ইজারা হয়নি বাকিলা বাজার; রাজস্ব বঞ্চিত সরকার!

 In চাঁদপুর, প্রধান খবর, লিড নিউজ, হাজীগঞ্জ উপজেলা

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার বাকিলা বাজার চলতি বছরে ইজারা না হওয়ায় অন্তত ৩০লাখ টাকা রাজস্ব বঞ্চিত হবে সরকার। গত বছর ইজারার মাধ্যমে সরকার রাজস্ব পেয়েছিলো প্রায় ৩৭ লাখ টাকা। এবছর বাজার ইজারা না হওয়ায় নিয়মানুযায়ী স্থানীয় তহশিদার প্রতি হাটের দিন খাজনা তুলেন। গত চার মাসে মাত্র সাড়ে ৩নলাখ টাকা আদায় দেখিয়েছেন। অথচ গতবছর এ চার মাসে ইজারাদার প্রতিষ্ঠান খাজনা আদায় করেছেন প্রায় ৯লাখ টাকা। স্থানীয়রা বলছে, টাকা আদায় হলেও তাহশিলদার ও স্থানীয় কয়েকজন প্রভাশালী খাজনার টাকা আত্মসাৎ করছেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৪২২-২৩ বঙ্গাব্দ অর্থবছরে স্থানীয় অমল ধর ৩৭লাখ টাকায় বাজার ইজারা নেন। ১৪২৩-২৪ বঙ্গাব্দ অর্থবছরে কোনো ইজারাদার না থাকায় তিনবার বিজ্ঞপ্তি দেয়া সত্ত্বেও বাজার ইজারা হয়নি। কেউ যেন টেন্ডার না ফেলে এর পেছনে শূক্ষ্ম চাল ছিলো স্থানীয় চেয়ারম্যানের। তিনি এলাকায় ৪০লাখ টাকায় ইজারা নিতে অনেকই রাজি আছেন বলে আওয়াজ তুলেন। সর্বশেষ ৪০লাখ টাকার কথা শুনে কেউ টেন্ডারে অংশ নেয়নি। যেকারণে নিয়মানুযায়ী ২নং বাকিলা ইউনিয়নের তহশীলদার মহাদেব চন্দ্র শীল বাজারের খাজনা তুলছেন।
বাকিলা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারের খাজনা তুলছেন স্থানীয় সন্ত্রাসী প্রকৃতির লোক খালেক, মুন্না ও মালেকসহ ৭-৮জনের একটি দল। অথচ স্ব-শরীরে টাকা আদায় করার কথা তহশীলদার মহাদেব চন্দ্র শীলকে। তিনি তা না করে স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালীকে দিয়ে টাকা তুলছেন। তারা আদায়কৃত টাকার অধিকাংশটাই নিজ পকেটে গুজে নিচ্ছেন। কিছু পার্সেন্টিজ পাচ্ছেন স্থানীয় তহশীলদার ও স্থানীয় চেয়ারম্যান এমনটাই জানা যায় স্থানীয়দের মুখে।
নাম প্রকাশে স্থানীয় কয়েকজন জানান, বাজার টাকা লুটেপুটে খাওয়ার জন্যে স্থানীয় চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটওয়ারী বাজার ইজারা হতে অসহযোগীতা করেছেন। এবং অনেকেই আগ্রহী থাকলেও তিনি তাদের বারণ করেছেন। এক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগীতা করেছেন তহশীলদার।
এব্যাপারে স্থানীয় তহশীলদার মহাদেব চন্দ্র শীল জানান, আগের ইজারদার মানুষের সাথে রাফ ব্যবহার করেছে। এজন্যে এ বাজারে এখন মানুষ আসা কমে গেছে। স্থানীয়দের দিয়ে টাকা তোলার ব্যাপারে তিনি বলেন, সাধারণত যে এলাকায় বাজার থাকে টাকা আদায় করতে সে এলাকার বা স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহায়তা লাগে। এক্ষেত্রে বাকিলা ইউনিয়নের চেয়াম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটওয়ারী কয়েকজন লোক দিয়ে সরকারের রাজস্ব আদায়ে সহযোগীতা করছেন।
এ ব্যাপারে ২নম্বর বাকিলা ইউনয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান ইউসুফ পাটওয়ারী জানান, যারা খাজনা তুলছে তারা আমার লোক নয়। মূলত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে আমার কাছ তহশিলদারকে সহযোগীতা করার জন্যে নাম চেয়েছিলো। আমি নাম দিয়েছি অনেকগুলো সেখানে থেকে দুই তিনজনকে তারা নিয়েছেন। এখানে আমার কোনো হস্তক্ষেপ নেই। ইজারার সময় কানকথা বাজারে প্রচারের ব্যাপারে তিনি জানান, এসব ফালুত কথা!
হাজীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাহাবুবুল আলম মজুমদার জানান, তহশীলদারকে সহযোগীতার জন্যে অতিরিক্ত লোক দেয়ার চেষ্টা চলছে। তিনি বাজার বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব কৌশলে এড়িয়ে যান। তিনি এও জানান, বাজারে অর্জিত আয়ের প্রায় ৪১ভাগ অর্থ খরচ হয় বাজার উন্নয়ন কাজে। এবছর বাজারের উন্নয়ন কম হবে কারণ রাজস্ব আদায় কম হয়েছে। টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন এমনটি হওয়ার কথা নয়। আমি খোঁজ নিয়ে প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেব।

Recent Posts

Leave a Comment