চাঁদপুরের গ্রামাঞ্চলে দেদারছে মানব ঘাতক ট্রাক্টর চলছে
চাঁদ ডেস্ক্।
জেলা পুলিশ সুপারের নির্শনাকে অমান্য করে গ্রামাঞ্চলের সড়ক গুলোতে দেদারঠে মানব ঘাতক টাক্টর চলাচল করতে
দেখা গেছে। বশেষে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের কঠোর পদক্ষেপ ট্রাক্টর নামক অবৈধ যানবাহনটি চাঁদপুর শহরের সড়কে চলাচল বন্ধ হয়েছে। ‘যমদূত, যন্ত্রদানব’ ইত্যাদি উপাধিতে ভূষিত হওয়া ট্রাক্টর নামে এই যানটি কৃষি কাজের জন্যে আমদানি করা হলেও এটির ইঞ্জিনের সাথে বিশাল সাইজের বডি লাগিয়ে মালামাল পরিবহন কাজে এটি সড়কে চলছে বহু বছর যাবৎ। আর ধ্বংস করছে রাস্তাঘাট এবং ব্যাপক প্রাণহানি ঘটাচ্ছে। তাই সড়কে চলাচল সম্পূর্ণ অবৈধ এই যানটি যেনো কোনোভাবেই সড়কে চলাচল করতে না পারে দীর্ঘদিন জনগণ এ দাবি জানিয়ে আসছে। প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ের সভায় অনেকবার সিদ্ধান্ত হয়েছে সড়কে ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করার ব্যাপারে। কিন্তু ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ হয়নি। অবশেষে সম্প্রতি মন্ত্রী মায়া চৌধুরীর উপস্থিতিতে জেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ ব্যাপারে কঠোর সিদ্ধান্ত এবং বর্তমান পুলিশ সুপার শামসুন্নাহারের কঠোরতায় চাঁদপুর শহরে ট্রাক্টর চলাচল বলতে গেলে বন্ধ হয়েছে।
গত ৬ জুন সোমবার পুলিশ সুপার সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ট্রাক্টর মালিক ও চালকদের নিয়ে সভা করেন। ওই সভায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামানসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তাও উপস্থিত ছিলেন। সেদিনকার সভায় চালক ও মালিকদের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছে পুলিশ সুপার ঘোষণা দেন, আজ (৬ জুন) থেকে চাঁদপুর জেলার কোথাও সড়কে ট্রাক্টর চলবে না। যদি সড়কে ট্রাক্টর পাওয়া যায় তাহলে সাথে সাথেই জব্দ করা হবে এবং যে মালামাল বহন করবে সে মালামালের মালিককে জরিমানা করা হবে।
উল্লেখ্য, ওই সভায় চালক ও মালিকরা স্বীকার করে, সড়কে ট্রাক্টর চলাচলের কোনো বৈধতা নেই। তারপরও তারা নানা যুক্তি দেখিয়ে ট্রাক্টর চালানোর অনুমতি চায়। কিন্তু পুলিশ সুপার অনড় থাকেন। মূলত ওই সভার পর থেকেই চাঁদপুর শহরের রাস্তায় ট্রাক্টর তেমন একটা দেখা যায় নি। ২/১টি নামলেও সেটি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে। চাঁদপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ ওয়ালি উল্লাহ অলি জানান, বুধবার শহর থেকে দুটি ট্রাক্টর মালামালসহ জব্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে একটিকে জরিমানা করে এবং মুচলেকা দিয়ে ছেড়ে দেয়া হয়েছে, আর অপরটি এখনো থানায় রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান জানান, আমাদের তৎপরতা অব্যাহত আছে। কিছু ট্রাক্টর আটক এবং জরিমানা করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আর কোনো ছাড় নেই।
এদিকে চাঁদপুর শহরের ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ হলেও গ্রামগঞ্জে এখনো চলছে। তবে কিছুটা কমে আসছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। ফরিদগঞ্জে ব্রিকফিল্ড বেশি থাকায় সেখানে এখনো ট্রাক্টর চলছে। গ্রামগঞ্জের দিকে নজর দিতে পুলিশ সুপারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সচেতন মহল।
এদিকে চাঁদপুর শহরে ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ঠেলাগাড়ির ব্যবহার বেড়ে গেছে। গতকাল শহরের বেশ কিছু ঠেলাগাড়ি চলাচল করতে দেখা যায়। তবে অভিযোগ রয়েছে, ট্রাক্টর মালিক ও শ্রমিকরা মিলে বিভিন্ন জায়গায় ঠেলাগাড়ি চলাচলে বাধা দিচ্ছে। তারা মালামাল পরিবহনে মালিকদের জিম্মি করে ট্রাক্টরে মাল পরিবহনে বাধ্য করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন সচেতন মহল।