করোনা: ২৪ ঘন্টায় শনাক্ত ৩৫৩১ জন, মৃত্যু-৩৯
মেহেদী হাসান দিপু, ঢাকাঃ
প্রানঘাতী করোনা যেন কেড়ে নিচ্ছে একের পর এক মানুষের জীবন, তবুও কমছে না মানুষের স্বাভাবিক চলাচল এবং অনেকেই মানছেন না নির্দিষ্ট সামাজিক দূরত্ব এবং ব্যবহার করছেন না মাস্ক। ফলাফল স্বরুপ এই অসচেতন মূল্যবোধের কারণে বেড়েই চলছে মৃত্যুর তালিকা এবং দিন দিন প্রকোপ আকার ধারণ করছে করোনাভাইরাস (COVID-19)।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ৬২টি পরীক্ষাগারে গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ১৫ হাজার ৭১০ টি এবং পূর্বের কিছু নমুনাসহ ৬০টি পরীক্ষাগারে মোট পরীক্ষা করা হয়েছে ১৫ হাজার ৫৮৫ টি। বর্তমান পারিপার্শ্বিক অবস্থার উপর ভিত্তি করে জানা যায় গত ২৪ ঘন্টায় সারাদেশে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী সনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ৫৩১ জন। সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী মোট ৬০ টি পরীক্ষাগার হতে আক্রান্ত রোগীদের শনাক্ত করা হয়। এই পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছেন ১ হাজার ৮৪ জন এবং সর্বমোট সুস্থ হয়েছেন ১৮ হাজার ৭৩০ জন।
অনলাইন স্বাস্থ্য বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী ২৪ ঘন্টায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরন করেছেন ৩৯ জন এবং সর্বমোট মৃতের সংখ্যা দাড়ালো ১ হাজার ৪৬৪ জন।
সারাদেশে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাড়ালো ১ লক্ষ ১২ হাজার ৩০৬ জনে। এই বিষয়ে ২১শে জুন (রবিবার) দুপুর আড়াইটার অনলাইন বুলেটিনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা নিশ্চিত করেন ।
বুলেটিনের তথ্য অনুযায়ী মৃত্যু বিশ্লেষণে অধ্যাপক ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, মৃত ব্যাক্তিদের মধ্যে পুরুষ ৩৫ জন এবং নারী ৪ জন। বয়স বিশ্লেষণে থেকে জানা যায় ০ থেকে ১০ বছর বয়সের ১ জন, ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সের ১ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের ৬ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সের ১২ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সের ১২ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছর বয়সের ৪ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছর বয়সের ২ জন এবং ৮১ থেকে ৯০ বছর বয়সের ১ জন। যায় তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জন, রাজশাহী বিভাগের ২ জন,খুলনার ৪ জন, বরিশালে ৪ জন, সিলেট বিভাগের ১ জন এবং রংপুর বিভাগের ১ জন।
গত ২৪ ঘন্টার তথ্য অনুযায়ী আইসোলেশনে আনা হয়েছে ৬৩১ জন এবং গত ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত সর্বমোট আইসোলেশনে আছেন ১২ হাজার ১৯০ জন। এর মধ্যে নতুন করে ছাড় পেয়েছেন ৩৫৬ জন এবং সর্বমোট আইসোলেশনে থেকে ছাড় পেয়েছেন ৭ হাজার ৬২৪ জন।
অনলাইন বুলেটিনের এক পর্যায়ে ডাঃ নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে কোয়ারেন্টাইনে এসেছেন ২ হাজার ৮১৯ জন এবং কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন ২ হাজার ১৩২ জন। সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী সর্বমোট কোয়ারেন্টাইনে এসেছেন ৩ লক্ষ ৩৯ হাজার ৫ শত ৮৩ জন এবং সর্বশেষ পরিস্থিতি অনুযায়ী সর্বমোট কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ লক্ষ ৭৬ হাজার ৩৭৮ জন।বর্তমানে কোয়ারেন্টাইনে আছেন ৬৩ হাজার ২০৫ জন।
তাছাড়াও স্বাস্থ্য অধিদফতরের তত্তাবধানে বাড়ি বাড়ি গিয়ে নমুনা সংগ্রহের কাজব বরাবরই অব্যাহত আছে এবং হট লাইন নাম্বারের মাধ্যমে জনসাধারণকে স্বাস্থ্য সেবামূলক পরামর্শ দেয়ার কাজ ২৪ ঘন্টা চালু বলে নিশ্চিত করা হয়।
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, তথ্য বিশ্লেষণ অনুযায়ী মৃত্যুর হার ১.৩০ শতাংশ। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় অনলাইন মুক্তপাটে হট লাইন সেবায় নিয়োজিত আছেন ১৬ হাজার ৩৮৩ জন চিকিৎসক এবং সেচ্ছাভিত্তিতে সেবা দিচ্ছেন ৪ হাজার ২১৭ জন চিকিৎসক। তাছাড়াও স্ক্রিনিং কার্যক্রম বিমানবন্দর, স্থলবন্দর এবং সমুদ্রবন্দরে অব্যাহত আছে। ৩ বন্দরে গত ২৪ ঘন্টায় স্ক্রিনিং করা হয়েছে ৬৭০ জনকে। এর মধ্যে বিমানবন্দরে ২৯৩ জন, স্থলবন্দরে ২৭৮ জন এবং সমুদ্রবন্দরে ৯৯ জন।
স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জনসাধারণকে ওয়েবসাইটে দেয়া লকডাউন পরর্বতী সকল স্বাস্থ্যবিধি এবং দৈনন্দিন কাজের জন্য সকল নিয়ম সমূহ মেনে চলার জন্য এবং সকল স্থানে পর্যাপ্ত সামাজিক দূরত্ব বজায়ে রাখার ব্যাপারে কঠোর ভাবে বলা হয়।লকডাউনের রেড জোন এলাকা বিভক্ত করা হলেও বিভিন্ন স্থানে জনসমাগম এড়িয়ে চলার জন্য নির্দেশ দেয়া হয় এবং করোনা পরিস্থিতিতে একে অপরকে মাস্ক ব্যবহার করার জন্য উদ্ভুদ্ধ করার জন্যও বলা হয়।তাছাড়াও প্রতিদিনের মত আবারও বলা হয় নিজের সুরক্ষা নিজের হাতে