শরীয়তপুরে ৩টি লঞ্চ ডুবি, নিখোঁজ ১৫
শরীয়তপুরের নড়িয়ায় পদ্মার ভাঙনের তোড়ে খুব ভোরে নোঙর করা অবস্থায় ৩টি লঞ্চে ডুবে গেছে। এ ঘটনায় একই পরিবারের ৩ যাত্রী ও ১২ জন লঞ্চ স্টাফ নিখোঁজ রয়েছে। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়সহ আলাদা আলাদা ৪টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীর ডুবুরি দল। বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান মো. মোজাম্মেল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সোমবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে পানির তোড়ে নোঙর করা এমভি মৌচাক, নড়িয়া-২ ও মহানগর লঞ্চ ৩টি লঞ্চ ডুবে যায়। এ ঘটনায় নড়িয়া উপজেলার লুনশিং গ্রামের মোহাম্মদ আলী (৩৭) ও সরোয়ার হোসেন (৪০) নামে দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে স্থানীয়রা। উদ্ধার হওয়া যাত্রী মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী পারভিন (৩১), শাশুড়ি ফখরুন নেছা (৫০) ও ৪ দিনের নবজাতক শিশু নিখোঁজ রয়েছে। এছাড়া লঞ্চের স্টাফ রবিন সরদার (২০), লিটন শেখ (২৫), মানিক মাদবর (৩৫), বসির (২৯), মো. রফিক (৫০), পলাশ (২০), সজল তালুকদার (৩০), জাকির হোসেন (৪৫), শাহ আলম (৩৫), সালাউদ্দিন (৩০), জয় (১৯) ও সাদেক (২৫) সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ ৩ যাত্রী ও ১২ লঞ্চ স্টাফ নিখোঁজের তালিকা করেছে। এদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা চলছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
উদ্ধার হওয়া মোহাম্মদ আলী জানান, ঢাকা থেকে মৌচাক লঞ্চে নড়িয়া উপজেলার লুনশিং গ্রামের নিজ বাড়িতে ফিরছিলেন তিনি। রাত সাড়ে ৩টার দিকে লঞ্চটি ওয়াপদা ঘাটে নোঙর করে। যাত্রীরা সবাই নেমে যায়। আমার সঙ্গে নবজাতক শিশু থাকায় ভোর হওয়ার অপেক্ষা করছিলাম লঞ্চে বসে। হটাৎ লঞ্চটি কিভাবে ডুবে যায় বুঝে উঠতে পারিনি। আমার স্ত্রী পারভীন বেগম (২৮), শাশুড়ি ফখরুন নেছা বেগম (৫০) ও নবজাতক শিশু কাউকেই বাঁচাতে পারিনি বলে মূর্ছা যাচ্ছেন বারবার।
বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের বলেন, নদী ভাঙনের কারণে সৃষ্ট ঘূর্ণিতে লঞ্চগুলো ডুবেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে অন্যান্য কারণও আমরা উড়িয়ে দিচ্ছি না। এ ঘটনায় ৩টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়, নৌ পরিবহন অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএ আলাদা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিআইডব্লিউটিএ’র তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দিতে আমরা প্রস্তুত রয়েছি এবং তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করছি।