বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের সহায়তায় জাতিসংঘের ৫৭ কোটি টাকা

 In প্রধান খবর

গত দুই সপ্তাহে বাংলাদেশে ১ লাখ ৬০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে এসেছে। তাদের অনেকেই পায়ে হেটে, পাহাড় অতিক্রম করে, নদী সাঁতরে সীমান্ত পাড়ি দিয়েছেন। ফেলে এসেছেন নিজের ঘরবাড়ি। বাংলাদেশের শরণার্থী শিবিরে এভাবে আশ্রয় নিয়েছেন দুই লাখের বেশি মানুষ। তাদের খাবারসহ অন্যান্য মানবিক সুবিধা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ ও অন্যান্য সাহায্যকারী সংস্থাগুলো।

জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের প্রধান মার্ক লোকক ঘোষণা দেন, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য সেন্ট্রাল এমারজেন্সি রিসপন্ড ফান্ড থেকে ৭০ লাখ ডলার সহায়তা দেবে জাতিসংঘ।

তিনি বলেন, এই তহবিল দিয়ে প্রয়োজনী আবাস, খাবার, চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করা হবে। বিশেষ করে নারীদের এই সহায়তা অনেক বেশি প্রয়োজন। লোকক মনে করেন, এই জনস্রোতে তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হিমশিম খাচ্ছে বাংলাদেশ। ত্রাণ সংস্থাগুলো সহায়তায় এগিয়ে আসছে। কিন্তু তাদের জন্যও এমন পরিস্থিতি সামলানো কঠিন। এছাড়া এমন সময় এই সংকট শুরু হয়েছে যখন বন্যা ও ভূমিধসের কারণে সমস্যায় রয়েছে বাংলাদেশ।

আগেও এই তহবিল থেকে বন্যা দুর্গতদের সহায়তা করেছিলো জাতিসংঘ। সব মিলে এখন প্রায় ১ কোটি ডলার সহায়তা আসলো।

এদিকে রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রও। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের দক্ষিণ ও মধ্যএশিয়া ভিত্তিক ভারপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী অ্যালিস ওয়েলস জানিয়েছেন, বাংলাদেশে মানবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কংগ্রেসনাল কমিটিকে তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশকে সহায়তা দিয়ে যাবো। জাতিসংঘের হয়ে সেখানে গিয়ে কাজ করেছেন কফি আনান। আমরাও দেখছি কিভাবে দুই দেশকে একসঙ্গে বসানো যায় এবং আনান কমিশনের দেওয়া প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা যায়।

তিনি বলেন, এটা একটা বড় সংকট। আর এটি মোকাবেলায় মানবিক ও রাজনৈতিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এই সংকট মোকাবেলা করবে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র হেদার নরেট।

এছাড়া সিনেটর জন ম্যাককেইন ও ডিক ডারবিন এক প্রস্তাবে মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের উপর চালানো হত্যাযজ্ঞের নিন্দা জানান এবং দেশটির নেত্রী অং সান সুচিকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। চলতি সপ্তাহেই সুচিকে একটি চিঠিতে এই সংকট সমাধানের আহ্বান জানিয়েছিলেন ম্যাককেইন।

এছাড়া কানাডীয় পররাষ্ট মন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে তারা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তারা অং সান সুচি ও সামরিক বাহিনীকে একযোগে এই মানবিক সংকট সমাধানে এগিয়ে আসতে বলেছেন। তিনি বলেন, ‘এই সহিংসতা এখনই বন্ধ হওয়া উচিত। রোহিঙ্গাদের সম্মান করা উচিত এবং নাগরিকত্ব দেওয়া উচিত। এটা অস্বীকার করাটা অং সান সুচির গণতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গিকে দুর্বল করে তোলে।’

যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক কমিটির সিনেটর বেন কার্ডিন বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেছেন, ‘আমি রোহিঙ্গাদের ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন। তাদের হত্যা, ধর্ষণ ও পুরো গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার খবর শুনেছি আমরা।’ তিনি বলেন, ‘সহিংসতা থেকে বাঁচতে ১ লাখ ২০ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। সারাবিশ্বের মতো আমিও বাংলাদেশের প্রশংসা করি। আমি মানবতার খাতিরে তাদের সীমান্ত খুলে দেওয়ার আহ্বান জানাই।

Recent Posts

Leave a Comment