বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হলেন মসজিদের ইমাম!

 In দেশের ভেতর, প্রধান খবর, হাজীগঞ্জ উপজেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, হাজীগঞ্জ

বিকাশের নাম ভাঙ্গিয়ে মসজিদের এক ইমাম থেকে প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়েছে ৩৮ হাজার ৫শ’ ৮০ টাকা। এতগুলো নগদ টাকা মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে খুইয়ে পুরো পরিবারে নেমে এসেছে প্রায় শোকের ছায়া। এ ঘটনায় ঐ ইমাম বেশ ক’টি মুঠোফোন নাম্বার উল্লেখপূর্বক অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামী করে হাজীগঞ্জ থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটে গত সোমবার বিকেলে হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ধেররায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, কুমিল্লা লাঙ্গলকোট এলাকার মগুয়া গ্রামের মোখলেছুর রহমানের ছেলে একরামুল হক (৩৮) প্রায় ১৫ বছর ধরে হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের ধেররা রহিম উদ্দিন হাজী বাড়ির মসজিদে ইমামতি করে আসছেন। একই এলাকার একটি মাদ্রাসারও শিক্ষক তিনি। এই একরামুল হকের স্ত্রীর মুঠোফোনে স্ত্রীর ভাই ১০ হাজার ২শ’ টাকা বিকাশে পাঠান সোমবার বিকেলে। আর সেই ১০ হাজার টাকা প্রতারক চক্র হাতিয়ে নিয়ে থেমে থাকেনি। একই ফোনে আরো ৪০ হাজার টাকা ভুলে চলে এসেছে বলে ফের অনুরোধ জানায় ঐ চক্র। এরপরে একটি ম্যাসেজ দেখে তাদের কথায় বিশ্বাস করে মাত্র কয়েক ঘন্টার মধ্যে ঐ চক্রকে বিকাশের মাধ্যমে ৩৮ হাজার ৫শ’ ৮০ টাকা পাঠিয়ে ওই ইমাম নিজেই হতবাক হয়ে পড়েন।

ইকরামুল হক  জানান, আমার স্ত্রীর বড় ভাই ময়মনসিংহের ভালুকা এলাকা থেকে তাকে সোমবার বিকেলে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা পাঠান। টাকা মুঠোফোনে আসার কিছুক্ষণ পর অপরিচিত একটি নাম্বার থেকে এক লোক ফোন কর বলে তাদের দেয়া ১০ হাজার টাকা ভুলে এই ( আমার স্ত্রী) নাম্বারে চলে এসেছে। তাদের রোগী হাসপাতালে আছে, রোগীর জন্য টাকাটা দ্রুত ফেরৎ চাচ্ছে। তাই ৯ হাজার ৮শ’ টাকা ফেরৎ দেয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ফের আরেকটি ম্যাসেজ আর ফোন আসে। ঐ ফোনে পূর্বের মতো একইভাবে বলা হয় তাদের ৪০ হাজার টাকা স্ত্রীর নাম্বারে চলে এসেছে। তাদের কথা বিশ্বাস করে বাসার সামনের একটি দোকান থেকে দুই বারে আমি ১৪ হাজার ৯শ’ করে মোট ২৯ হাজার ৮শ’ টাকা পাঠিয়ে দেই। এই টাকা পাঠানোর কিছুক্ষণ পরেই ফের ঐ চক্র বলে, এই মাত্র আপনার নাম্বারে আমাদের ১৫ হাজার টাকা চলে গেছে, দ্রুত টাকাটা ফেরৎ পাঠান। এ সময় আমার কেন জানি একটু সন্দেহ হয়, আর আমার একাউন্ট চেক করে দেখি, আমার একাউন্টে কোনো টাকাই নেই। তখন তাদেরকে ফোন দিয়ে উচ্চবাচ্য শুরু করলে আশপাশের লোকজন জড়ো হয়ে পড়ে। আর তখনই বুঝতে পারি, আমি প্রতারক চক্রের শিকার হয়ে গেছি। এরপরেই রাতে হাজীগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করি। আমার মতো একটা পরিবারের কাছ থেকে হঠাৎ এতোগুলো টাকা নিয়ে যাওয়ায় আমি আর স্ত্রী প্রায় পাগল হয়ে গেছি।

বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণার বিষয়টি নিশ্চিত করে হাজীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ জাবেদুল ইসলাম জানান, আমাদের তদন্ত কাজ চলছে।

Recent Posts

Leave a Comment