রোহিঙ্গাদের ২১৪টি গ্রাম ধ্বংস: এইচআরডব্লিউ
মিয়ানমারের রাখাইনে সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের উপর ব্যাপক নিধনযজ্ঞ চালাচ্ছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে। দাবির স্বপক্ষে সংস্থাটি স্যাটেলাইটে তোলা ছবিও প্রকাশ করেছে। এইচআরডব্লিউ (Human Rights Watch) স্যাটেলাইটে তোলা ছবি পর্যবেক্ষণ করে জানিয়েছে, রাজ্যের প্রায় ২১৪টি গ্রাম সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী।
স্যাটেলাইটের ছবি পর্যালোচনা করে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ তাদের পর্যবেক্ষণে জানায়, মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের জাতিগতভাবে নির্মূল করছে। সেজন্য জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে এর নিন্দা জানিয়ে বিশ্বনেতাদের প্রস্তাব পাশ করা দরকার। একই সাথে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর উপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞাসহ অবরোধ আরোপের জন্য জাতিংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহবান জানিয়েছে সংস্থাটি।
এইচআরডব্লিউ বলছে, আকাশ থেকে মৌসুমি মেঘ কেটে যাওয়ার ফলে স্যাটেলাইটে তোলা ছবিগুলো অনেকটাই পরিষ্কারভাবে এসেছে।
সেপ্টেম্বর মাসের ১৬ তারিখে স্যাটেলাইটে তোলা এসব ছবি সংগ্রহ করা হয় বলে জানায় সংস্থাটি। হিউম্যান রাইটস ওয়াচ আরও জানায়, ধ্বংসযজ্ঞ সম্পর্কে আগে যা জানা গিয়েছিল তার চেয়ে অনেক বেশি ব্যাপকতার প্রমাণ ফুটে উঠেছে স্যাটেলাইটের সাম্প্রতিক ছবিগুলোতে।
দেখা গেছে, রাখাইনের মংডু এবং রাথেডং এলাকায় হাজার হাজার বাড়িঘর ধ্বংস হয়ে গেছে। এই বিষয়ে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ফিল রবার্টসন বলেন, “রোহিঙ্গারা যাতে বাড়িঘরে ফিরতে না পারে সেজন্য নিরাপত্তা বাহিনী ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। যার প্রমাণ ছবিতে দেখা যাচ্ছে।”
এর আগেও কয়েক দফা স্যাটেলাইটের ছবি পরীক্ষা করে রাখাইনে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের দাবি জানিয়েছিল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ
এদিকে, মানবাধিকার সংস্থাগুলো যখন ধ্বংসযজ্ঞের বর্ণনা দিচ্ছে, তখন জাতির উদ্দেশে দেয়া এক ভাষণে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি দাবি করেছেন, রোহিঙ্গারা কেন রাখাইন রাজ্য ছেড়ে চলে যাচ্ছে সেটির সঠিক কারণ তার এখনও জানা নেই।
যদিও দেশটির সেনাপ্রধান জেনারেল মিন অং দাবি করেছেন, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারের কেউ নয়। এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, রোহিঙ্গারা আসলে ‘বাঙালি’ এবং তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। আর তাই দেশের আইন মেনেই জঙ্গি দমন অভিযান চলছে।