মুশফিককে অধিনায়ক রাখা না-রাখা নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

 In খেলাধুলা, প্রধান খবর, লিড নিউজ

দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পরই সম্ভবত অধিনায়কত্ব হারাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। টেস্টের অধিনায়কত্ব থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত মোটামুটি নিয়ে ফেলেছে বিসিবি। এ বিষয়ে পাঠকদের মতামত চেয়ে প্রথম আলো ফেসবুক পেজে আজ সকালে একটি পোস্ট করা হয়। পোস্টটির নিচে দুই হাজারের বেশি পাঠক মন্তব্য করেছেন। সেসব মন্তব্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অনেকেই অধিনায়ক পরিবর্তনের পক্ষে। আবার মুশফিককে অধিনায়ক রাখার পক্ষে সমর্থকেরও সংখ্যাও কম নয়।

মমিনুল ইসলাম, স্বপ্নীল সাফি, মঈদুল হাসান মোবিন, আবরার জাইন আদিবসহ অনেকেই এ সিদ্ধান্তের ঘোর বিরোধিতা করেছেন। নাঈম মোস্তফা, আহমেদ জাহিদ, মোহাম্মদ আলী, ফিরোজ খানের মতে, একটা-দুটো সিরিজ খারাপ যেতেই পারে | দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে অস্ট্রেলিয়াও খারাপ খেলে। আর মুশফিকের নেতৃত্বে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া দলের সঙ্গে সিরিজ ড্র করেছে বাংলাদেশ | তাই এখনই মুশফিকের কাছ থেকে অধিনায়কত্ব কেড়ে নেওয়া ঠিক হবে না।

তোফাজ্জল হোসেইন, শাকিল আল মামুন, মোহাম্মদ সাহিনূর ইসলাম, সিফাত উল হক, মোহাম্মদ আলামিন ইসলামের দাবি, ‍মুশফিককে অধিনায়ক রেখে তাঁকে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে দেওয়া হোক।

তমাল খন্দকার, সামিউল ইমন, প্রহ্লাদ দেবনাথ, তানভীর আহমেদ, অপু চন্দ্র শীলের মতে, মুশফিক খুব ভালো ব্যাটসম্যান, কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে রক্ষণশীল। টেস্টে তাঁরা একজন আক্রমণাত্মক অধিনায়ক চাইছেন।

মোহাম্মদ শামীম হোসেইন, সরকার মাসুদের ভাষ্য, মুশফিক যদি নিজ থেকে পদত্যাগ করেন, তাহলে সেটা হবে তাঁর জন্য সম্মানজনক। তাঁর উচিত বিসিবিকে সুযোগ না দিয়ে নিজেই পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়া।

জায়েদ হোসেইনের মতে, দলের পারফরম্যান্স খারাপ বলে তাঁকে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না, কারণ মাঠে খেলা হয় ১১ জনের, একজনের না। তাই এর দায় একজন কেন নেবে।

মো. আবদুল হামিদ ও জন পার্কারের মত, মুশফিকের সংবাদ সম্মেলনে বলা কথাগুলো অধিনায়কসুলভ নয়। একজন অধিনায়ক কখনোই ঢালাওভাবে তাঁর বোলার বা ব্যাটসম্যানদের দোষারোপ করতে পারেন না। বরং তাঁর উচিত খারাপ সময়েও তাঁদের সাহস ও সমর্থন দেওয়া। ভালো খেলোয়াড় মানেই যে ভালো অধিনায়ক নয়, সেটা মুশফিক আরেকবার প্রমাণ করলেন।

ইয়াদ এনএমআর, ইফতেখার মাহমুদ, পারভেজ জুয়েলের মতে, সিদ্ধান্তটি সঠিক। কারণ, মাঠে অধিনায়কের যদি কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা না থাকে, ফিল্ড পজিশনও যদি ড্রেসিংরুম থেকে বলে দেওয়া হয়, তাহলে সেখানে অধিনায়ক থাকার চেয়ে না থাকাই ভালো।

পারভেজ হোসেইন খান বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের পারফরমেন্সে হতাশ হয়ে মাশরাফিকে টেস্ট ক্যাপ্টেন করার পক্ষে মত দেন।

সামিউল বরাত সিফাত বলেন, মুশফিককে এভাবে চাপ না দিয়ে বাকিদের জবাবদিহি চাওয়া হোক। ১১ জন মিলে কীভাবে ৯০, ১৪৯ রান হয়, সেটা জানা হোক।

সাইদ মাহেদি বলেন, টসে জিতে ফিল্ডিং না ব্যাটিং নেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত টিম ম্যানেজমেন্ট আগেই নিয়ে থাকে। অধিনায়ক শুধু মাঠে গিয়ে সেটা ঘোষণা দেয়। সুতরাং দায় কেন শুধু মুশফিককে বহন করতে হবে। তিনি আরও প্রশ্ন রাখেন, টিম ম্যানেজমেন্ট মুশফিকুর রহিমকে বলির পাঁঠা বানাচ্ছে না তো? মুশফিককে অধিনায়কত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার কোনো ষড়যন্ত্র করছে না তো?

আনিসুর রাহমান, আবদুল আউয়াল মজুমদারসহ বেশ কয়েকজন মাহমুদুল্লাহকে ক্যাপ্টেনসি দেওয়ার পক্ষে যুক্তি দেখিয়েছেন।

আলী ইমরান চৌধুরী আবার পুরোপুরি বিসিবির সিদ্ধান্তের পক্ষে। তিনি তামিমকে পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে মনোনীত করেছেন।

মেজবাহ উদ্দিন মামুন বলেন, নতুন অধিনায়ক যে-ই হোক, তাঁকে যেন স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয় কোচ ও ম্যানেজমেন্ট। তা না হলে দলের অবস্থা বদলাবে না।

জাকেরুল ইসলাম বেশ আবেগাপ্লুত হয়ে লেখেন, ২০১০-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের সেরা খেলোয়াড় মুশফিক। হাবিবুল বাশারের পরে মুশফিকই সেরা। তাঁর মতে, মুশফিকের সততা, ভদ্রতা আর বিনয়কে টিম ম্যানেজমেন্ট তাঁর দুর্বলতা মনে করছে।

ক্রিকেট বাঙালির কাছে শুধু খেলা নয়, বাঙালির আবেগ। ক্রিকেটের উন্নতিতে ক্রিকেটাররা যে রকম ভালোবাসা পান, তাঁদের ব্যর্থতাও ভীষণভাবে সমালোচিত হয়। এবার তেমনই এক খারাপ সময় কাটাচ্ছে বাংলাদেশ টেস্ট ক্রিকেট, সঙ্গে অধিনায়ক মুশফিকও।

Recent Posts

Leave a Comment