঞতা। তারা আমাকে সারা দেশে ব্যাপকভাবে পরিচিত করেছেন।’ দুদকের মামলায় আত্মসমর্পণ করে ১৯ দিন কারাভোগের পর জামিনে মুক্ত হয়ে ২০১৪ সালের ৪ নভেম্বর তাকে বরণ করে নেয়া অনুষ্ঠানে কথাগুলো বলেন বদি। কাকতালীয়ভাবে এর দু’বছর পর ২০১৬ সালের নভেম্বরেই দুদকের করা মামলায় কারাগারে যেতে হয় বিতর্কিত এ সংসদ সদস্যকে। তবে এবার আর আত্মসমর্পণ করে নয়। আদালতের রায়ে দণ্ডিত হয়ে তিন বছরের সাজা ভোগ করার জন্য।

সংশ্লিষ্টদের মতে, আদালতের রায়ে দণ্ডিত হওয়ার কারণে এমনিতেই আবদুর রহমান বদির সংসদ সদস্যপদ এখন সুতোর ওপর ঝুলছে। কেননা সংবিধানের ৬৬(২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দু’বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া বা সংসদ সদস্য থাকার যোগ্যতা হারাবেন। মামলাটি এখন উচ্চ আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। সেখানে চূড়ান্তভাবে দোষী সাব্যস্ত হলে সংসদ সদস্যপদ হারাতে হবে বদিকে।

জানা গেছে, বদির ইয়াবা সামাজ্য, মাদক চোরাচালান, মানব পাচার, টেন্ডারবাজি, দখলদারিসহ নানা ধরনের অপকর্মে অতিষ্ঠ হয়ে একপর্যায়ে দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শরণাপন্ন হয়েছিলেন কক্সবাজারের আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। ২০১০ সালের ১২ নভেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বদির নানা অপকর্মের ফিরিস্তি তুলে ধরেন তারা। এ সময় বদিকে সতর্ক করে দেন প্রধানমন্ত্রী। চলতি বছর জানুয়ারিতে কক্সবাজারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের উপস্থিতিতে মাদকবিরোধী অভিযান ও প্রচারণা অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে আবদুর রহমান বদি বলেছিলেন, ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গে তার সংশ্লিষ্টতা কেউ প্রমাণ করতে পারলে তিনি সংসদ সদস্যপদ থেকে পদত্যাগ করবেন। যদিও এ ঘোষণা মুখেই রয়ে গেছে।

গত ৬ মে কক্সবাজার সৈকতের কাছের স্টেডিয়ামে দলীয় জনসভায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘কক্সবাজারের একটা বদনাম আছে, এখান থেকে নাকি ইয়াবা পাচার হয়। ইয়াবা পাচার বন্ধ করুন। যারা ইয়াবা পাচারে জড়িত, তাদের চিহ্নিত করতে হবে। তারা যত শক্তিশালী হোক, ছাড় দেয়া হবে না। কারণ তারা দেশের জন্য অভিশাপ।’ শেখ হাসিনা যখন এ বক্তব্য দেন তখন সমাবেশ মঞ্চে ছিলেন বদি। এ সময় তাকে অনেকটাই বিমর্ষ দেখা যায়। শুক্রবার ওবায়দুল কাদেরের বদিকে মনোনয়ন না দেয়ার হুশিয়ারি সেই ধারাবাহিকতারই অংশ বলে মনে করছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

