তৃতীয় শক্তি উত্থান ইঙ্গিতে চাঙ্গা রাজনীতি!
স্টাফ রিপোর্টার:
আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোটের বাইরে একাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে ছোট রাজনৈতিক দলগুলো নতুন জোট করার চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক মতপার্থক্য থাকলেও ছোট দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টাকে স্বাগত জানাতে চায় দেশে প্রধান রাজনৈতিক শক্তি আওয়ামী লীগ ও বিএনপি। প্রধান এ দু’দলের একাধিক নেতাদের বক্তব্যে এমন আভাস পাওয়া যাচ্ছে।
নতুন জোটে গঠনে তৎপর রয়েছে বিকল্প ধারা, জাসদ (রব), নাগরিক ঐক্যসহ বেশ কয়েকটি ছোট ছোট সমমনা রাজনৈতিক দল।
ইতোমধ্যে ছোট দলগুলোকে সমন্বয় করার জন্য নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাকে প্রধান করে একটি লিয়াজোঁ কমিটি গঠন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তারা আবার বৈঠেকে বসবেন বলে জানা গেছে।
রাজনীতিতে নতুন জোটের প্রক্রিয়া বেশ আলোচিত। বিশেষ করে সম্প্রতি রবের বাসায় বৈঠকে পুলিশ বাধা দেওয়ার ঘটনাটি রাজনীতিতে বেশ আলোচিত হচ্ছে।
নতুন জোট গঠন প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন পরির্বতন ডটকমকে বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে জোটের রাজনৈতিক যে সংস্কৃতি গড়ে উঠছে এটা শুধু আমাদের দেশেই নয়; ভারত, ব্রিটেনসহ প্রায় সব দেশেই আছে। ’
তিনি বলেন, ‘জোট যদি মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে হয় তাহলে এ ধরনের জোটকে আমরা স্বাগত জানাই। ইতিবাচক ভঙ্গিতে দেখি।’
আওয়ামী লীগ-বিএনপি জোটের বাইরে নতুন কোনো জোট কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে এমন প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর এমাজ উদ্দিন আহমেদ পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘শক্ত মানুষিকতানিয়ে যদি অগ্রসর হয়, হয়তো এক সময় দেখা যাবে নতুন জোটগুলো একটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে। আদর্শিক ভিত্তিটা যদি শক্ত থাকে তাহলে শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে অসম্ভব কিছু নয়।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘শুনেছি একটা নতুন জোট গঠন প্রক্রিয়া চলছে। এটা ভালো দিক। আমরা এটাকে স্বাগত জা্নাই। আশা করি, তারা বড় জোট হবে, যার মাধ্যমে বাংলাদেশে যে সংকট চলছে; তার নিরসনে ভূমিকার রাখবে; গণ মানুষের কথা বলবে।’
নতুন জোটে গঠনে ইতোমধ্যে দুই দফা বৈঠক করেছেন বিকল্প ধারাসহ কয়েকটি সমমনা ছোট দল।
সর্বশেষ গত ২ আগস্ট বিকল্প ধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বাসায় এইচ এম এরশাদের ভাই জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান জি এম কাদের, জেএসডির সভাপতি আ স ম আবদুর রব, নাগরিক ঐক্যের আহবায়ক মাহমুদুর রহমান মান্নাসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
এর আগে গত ১৩ জুলাই রাতে রবের উত্তরার বাসায় বি চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী, মান্না, সুব্রত চৌধুরীরা এক বৈঠকে মিলিত হন।
সংসদে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিরও রয়েছে ৫৮টি দল। সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক জোট। যদিও জোটের বেশিরভাগ দলই নামসর্বস্ব।
এরশাদের জোট নিয়ে তেমন আলোচনা না হলেও বি. চৌধুরী, রব, মান্নাদের বৈঠক নিয়ে ‘ইতিবাচক’ বক্তব্যই দিয়েছেন আওয়ামী লীগ-বিএনপি নেতারা।
গত ৩ আগস্ট বি চৌধুরীর বাসায় আ স ম আব্দুর রবদের বৈঠককে গণতন্ত্রের সৌন্দর্য বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
ওই দিন ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, এখন শত ফুল ফুটবে। এটা তো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। তারা তো ওখানে বসে কোনো ষড়যন্ত্র করছেন না। রাজনীতিতে মেরুকরণ হচ্ছে। এটাই তো গণতন্ত্রের সৌন্দর্য।
একই দিনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, অনৈতিক এবং অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে কেউ উদ্যোগ গ্রহণ করলে বিএনপি তাতে সমর্থন জানাবে।
নতুন জোট গঠন প্রক্রিয়া সম্পর্কে জানতে চাইলে বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ) সভাপতি আসম আবদুর রব পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘অনেক দূর এগিয়ে গেছে। আমরা ইতোমধ্যে একটি লিয়োজো কমিটি গঠন করেছি। যে কোনো দিন আমরা বৈঠকে বসব।’
উল্লেখ্য, বি. চৌধুরী, কাদের সিদ্দিকী ও আ. রব ২০১৪ সালে ৫ জানুয়ারি নির্বাচনের আগেও জোট গঠন করেছিলেন।