কুরআন পুড়লো যুবক!
চাঁদপুর প্রতিনিধিঃ
ইফতারের পর। নামায শেষে পবিত্র কুরআন শরীফ পড়ছিল মা সুফিয়া বেগম। সন্ধ্যায় বাসায় ফিরে যুবক আবু জাফর সোহাগ (৩৫) মায়ের সাথে কথা কটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে মায়ের হাত থেকে কুরআন শরীফ কেড়ে নিয়ে আগুন ধরিয়ে দিল।
শরীর শিউরে উঠা এই লোমহর্ষক ঘটনাটি ১০ জুন বৃহস্পতিবার চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ৩ নং সুবিদপুর ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামের জমাদ্দার বাড়ীতে ঘটে। পাষান্ড এই যুবক জমাদ্দার বাড়ীর প্রবাসী হান্নানের ছেলে।
সোমবার দুপুর উত্তপ্ত গ্রামবাসী লক্ষীপুর চৌরাস্তা এলাকায় সোহাগকে গণধোলাই দিয়েছে। স্থানীয় দোকানদার জসীম উদ্দিন (৪০) ও সাজু (৫০) বলেন, ‘সোমবার জোহরের নামাযের পর এলাকার সব মসজিদ থেকে সোহাগের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলের পর সোহাগকে খুঁজে এনে গণধোলাই দিয়েছে মুসল্লীরা।’
তার আগে রবিবার রাতে ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা শারাফাত উল্যাহ ও ইউপি সদস্য মো. দুলাল হোসেন বিষয়টি নিয়ে বৈঠক বসেন। বৈঠকে আবু জাফর সোহাগকে তওবা করিয়ে হুঁশিয়ারী করে দেন।
জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা শরাফাত উল্ল্যাহ তওবা করানোর বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, এ ধরণের ঘটনার খবর পেয়েছি। আইননুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
পাষান্ড এই যুবকের চাচা ইউপি সদস্য মো. দুলাল হোসেন। তিনি কুরআন পুড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, এ ধরণের জঘণ্য কাজের জন্য আমরা মর্মাহত। গ্রামবাসীদের নিয়ে তার বিচার করা হবে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী জমাদ্দার বাড়ীর শাহআলম (৫০) ও সিরাজুল ইসলাম (৬০)। তাঁরা ঘটনার বিবরণে বলেন, তার মায়ের চিৎকারের পর আমরা এসে কুরআন শরীফের আগুন জ্বলতে দেখেছি। নিভানোর চেষ্টা করেও লাভ হয়নি। আগেই কুরআন শরীফের প্রায় ৭০ শতাংশ পুড়ে গেছে। সোহাগ মা-বাবার অবাধ্য ছেলে। সব সময় নেশাগ্রস্ত অবস্থায় থাকে। মায়ের সাথে প্রায় ঝগড়া করে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার জনৈক বাসিন্দা বলেন, আবু জাফর সোহাগ নেশাগ্রস্ত। সে দুইটি বিয়ে করেছে। দ্বিতীয় স্ত্রীর মামলায় ইতোমধ্যে জেলহাজতে যেতে হয়েছে।
এ বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম বলেন, বিষয়টি শুনেছি। ছেলেটি মানুষিক রোগী বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে।