মিন্টুর জামিন বাতিলের দাবি সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রীর

 In লিড নিউজ
দৈনিক সমকালের শাহজাদপুর প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুলকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামি হাবিবুল হক মিন্টু জামিন পাওয়ায় মামলার বাদী ও নিহতের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন দুই সন্তানসহ শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন।

মঙ্গলবার বিকালে বগুড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন থেকে ন্যায় বিচারের স্বার্থে তিনি মিন্টুর জামিন বাতিল, মেয়র হালিমুল হক মিরুকে হাসপাতাল থেকে জেলে প্রেরণ ও মামলাটি দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছেন।

লিখিত বক্তব্যে নুরুন্নাহার খাতুন দাবি করেন, তার মৃত স্বামী শিমুল সৎ ও সাহসী সাংবাদিক ছিলেন। তাদের নিজের জায়গা-জমি নেই। শিমুল সাহসিকতার সঙ্গে অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর লিখেছেন। তাই শাহজাদপুর পৌর মেয়র মিরু তাকে (শিমুল) শত্রু  মনে করতেন।

রোববার মিন্টুর জামিন পাওয়ার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, মিন্টু জেলগেটে তার সমর্থকদের বলেছেন, ‘চিন্তা করিস না। জামিনে ছাড়া পেয়েছি। ভয় নেই সবাই জামিন পাবে।’

মিন্টুর জামিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, জামিন পাওয়া আইনগত অধিকার। তারপরও জেল থেকে ছাড়াই পেয়ে যিনি এমন কথা বলতে পারেন তার জামিন কীভাবে বহাল থাকে?

মিন্টুকে রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত প্রভাবশালী উল্লেখ করে নুরুন্নাহার খাতুন বলেন, ‘তার জামিন পাওয়ার ঘটনা আমাকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। কারণ মিরু পরিবার সিরাজগঞ্জ থেকে পাবনা হয়ে বগুড়া পর্যন্ত নানাভাবে সংযুক্ত। যেহেতু আমি চাকরির কারণে আমার দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বগুড়া শহরে অবস্থান করছি, সে কারণে মিন্টু জামিনে ছাড়া পাওয়ার পর থেকে আমি নিজে তো বটেই তার চেয়েও বেশি আমার বাচ্চাদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত এবং রীতিমত অসহায় বোধ করছি।’

তিনি স্বামী হত্যার ন্যায় বিচার চেয়ে বলেন, চার্জশিট হবার এক মাসের অধিক সময় পরেও সেটি আদালতে গৃহীত হয়নি। চার্জশিট গৃহীত হলেই মিরু আর মেয়র থাকতে পারবেন না। কিন্তু অসুস্থতার অজুহাতে মিরুকে ঢাকার হাসপাতালে রাখা হয়েছে। আর সেখানে বসে তিনি কলকাঠি নাড়াচ্ছেন।

তিনি শিমুল হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার হবার জন্য সিরাজগঞ্জ ও বগুড়াসহ সারাদেশের সাংবাদিকদের প্রশংসা করেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ ফেব্রুয়ারি অপহৃত ছাত্রলীগ নেতা বিজয় মাহমুদকে উদ্ধার করার ঘটনায় শাহজাদপুর পৌর শহরের মনিরামপুরে মেয়র মিরু ও তার ভাইদের সাথে স্থানীয় সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। সেখানে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিক শিমুল গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন বগুড়া থেকে ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় তিনি মেয়র মিরু ও তার ভাই মিন্টুসহ অজ্ঞাত-অজ্ঞাত ৪০/৪২ জনের নামে শাহজাদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

অপরদিকে ছাত্রলীগ নেতা বিজয়ের চাচা এরশাদ আলী মেয়রের ভাই মিন্টু ও পিন্টুসহ ২০/২৫ জনের নামে আরেকটি মামলা করেন। শিমুল হত্যাকাণ্ডের ৩৫ দিন পর মিন্টুর অবৈধ পাইপগান উদ্ধার হলে পুলিশ তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে তৃতীয় মামলা করে। রোববার হাইকোর্টের মাধ্যমে জামিনে মুক্তি পান মিন্টু।

Recent Posts

Leave a Comment