জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ‘ক্রসফায়ার’
ঢাকা: ‘ক্রসফায়ার’ বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ একপক্ষের মানুষ মারা যায় কেন এমন প্রশ্ন উঠেছে বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে। তবে নৌমন্ত্রী শাহজাহান খান বলেছেন, জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হিসেবেই ‘ক্রসফায়ার’ হচ্ছে। শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে টিসিবি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত বিবিসি বাংলাদেশ সংলাপে প্যানেল আলোচক ছিলেন নৌ-পরিবহণমন্ত্রী শাজাহান খান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান, লন্ডনভিত্তিক বেসরকারি সংস্থা আর্টিকেল নাইনটিনের বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক তাহমিনা রহমান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক এম এম আকাশ। অনুষ্ঠানে এক দর্শক জানতে চান, ‘কথিত বন্দুকযুদ্ধই কি বাংলাদেশে সন্ত্রাস দমনের একমাত্র পথ হয়ে উঠছে?’ জবাবে নৌমন্ত্রী শাজাহান খান বলেন, “কেউ গ্রেফতার হওয়ার পর পালাবার চেষ্টা করলে এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আক্রমণ করতে চাইলে এ ধরনের ঘটনা (ক্রসফায়ার) ঘটতেই পারে।” তিনি বলেন, “কঠোরভাবে সন্ত্রাস দমন করা সরকারের দায়িত্ব। এ জন্য বিভিন্ন সময় বন্দুকযুদ্ধে নিহতের ঘটনা ঘটে।” আইনি প্রক্রিয়ায় বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে সন্ত্রাসীরা শাস্তি না পাওয়ার উদাহরণ তুলে ধরে শাজাহান খান বলেন, “বাংলাদেশে এ পর্যন্ত আদালতের বিচারের মাধ্যমে মাত্র একজনের শাস্তি হয়েছে। তিনি হলেন এরশাদ শিকদার। আর কারো হয়নি।” জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হিসেবেই ‘ক্রসফায়ার’ হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। লে. জেনারেল মাহবুবুর রহমান বলেন, “বিচারবহির্ভুত হত্যা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। কিন্তু দেশে এটি চলছে। সরকার থেকেই এটির পক্ষে বলা হচ্ছে। আগে বিরোধী দল টার্গেট ছিল। এখন সরকারের নেতাকর্মীরাও মারা যাচ্ছে ক্রসফায়ারে।” বিএনপি শাসনামলে র্যা ব গঠন হয়েছে এবং তখন থেকেই ক্রসফায়ারের ঘটনা শুরু হয়েছে, এমন প্রশ্নে বিএনপির এই শীর্ষনেতা বলেন, “তখনকার প্রেক্ষাপটে দরকার ছিল, তাই হয়েছে। এখন দরকার নেই।” অনুষ্ঠানে দর্শকদের মধ্য থেকে এক তরুণী বলেন, আসলে বন্দুকযুদ্ধের নামে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে। মূলত যাকে মারা হয়, তার হাতে তো কোনো অস্ত্র থাকে না। অন্যদিকে দুই তরুণ বলেন, রাষ্ট্র ও সমাজের স্বার্থে সন্ত্রাসীদের এভাবে বন্দুকযুদ্ধে মেরে ফেলাই উচিত। অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, “বন্দুকযুদ্ধ মানে হলো দুই পক্ষের মধ্যে বন্দুক নিয়ে যুদ্ধ হওয়া। কিন্তু গ্রেফতারের পর আসামির হাতে তো কোনো বন্দুক থাকে না।” নারায়ণগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সাত বা ১১ জন খুনের ঘটনার উদাহরণ তুলে ধরে এ বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক বলেন, “এভাবে চলতে থাকলে এখন সরকার যাকে ইচ্ছা তাকে মারবে। এরপর বলবে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে।” এ পদ্ধতিতে সন্ত্রাসীদের দমনের চেষ্টা করা হলে একদিন এটি সরকারকেই গ্রাস করবে বলে আশঙ্কা করেন তিনি। তাহমিনা রহমান বলেন, আইনের মাধ্যমেই দোষীদের বিচার করতে হবে। একজন নারী দর্শক বলেন, “আগে বিচারের মাধ্যমে আসামির দোষ প্রমাণ করা হোক। তারপর ক্রসফায়ারে দেয়া হোক।” আরেকজন তরুণী বলেন, “অপরাধ দমনে ব্যর্থ হয়েই প্রশাসন বন্দুকযুদ্ধের আশ্রয় নিয়েছে।” অনুষ্ঠানে আরেকজন দর্শকের প্রশ্ন ছিল- তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা কি ভিন্নমত দমনের একটি হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে? উত্তরে এম এম আকাশ বলেন, “হ্যাঁ, এটি ভিন্নমত দমনের হাতিয়ার হতে পারে।
সরকারেরই উচিত নিজেদের সমালোচনা শোনা। এ ধারায় উল্লেখিত বিষয়গুলো অনেক বিস্তৃত। কিসে অপরাধ হবে বা হবে না, সেটি সুনির্দিষ্ট করা উচিত।” তাহমিনা রহমানও তার সঙ্গে একমত প্রকাশ করেন। বিএনপির নেতা মাহবুবুর রহমান বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারা বাতিল করা উচিত। শাজাহান খান বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭
Cutout cialis deflated balls!
ধারার মাধ্যমে আইনের অপব্যবহার
হবে না। মত প্রকাশের স্বাধীনতা থাকবেই। এম এম আকাশ বলেন, অবশ্যই আইনের অপব্যবহার হতে পারে। তাহমিনা রহমান বলেন, “এ ধারা (৫৭) অবশ্যই রিভিউ করা প্রয়োজন।” বিবিসি মিডিয়া অ্যাকশন ও বিবিসি বাংলার যৌথ আয়োজনে পরিচালিত অনুষ্ঠানটি প্রযোজনা করেন ওয়ালিউর রহমান মিরাজ এবং উপস্থাপনা করেন আকবর হোসেন।