সৌদি যেতে নিব›ন্ধন করতে হাজারো মানুষের ভিড়!
চাঁদপুর সংবাদদাতা:
‘দুই ঘণ্টা আগে আইয়া লাইনে দাড়াইছি। বহুত ধাক্কা-গুতা খাইছি, তয় লাইন ছাড়ি নাই। স্যার, টিভিতে যা দেখছি ওইডা সত্য অইবো তো। লটারিতে নাম উঠলে নাকি অল্প টেকাতেই সৌদি যাওন যাইবো, হুনছি।’ এভাবেই সৌদি আরবে শ্রমিক হিসেবে নাম নিবন্ধন করতে আসা মতলবের যুবক সজিব খান তার অনুভূতি জানালেন।
সজিব বলে, ‘ছোডবেলা থেইক্যাই মনের মইধ্যে অনেক সাধ আছিলো মক্কার দেশ সৌদি যামু, কিন্তু টেকার লাইগ্যা যাইতে পারি নাই। এইবার লটারিতে লাইগ্যা গেলে সৌদি যাইতে পারমু।’
কম খরচে সৌদি আরব যেতে চাঁদপুর জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ে হাজারো যুবক ভিড় করেছে। শ্রমিক হিসেবে নাম নিবন্ধন করতে ঐ অফিসে বৃহস্পতিবার দুপুরে দেখা যায় হাজারো যুবকের ভিড়। ৪ দিনে (বৃহস্পতিবার বেলা ২ টা পর্যন্ত) ২ হাজার ৩শ’ ১৪ জন নিবন্ধন করলেও বুধ ও বৃহস্পতিবার নিবন্ধিত হয় প্রায় ২ হাজারেরও বেশি।
গতকাল দুপুরে
১টা চাঁদপুর শহরের কালীবাড়ি মোড় এলাকায় কথা হয় বরুন দাস নামের এক যুবকের সঙ্গে। সৌদি আরব যেতে ইচ্ছুক বরুন হাজীগঞ্জ উপজেলা থেকে এসেছেন নিবন্ধন করতে। হাতে কিছু কাগজপত্র। নিবন্ধন করতে পেরেছেন? জিজ্ঞেস করতেই তিনি বলেন, ‘অনেক কষ্ট হইলেও ফরম তুলতে পারছি। ভিড়ের মধ্যে পইড়া পায়ে আঘাতও পাইছি। এখন ফরম পূরণ কইরা প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংকে দেড়’শ টাকা করে আমাগো জমা দিয়ে ব্যাংকের পে-অর্ডার জমা দিতে হইবো, তারপর নাকি নিবন্ধন করতে হইবো।’
শুধু বরুনই নয়, তার মতো আরো শত-শত মানুষ ভিড় জমাচ্ছে শহরের জেএম সেনগুপ্ত রোডস্থ (জেলা শিল্পকলা একাডেমির পাশে) আসলাম ম্যানশনের ৩য় তলায় জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ে। যেখানে অল্প খরচে সৌদি আরব যাওয়ার জন্য নিবন্ধন চলছে। সকাল থেকেই নিবন্ধনের জন্য লাইনে দাঁড়াতে থাকে মানুষ।
এদিকে সারা দেশের মতো চাঁদপুরেও ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ে ফরম জমার কার্যক্রম শুরু হয়। অতিরিক্ত মানুষের চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় নিবন্ধনের কাজে জড়িত সংশিষ্টদের। একপর্যায়ে বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টা থেকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
চাঁদপুর জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ে সহকারী পরিচালক হালিমা বেগমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত এখানে মোট ২ হাজার ৩শ’ ১৪ জন ফরম জমা দিয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ফরম জমা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।