সদর দপ্তরের অনুমতি ব্যতিত ৫৭ ধারায় মামলায় নয়

 In আইন আদালত, প্রধান খবর, লিড নিউজ

নিউজ ডেস্ক:

তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা দায়েরের আগে পুলিশ সদর দফতরের আইন শাখা থেকে পরামর্শ নিতে হবে বলে নির্দেশনা দিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক। বুধবার পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের এক বৈঠকে এ নির্দেশনা দেন তিনি। বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, এতে উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা সারা দেশে ৫৭ ধারায় দায়ের করা মামলাগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। সবশেষ সোমবার রাতে খুলনায় ছাগলের মৃত্যুর ঘটনায় প্রকাশিত সংবাদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শেয়ার করায় আবদুল লতিফ নামে এক সাংবাদিককে ৫৭ ধারার মামলায় গ্রেফতার করা বিষয়টিও আলোচনা হয় সেখানে।

আলোচনার একপর্যায়ে আইজিপি নির্দেশনা দেন যে আইসিটি অ্যাক্টের ৫৭ ধারায় মামলা করতে হলে পুলিশ সদর দফতরের আইন বিভাগ থেকে পরামর্শ নিতে হবে। সারা দেশে এই নির্দেশনা পৌঁছে দেয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

এদিকে বৈঠকে আইজিপির এমন নির্দেশনার পরপরই এ সংক্রান্ত একটি আদেশ জারি করেছে পুলিশ সদর দফতর। এতে আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে এবং নিরীহ ব্যক্তি যেন হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিতে মামলার পূর্বে কিছু নির্দেশনার কথা জানানো হয়।

নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে, ‘তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (সংশোধন) আইন, ২০১৩ এর ৫৭ ধারায় সংঘটিত অপরাধ সংক্রান্তে মামলার রুজুর ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।’

‘অভিযোগ সম্পর্কে কোনরূপ সন্দেহের উদ্রেক হলে তাৎক্ষণিকভাবে সংশ্লিষ্ট থানায় জিডি লিপিবদ্ধ করে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে যাচাই বাছাই করতে হবে।’

‘মামলা রুজুর পূর্বে পুলিশ সদর দফতরের আইন শাখার সঙ্গে আইনগত পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং কোন নিরীহ ব্যক্তি যাতে হয়রানির শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।’

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সংবাদ প্রকাশ ও সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য প্রকাশের জের ধরে ৫৭ ধারায় দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারের ঘটনা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়। অভিযোগ ওঠে, ৫৭ ধারা অপব্যবহার করে নিরপরাধ ব্যক্তি, বিশেষ করে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ৫৭ ধারা বাতিলের দাবিতে সারাদেশে আন্দোলন শুরু করেন সাংবাদিকরা।

সমালোচনার মুখে গত ৯ জুলাই আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান ৫৭ ধারার মামলায় কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়া হবে। তবে এই ধারা বাতিল না হওয়া পর্যন্ত ৫৭ ধারায় মামলা হবে। এরপরও বিভিন্ন গণমাধ্যমের একাধিক সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ৫৭ ধারায় মামলা করা হয়।

সর্বশেষ গত ২৯ জুলাই ডুমুরিয়ায় এফসিডিআই প্রকল্পের আওতায় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কিছু পরিবারের মধ্যে হাঁস, মুরগি ও ছাগল বিতরণ করে৷ ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দ৷ রাতেই বিতরণ করা একটি ছাগল মারা যায়৷ এরপর স্থানীয় দৈনিক প্রবাহের ডুমুরিয়া প্রতিনিধি আব্দুল লতিফ মোড়ল ‘প্রতিমন্ত্রীর সকালে বিতরণ করা ছাগলের রাতে মৃত্যু’ শিরোনামে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন৷

প্রতিমন্ত্রী বা তার দলের কেউ এতে ক্ষোভ প্রকাশ না করলেও ক্ষুব্ধ হন আরেক সাংবাদিক৷ স্পন্দন পত্রিকার ডুমুরিয়া প্রতিনিধি সুব্রত ফৌজদার তথ্য প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় মামলা করেন ৩১ জুলাই৷ মঙ্গলবার এই মামলায় লতিফ মোড়লকে কারাগারে পাঠানো হয়৷ তবে বুধবার তিনি জামিন পান

Recent Posts

Leave a Comment