জানা গেছে, শুধু ইয়াবা ব্যবসারই একক নিয়ন্ত্রক নন বদি, মাদকের আন্তর্জাতিক মাফিয়াদের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকার অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি চোরাচালান, চাঁদাবাজি, মানব পাচার, সন্ত্রাস, দখলদারি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, মানুষকে মারধর করা- সবকিছুর সঙ্গেই জড়িয়ে আছেন বদি। রোহিঙ্গা জঙ্গিগোষ্ঠী আরএসওসহ (রোহিঙ্গা সলিডারিটি অর্গানাইজেশন) জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দেয়ার মতো গুরুতর অভিযোগও রয়েছে সরকারদলীয় এ এমপির বিরুদ্ধে। ভোটার তালিকায় আইন-বহির্ভূতভাবে রোহিঙ্গাদের নাম তোলা এবং তাদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার ক্ষেত্রেও তিনি ভূমিকা রেখেছেন- এমন অভিযোগও রয়েছে। ক্ষমতার কাছাকাছি থেকে নিজেদের অপকর্ম হাসিল করতে বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আশ্রয়-প্রশ্রয়ও নিয়েছেন বদি ও তার পরিবারের সদস্যরা। সময়ের পরিক্রমায় রাজনীতির বিভিন্ন গলিতে পা রেখে আড়ালে-আবডালে মাদক ও অপরাধের অন্ধকার জগতে নিজেদের শিকড় গেড়েছেন তারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ১৯৯১ সালে বিএনপির শাসনামলে টেকনাফ সীমান্ত দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে চোরাচালানের বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়েন বদি। আর আওয়ামী লীগসহ শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোর বয়কট করা ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির ষষ্ঠ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বদি বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপক চেষ্টা চালান। মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে হেরে যান। ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের সপ্তম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি থেকে প্রথমে মনোনয়ন পেলেও পরে তা ফিরিয়ে নেয়া হয়। এরপর টেকনাফ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আবদুর রহমান বদি। ক্ষমতার পালাবদলের খেলায় একসময় বদি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে এমপি হওয়ার পর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। টেকনাফে শুরু হয় বদির একচ্ছত্র আধিপত্য। টেকনাফ স্থলবন্দর, হাটবাজার, ঠিকাদারি, পরিবহন, পর্যটকবাহী জাহাজ, টার্মিনাল, জেটি, সীমান্ত চোরাচালান, ব্যবসা-বাণিজ্য সবকিছুর ওপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।

স্থানীয়রা জানান, একজন সংসদ সদস্য হয়েও মানুষকে নিজ হাতে মারধর করতে দ্বিধা করেননি বদি। তার এ আচরণ থেকে নিজ দলের কেন্দ্রীয় নেতারাও রেহাই পাননি। সংশ্লিষ্টদের দাবি, টেকনাফের ইয়াবা সাম্রাজ্যের পুরোটাই বদি ও তার পরিবারের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। বলা হয়ে থাকে, বদির কারণে বঙ্গোপসাগর দিয়ে মিয়ানমার থেকে আসা ইয়াবার চালানে ভাসছে গোটা টেকনাফ। এটি পরিচিতি পেয়েছে মাদকের স্বর্গরাজ্য হিসেবে। বদির প্রত্যক্ষ মদদের কারণেই টেকনাফের রাজনীতি থেকে অর্থনীতি সবই ইয়াবাসহ মাদকের সুতোয় বাঁধা। টেকনাফে ইয়াবা সাম্রাজ্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বদির ভাই, স্ত্রী, বেয়াই, মামা, ভাগিনাসহ নিকটাত্মীয় ও সহযোগীদের নাম। এমনকি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা ইয়াবা গডফাদারদের নামের তালিকায়ও বদির আপন তিন ভাইয়ের নাম শীর্ষে রয়েছে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে এ প্রসঙ্গে সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী শনিবার  বলেন, “আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও দলের বাইরে গিয়ে বদি উখিয়া ও টেকনাফে কায়েম করেছেন ‘বদি লীগ’। দলীয় নেতাকর্মীদের চেয়ে নিজ অনুগতদের মাধ্যমে পরিচালনা করেন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড। এ ক্ষেত্রে অনুগতদের রাজনৈতিক পরিচয়ও তার কাছে গৌণ। এমনকি বিএনপি-জামায়াতের অনেক নেতাকর্মী তার আশ্রয়-প্রশ্রয়ে হয়ে উঠেছে নব্য আওয়ামী লীগার। যাদের দাপটে পোড় খাওয়া অনেক আওয়ামী লীগকর্মী সংগঠন থেকে দূরে সরে গেছে। প্রতিবাদ করে কেউ কেউ এলাকা থেকেও বিতাড়িত হয়েছে।” তিনি বলেন, ‘আগামীতে তাকে দল মনোনয়ন দেবে না- এমন খবর আমরা পেয়েছি। এতে দলই উপকৃত হবে বেশি।’

