সেবার নামে অর্থবাণিজ্য

 In শীর্ষ খবর
বিভিন্ন সেবার (সার্ভিস) নামে পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ থেকে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল চার্জ আদায় করা হলেও যাত্রীদের বাথরুম ছাড়া কোনো সুযোগ-সুবিধা নেই প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে। তারপরও প্রতিটি পাসপোর্ট যাত্রীকে গুনতে হচ্ছে বিভিন্ন সেবার নামে ৩৮ টাকা ৭৬ পয়সা করে সার্ভিস চার্জ। একদিকে ৫০০ টাকা ভ্রমণকর, অন্যদিকে প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল চার্জ আদায়- এতে করে অনেক পাসপোর্ট যাত্রী বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন।

জানা যায়, বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে গমনাগমনকারী পাসপোর্ট যাত্রীদের জন্য বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল উন্মুক্ত করেছে। ২ জুন বিকালে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের অপারেশনাল কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। এ সমাবেশে কেউই পাসপোর্ট যাত্রীদের টার্মিনাল চার্জের বিষয়টি উল্লেখ করেননি। ২০১১ সালের ১৫ জানুয়ারি বেনাপোল আন্তর্জাতিক প্যাসেঞ্জার টার্মিনালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ২০১৩ সালের ২৩ আগস্ট ভবন উদ্বোধন ও ২০১৭ সালের ২ জানুয়ারি এ ভবনটি পাসপোর্ট যাত্রীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়।

পূর্ব ঘোষণা বা প্রচার-প্রচারণা ছাড়াই ৩ জুন সকাল থেকে এ টার্মিনাল অভ্যন্তরের ৬টি কাউন্টারের মধ্যে ৩টি চালু করা হয়েছে। যাত্রীদের কাছ থেকে পাসপোর্টপ্রতি টার্মিনাল চার্জ বাবদ ৩৮ টাকা ৭৬ পয়সা আদায় করা হচ্ছে। এতে করে অনেক যাত্রী বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। কেউ কেউ বলছেন, ৫০০ টাকা ভ্রমণ কর পরিশোধ করার পর এটি আবার কেন চালু করা হল? প্যাসেঞ্জার টার্মিনালে পাসপোর্ট যাত্রীদের চার্জ আদায়ের আগে বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন ওসি এবং কাস্টম কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবহিত করেনি বন্দর কর্তৃপক্ষ। টার্মিনালে যাত্রীদের বাথরুমের ব্যবস্থা ছাড়া অন্য কোনো সূযোগ-সুবিধা নেই। টার্মিনাল চার্জের ক্ষেত্রে এন্ট্রি ফি ৯ টাকা ৯১ পয়সা, ওয়েটিং চার্জ ৯ টাকা ৯১ পয়সা, সার্ভিস চার্জ ৩ টাকা ৯৭ পয়সা, টার্মিনাল চার্জ ৯ টাকা ৯১ পয়সা, ১৫ ভাগ ভ্যাট ৫ টাকা ৬ পয়সাসহ মোট ৩৮ টাকা ৭৬ পয়সা পরিশোধ করলেও নেই কোনো বসার জায়গা, বিশুদ্ধ খাবার পানি, হুইলচেয়ার বা শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত রুমের ব্যবস্থা। অথচ এসব সেবার নামে অর্থ আদায় করা হচ্ছে। টার্মিনাল চার্জ চালু হওয়া প্রসঙ্গে বন্দরের কম্পিউটার অপারেটর কামরুল হাসান বলেন, বাংলাদেশ স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক (ট্রাফিক) শামীম সোহানা কর্তৃক স্বাক্ষরিত ২০১৬ সালের ১১ ডিসেম্বর ৩৩৮নং স্মারকে প্রেরিত পত্রে বলা হয়েছে, বেনাপোল স্থলবন্দরের জন্য ২০১৭ সালের ট্যারিফ কার্যকরণ বাস্তবায়ন প্রসঙ্গে এ পত্র জারি হয়েছে। সে মোতাবেক ২০১৭ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এ চার্জ আদায়ের নির্দেশ ছিল। কিন্তু অপারেশনাল কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়নি বিধায় এটি ৬ মাস বন্ধ ছিল। ৩ জুন থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে তা চালু করা হয়েছে।

এদিকে ৩৮ টাকা ৭৬ পয়সার রসিদ প্রদান করলেও যাত্রীদের কাছ থেকে নেয়া হচ্ছে ৪০ টাকা হারে। এ খাতে পাসপোর্ট যাত্রীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত আদায়ের টাকা নিজেদের পকেটে যাচ্ছে। অবশিষ্ট টাকা কোন খাতে জমা হবে, তা জানাতে পারেনি বন্দর কর্তৃপক্ষের আদায়কারীরা।

বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) আমিনুল ইসলাম জানান, এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। এ ব্যাপারে আমাদের কিছ্ ুকরণীয় নেই।

Recent Posts

Leave a Comment