মাতাল হয়ে বান্ধবীর সঙ্গে ফুর্তি করতে গিয়ে দুর্ঘটনা

 In শীর্ষ খবর
মাতাল অবস্থায় প্রাইভেট কারের মধ্যে বান্ধবীকে নিয়ে ফুর্তি করতে গিয়েই কারওয়ান বাজারে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। এতে এক নিরাপত্তা প্রহরী ঘটনাস্থলে নিহত ও তিনজন আহত হন। আহতদের মধ্যে এক কলেজছাত্রের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সোমবার রাতে দুর্ঘটনার পর ধরা পড়ে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নাজমুল হাসান। তার বান্ধবী ও এক বন্ধু পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মাতাল নাজমুল হাসানকে ঘটনাস্থল থেকে গাড়িসহ আটক করে তেজগাঁও থানায় নিয়ে যায়।

পুলিশ জানায়, গাড়িচালক নাজমুল হাসানের ড্রাইভিং লাইসেন্স ছিল না। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর অপরাধে পুলিশ বাদী হয়ে তেজগাঁও থানায় মামলা করেছে। দুর্ঘটনার ৫ দিনেও কোনো ক্ষতিপূরণ পায়নি নিহত ও আহতের পরিবার।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ির মালিক নাজমুল হাসানের বাবা বাদশা মিয়া। নাজমুল হাসান রাজধানীর ইউল্যাব ইউনিভার্সিটির বিবিএ’র ছাত্র। তাদের বাসা রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড এলাকায়। বাসা নং ১৩। তার বাবা ইতালিতে থাকেন।

প্রত্যক্ষদর্শী, নিরাপত্তা প্রহরী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রাত ৩টার দিকে হঠাৎ দ্রুত গতিসম্পন্ন একটি প্রাইভেট কার কারওয়ান বাজার হোটেল সুপার স্টারের সামনে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফুটপাতের ওপর উঠে যায়। সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ফোর্স সিকিউরিটি এজেন্সির নিরাপত্তা প্রহরী ইসমাইল হোসেন গাড়িচাপায় নিহত হন।

আহত হন আরও তিনজন। তাদের মধ্যে কলেজছাত্র ফাহিমুর রহমান বাবুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। বাকি দু’জনের মধ্যে একজনের পা ভেঙে গেছে বলে জানিয়েছে তাদের পরিবার।

দুর্ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ফোর্স সিকিউরিটি এজেন্সির আরেক নিরাপত্তা প্রহরী মোতালেব হোসেন যুগান্তরকে বলেন, রাত ৩টার দিকে হঠাৎ দ্রুতগতির একটি গাড়ি এসে চারজনকে চাপা দেয়।

এ সময় আমি ছুটে গেলে তারা পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু গাড়ি ঘোরানোর সময় ফুটপাতের দোকানে ধাক্কা খেয়ে আছড়ে পড়ে। তখন এক মেয়ে এবং এক ছেলে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

তবে গাড়ির চালকের সিটে বসা একজনকে ধরে ফেলি। এ সময় আমরা তাকে আবোল-তাবোল করতে দেখি। ফোর্স সিকিউরিটি এজেন্সির মালিক সুজন সাহা যুগান্তরকে বলেন, তখন নাজমুল হাসানকে মাদকাসক্ত মনে হয়েছে। নেশাগ্রস্ত অবস্থায় গাড়ি চালানোর কারণে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে প্রকৃত তথ্য বেরিয়ে আসবে। নিহত নিরাপত্তা

প্রহরী ইসমাইল হোসেনের ছেলে এরশাদুল হক  বলেন, তারা দুই লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে চায়। কিন্তু আমরা তাতে সম্মত হইনি। ফাহিমের বাবা রফিকুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, একমাত্র ছেলের দুর্ঘটনার খবর শোনার পর তার মা পাগলপ্রায়। এখন পর্যন্ত ছেলের জ্ঞান ফেরেনি। এ পর্যন্ত আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কীভাবে কী করব ভেবে পাচ্ছি না।’ এমন পরিস্থিতিতে নাজমুলের পরিবারের কাছে ছেলের চিকিৎসার খরচ দাবি করেছেন তিনি।

আত্মীয় জুয়েল হোসেন  বলেন, ফাহিম গুরুতর আহত হয়েছেন। সে বাঁচবে কিনা ডাক্তাররা নিশ্চিত করে কিছুই বলতে পারছেন না।’তেজগাঁও থানা পুলিশের উপপরিদর্শক মোহাম্মদ কবির হোসেন যুগান্তরকে বলেন, ওইদিনের ঘটনা শোনামাত্রই আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখান থেকে গাড়িসহ নাজমুল নামে এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে। পরে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে মানুষ মারার অপরাধে মামলা করা হয়েছে।

Recent Posts

Leave a Comment