জানা গেছে, সর্বশেষ অনুষ্ঠিত ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনেও এর প্রমাণ মিলেছে। উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলায় বদির পছন্দের বেশিরভাগ প্রার্থীই আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়ন পেতে ব্যর্থ হন। পরবর্তী সময়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে তারা নির্বাচনে অংশ নিয়ে বদির সহায়তায় বিজয়ী হন। শুধু নিজ সংগঠনের বিদ্রোহী প্রার্থী নন, উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নে বিএনপির গফুর উদ্দিন চৌধুরী ও টেকনাফের হোয়াইক্ষ্যং ইউনিয়নে জামায়াতের প্রার্থী নুর আহমদ আনোয়ারীও এমপি বদির সহায়তায় ইউপি চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল বাশার  বলেন, ‘বদির কারণেই বিগত ইউপি নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীরা পরাজিত হন। যার প্রমাণ হ্নীলা ইউপি নির্বাচনের এক সপ্তাহ পর সেখানে অনুষ্ঠিত এক সংবর্ধনা সভায় এমপি বদি নিজেই বলেছেন, আমি যাদের চেয়েছি, তারাই নির্বাচিত হয়েছেন।’ তিনি বলেন, বদির সাম্রাজ্যে পতনের সুর বেজে উঠেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বদি এলাকায় বিএনপি-জামায়াত নেতাদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকেন। যার যথেষ্ট প্রমাণও রয়েছে। তিনি গত উপজেলা নির্বাচনে টেকনাফে তার ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত পৌর বিএনপির সভাপতি জাফর আলমকে প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচিত করেন। ওই নির্বাচনে পরাজিত হন সাবেক এমপি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী। একইভাবে পরাজিত হন উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ইউনুছ বাঙ্গালীও। এ পদে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আছে- এমন একজনের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বদি তাকেও পাস করিয়ে আনেন।

এ প্রসঙ্গে অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘আসলে বদি বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে আসার কারণে তিনি সব সময় দুর্বলতায় ভোগেন। তিনি শঙ্কায় থাকেন, যে কোনো সময় আওয়ামী লীগ থেকে ছিটকে পড়তে পারেন। এ জন্যই বদি উখিয়া ও টেকনাফে সরকার এবং নিজ দলের বাইরে আলাদা বলয় তৈরি করেছেন।’

জানা গেছে, মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কারণে জীবনে প্রথম এমপি হওয়ার পর পাঁচ বছরে তার আয় বেড়েছে ৩৫১ গুণ। আর নিট সম্পদ বেড়েছে ১৯ গুণের বেশি। অভিযোগ রয়েছে, হলফনামায় বদি কেবল আয়কর বিবরণীতে প্রদর্শিত অর্থ ও সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি গত পাঁচ বছরে আয় করেছেন ৩৬ কোটি ৯৬ লাখ ৯৯ হাজার ৪০ টাকা। টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে আমদানি-রফতানি বাণিজ্য ও টেকনাফে জ্বালানি তেলের ব্যবসা করে এ টাকা অর্জন করেছেন বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। হলফনামা অনুসারে এমপি বদির বার্ষিক আয় ৭ কোটি ৩৯ লাখ ৩৯ হাজার ৮০৮ টাকা। আর বার্ষিক ব্যয় দুই কোটি ৮১ লাখ ২৯ হাজার ৯২৮ টাকা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে বিনা ভোটে দ্বিতীয় দফায় এমপি হয়ে বদির সম্পদ আরও ফুলেফেঁপে ওঠে।

Recent Posts

Leave a Comment