ইলিশ ধরতে জেলে পাড়ার প্রস্তুতি

 In চাঁদপুর

নজরুল ইসলাম আতিক:
অভিযান শেষে নদীতে মাছ ধরতে যাওয়ার শেষ মুহুর্তের প্রস্তুতিতে ব্যাস্ত সময় পাড় করছে চাঁদপুরের জেলেরা। আগামী ৪ নভেম্বর রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে সরকারের ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা। তাই বিরতি শেষে আবারও নদীতে মাছ ধরতে মুখিয়ে রয়েছে জেলেরা। এর আগে মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমের আওতায় গত ১৮ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত নদীতে সকল প্রকার মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয় সরকার।
ইতিমধ্যে নদীতে মাছ ধরার প্রস্তুতি নিতে জেলেরা তাদের নৌকা মেরামতের পাশাপাশি পুরনো জাল সেলাই করেছে নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে। আর কয়েক দিন পরেই জেলেরা নেমে পড়বে রূপালী ইলিশের সন্ধানে। আর তাই ইলিশ শিকারের জন্য মতলবের ষাটনল থেকে হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী পর্যন্ত চাঁদপুরের ৭০ কিলোমিটার এলাকার অর্ধলক্ষাধিক জেলে তাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
চাঁদপুর সদর, মতলব উত্তর, হাইমচর উপজেলার বেশ কয়েকজন জেলে বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় অপেক্ষায় আছি। আমরা ইলিশ ধরার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। মাছ ধরার নৌকা মেরামতসহ ব্যবহৃত জালের ছেড়া অংশ সেলাই করে সকল কিছু তৈরি করেছি। আগামী ৫ তারিখ থেকেই আমরা নদীতে নেমে যাব। এখন একটাই আশা, নদীতে ইলিশ মাছ ধরে সংসারের অভাব ঘুছাবো, যদি নদীতে পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া যায়।
সরেজমিনে রোববার সকালে চাঁদপুর সদর উপজেলার সাকুয়া হরিণা ফেরী ঘাটসহ আরো বেশ কিছু জায়গার নদীর তীর ঘুরে দেখা যায়, জেলেরা তাদের নৌকা ও জাল মেরামত এর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছে। এসময় বেশ কয়েকটি নৌকার ইঞ্জিনের কাজ করতেও দেখা যায়। তারা আরো জানায়, সরকারের নির্দেশনা মেনে এতদিন তো ঘরে বসে ছিলাম। পেটের দায়ে এখন নদীতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি সবকিছু ঠিকঠাক করে রাখছি আল্লাহ ভালো রাখলে ৫ তারিখ থেকে নদীতে যাব।
মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রমের আওতায় চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনা নদীর ৬০ কিলোমিটার এলাকায় এই ২২ দিন সকল ধরণের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। এই সময়ে মাছ ধরা, পরিবহন, বিক্রি ও মজুদ ছিল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু এ বছর নদীতে ব্যাপক অভিযান থাকা সত্বেও মাছ ধরেছে অনেক অসাধু জেলে। যদিও পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে জেলে, জাল ও ইলিশ আটক করেছে।
চাঁদপুর জেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞার সময় পদ্মা-মেঘনা নদীতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৬শ’৬৩ লাখ মিটার কারেন্ট ও ৪.৬’শ মেট্টিক টন জাটকা জব্দ করেছে জেলা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সদস্যরা।
এ সময় শতাধিক জেলেকে নদীতে ইলিশ ধরার অপরাধে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড ও অর্থদন্ড দন্ডিত করা হয়েছে। তাছাড়া জেলার অর্ধলক্ষাধিক জেলেকে এই নিষিদ্ধ সময়ে মাছ না ধরতে ২০ কেজি করে চাল প্রধান করা হয়েছে।
এ বিষয়ে চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুল বাকী জানান, মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম সফল করতে এবছর হেলিকাপ্টারও যুক্ত রয়েছে। এছাড়াও আমরা দিনরাত মা ইলিশ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছি। আশা করছি আমরা বিগত বছরের মতো এবারও সফল হবো। যদিও কিছু জেলে অবাধ্য । এদের মধ্যে অনেককেই আমরা আটক করতে সক্ষম হয়েছি। এমনকি তারা বর্তমানে কারাগারে আছে।

Recent Posts

Leave a Comment