হাজীগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধাকে গুলি করে হত্যার হুমকি!

 In জাতীয়, প্রধান খবর, লিড নিউজ, হাজীগঞ্জ উপজেলা

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মফিজুল ইসলামকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছেন চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন। প্রতিবাদে শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় ৬নম্বর পূর্ব বড়কুল ইউনিয়নের বেলচোঁ বাজারে বিশাল মানববন্ধন করেছে স্থানীয় জনগণ। মানববন্ধনে জসিমের উগ্র আচরণের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।
জানা যায়, শনিবার সকালে চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের ছোট ভাই মারুফ বেলচোঁ বাজারে প্রতিবন্ধি আনোয়ারের দোকানের সামনে তার মোটরসাইকেল রেখে অন্যত্র চলে যায়। মোটরসাইকেলের কারণে আনোয়ার তার দোকান খোলতে পারছিলেন না। অবশ্য অনেক চেষ্টার পর মোটরসাইকেল না সরিয়ে আনোয়ার তার দোকান খোলে। কিন্তু দোকানের ঠিক সামনে মোটরসাইকেল রাখায় কোনো ক্রেতা তার দোকানে আসতে পারছিলেন না। প্রায় দুই ঘন্টার পর মারুফ মোটরসাইকেল নিতে আসে। এসময় আনোয়ার কিছু বলতে চাইলে মারুফ হুমকি ধমকি দিতে শুরু করে। দ্রুত সময়ের মধ্যে তার বড় ভাই চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে তিনি ছুটে আসেন। এবং আনোয়ারকে মারধর করেন। প্রত্যক্ষদর্শী অন্যরা প্রতিবাদ করলে তাদের উপরও ক্ষিপ্র হয় জসিম। এসময় তার নেতৃত্বে স্থানীয় হাসান খান ও শাহাদাতকেও মারধর করে। শুধু তাই নয়, শাহাদাতকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয় জসিম। আশপাশের লোকজন কথা বলতে আসলে তার সাথে থাকা রাইফেল উপরের দিক তাক করে গুলি ছুড়বে বলে হুমকি চিৎকার চেঁচামেচি করতে থাকে। এসময় খবর পেয়ে ইউনয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম আসলে এবং কি হয়েছে জানতে চাইলে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয় জসিম। আত্মসম্মানের ভয়ে মুহূর্তেই ঘটনাস্থল ত্যাগ করলেও কয়েক দফায় জসিম মুক্তিযোদ্ধাকে হুমকি ধমকি দিতে থাকে। এমনকি ওই এলাকাকে মিয়ানমারের মতো করবে বলে হুমকি দেয় সে। এ অবস্থার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। খবর পেয়ে হাজীগঞ্জ থানা পুলিশের সদস্য বলাই ও জয়নাল এসে তার উচ্চ বাক্য আরো তীব্র হতে থাকে।
সরেজমিনে গিয়ে শনিবার বিকেলে দেখা যায়, বাজারে নিরবতা। ক্রেতা নেই। মানুষের আনাগোনা নেই। তবে জসিমের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হবে শুনে শতশত স্থানীয় জনতা হাজির হয়। জসিমের এহেন কর্মকান্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয় মানববন্ধনে।
বাজারের দোকানী আনোয়ার হোসেন জানান, আমরা জসিমের ভয়ে আতঙ্কে থাকি। তার অনেক প্রভাব। এমনিক তার সাথে সবসময় লাইসেন্স করা পিস্তল থাকে। কথায় কথায় গুলি করবে বলে হুমকি দেয়। এমন অভিযোগ নাম প্রকাশের আরো অনেকের।
ইউনয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মফিজুল ইসলাম জানান, আমি সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেয়ার পর মানুষ আমাকে রাজনীতিতে নিয়ে এসেছে। আমি মানুষের সাথে থেকে তাদের উপকার করতে চাই। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে জসিমের কর্মকান্ড নিয়ে আমরা নানান প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছি। আমাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিচ্ছে। আমি আতঙ্কে আছি। শীঘ্রই আমি থানা জিডি করবো। কিন্তু শুনেছি জসিম থানায় বসে আছে। সেখানে যেতেও ভয় হয়।
চাঁদপুর জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন সব অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে বলেন, আমার ভাইয়ের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে সে বিষয়ে কথা বলতে গেলে স্থানীয় যুবলীগের কিছু কর্মী আমার উপর হামলা চালায়। আমি এখন (বিকেল সাড়ে ৫টা) হাজীগঞ্জ থানায় আছি। আমি থানায় মামলা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।
এ ব্যাপারে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাবেদুল ইসলাম জানান, আমরা মোটরসাইকেল রাখা নিয়ে র্তকবির্তক হয়েছে শুনেছি। বিষয়টি মিমাংশার পথে। মুক্তিযোদ্ধাকে হুমকির বিষয়ে আমরা এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Recent Posts

Leave a Comment