কুমিল্লার মাতৃ ভান্ডারের মোড়ক নকল করে দধি ও রসমালাই তৈরি

 In চাঁদপুর, প্রধান খবর, শীর্ষ খবর




শাহারিয়ার খান কৌশিক ॥



চাঁদপুরে বি.এস.টি.আই অনুমোদন বিহীন দুগ্ধ মাঠার কারখানায় ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে জরিমানা আদায় করেছে। পুরানবাজার ঘোষপাড়ায় ৪টি দুগ্ধ মাঠা কারখানায় সচ্চিত্র প্রতিবেদন দৈনিক কয়েকটি পত্রিকায় ফলোওভাবে প্রকাশ হওয়ার পর প্রশাসনের দৃষ্টি নজরে আসে। অবশেষে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট সাদিয়া জেরিনের নেতিত্বে পুলিশ ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে ২টি দুগ্ধ মাঠা কারখানায় অভিযান চালায়।



অর্পিতা পিউর মাঠার মালিক শীতল ঘোষের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে অপরিষ্কার অপরিচ্ছন্ন ও পানি মেশানো দুধ দেখতে পেয়ে ভ্রাম্যমান আদালত তার কাছ থেকে তিন হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। ভ্রাম্যমান আদালত এর কিছুক্ষন পরেই ঘোষপাড়ায় অজয় পিউর মাঠার মালিক অমরের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে খালি বোতল ও লেভেল দেখতে পায়। ভ্রাম্যমান আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে অমর ঘোষ ঘর থেকে পালিয়ে গেলে তার স্ত্রী দ্রুত একটি কক্ষে পানি মিশানো দুধ মাঠা ও কুমিল্লার বিখ্যাত মাতৃ ভান্ডারের মোড়ক ব্যবহার করে দধি, রসমালাই তৈরি করে তা লুকিয়ে রেখে দরজায় তালা মেরে দেয়। নির্বাহী মেজেষ্ট্যাট সাদিয়া জেরিন এর নির্দেশে পুলিশ কক্ষটির তালা ভেঙে ভিতরে প্রবেশ করে এই দৃশ্য দেখতে পায়।



তাদের ফ্রিজ বোঝাই বি.এস.টি.আই অনুমোদন বিহীন মাঠা, কুমিল্লা মাতৃভান্ডরের মোড়ক ব্যবহার করা দধি ও রসমালাই দেখতে পায়। নির্বাহী মেজিষ্ট্রেট প্রথমবারের মত তাদেরকে ক্ষমা করে দিয়ে ৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে। এক সপ্তাহের মধ্যে বি.এস.টি.আই অনুমোদন মেয়াদ উর্ত্তীণের তারিখ ব্যবহার না করলে সিলগালা সহ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানায়। অভিযান পরিচালনা কালে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ায় দুটি কারখানায় অভিযান চালালো বাকি ২টিতে চালানো সম্ভব হয়নি।



অভিযান চলাকালীন সময়ে অমর ঘোষের স্ত্রী উত্তেজিত হয়ে উপস্থিত সকলের সামনে জানায়, প্রতিমাসে চাঁদপুর পৌরসভার স্যানেটারী ইন্সেপেক্টর হিমাংসু মজুমদারকে পৌরসভার নামে তিন হাজার টাকা জেলা মার্কেটিং

অফিসার নিয়াজ মোহাম্মদ রেজাউল করিমকে তিন হাজার ও স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে প্রতিমাসে কারখানা প্রতি এক হাজার টাকা করে দেওয়া হয়। উল্লেখ্য সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে উৎপাদন ও মেয়াদ উর্ত্তীণের তারিখ এবং বি.এস.টি.আই অনুমোদন ছাড়া পুরানবাজারের ঘোষপাড়ায় গড়ে উঠেছে ৪টি

কারখানা। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের মান নিয়ন্ত্রক ল্যাবে পরীক্ষা ছাড়াই এই মাঠা বাজারজাত করছে। অদক্ষ শ্রমিক দিয়ে কোন রকম মান নিয়ন্ত্রন ব্যবস্থা না রেখে নিজেদের মন গড়ার মত প্রতিষ্ঠানের নাম ও লেভেল লাগিয়ে বোতল জাত করে চাঁদপুরের বিভিন্ন জেলায় এই মাঠা সরবরাহ করা হচ্ছে। এই সকল মাঠার কোন বি.এস.টি.আই না থাকাতে সরকার যেমন হারাচ্ছে রাজস্ব তেমনি করে সাধারণ জনগণ খাচ্ছে ধোকা । দুধের মধ্যে পানি মিশিয়ে তৈরি হচ্ছে অর্জিনাল পিউর মাঠা। পুরানবাজারে সকল মাঠার কারখানা গুলো বাড়ির ভিতরে অবস্থিত থাকায় স্বচোখে না দেখায় বুঝা যায় না যে, কীভাবে তৈরি হচ্ছে অপুষ্টিকর মাঠা। লেভেলের গায়ে ফুড গ্রেইট লেখে এই মাঠা বাজারজাত করা হচ্ছে। পুরানবাজার ঘোষপাড়ায় অমর ঘোষের অজয় পিউর মাঠা, কৃষ্ণ ঘোষের স্বজন পিউর মাঠা, শীতল ঘোষের অর্পিতা পিউর মাঠা, শুভংকর ঘোষের বৃষ্টি পিউর মাঠা এই ৪টি প্রতিষ্ঠান তাদের নিজ বাড়িতে প্রতিদিন মাঠা বোতলজাত করে বাজারে বিক্রি করছে। এদের মধ্যে শীতল ঘোষ তার বাড়িতে গোপন কক্ষে মেশিন বসিয়ে টিস্যু পেপারের মাধ্যমে ভেজাল ছানা তৈরি ও ভেজাল ঘিঁ সহ মাঠা তৈরি খবর পাওযা যায়।

Recent Posts

Leave a Comment