এ কেমন বর্বরতা!
বিশেষ প্রতিনিধিঃ
গৃহকর্তা ও কর্তির বর্বর নির্যাতনের শিকার হয়ে হাসপাতালের বেডে কাতরাচ্ছে আট বছরের শিশু জান্নাতুল ফেরদৌস। শরীরের প্রতিটিস্থানে রয়েছে নির্যাতনের চিহ্ন। মাথায় স্ত্রি দিয়ে ছেকেরও ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। কর্তব্যরত চিকিৎসক বলছেন, একটি ক্ষত শুকিয়েছেতো আরেকটি দগদগে ক্ষতের যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছে সে। এছাড়া কিছুটা মানসিক সমস্যাও দেখা দিয়েছে তার। সুস্থ্য হতে অনেক সময় লাগবে। এদিকে শিশু জান্নাতের মা ফিরোজা বেগম দাবি করেন এ নির্যাতনের যেন সঠিক বিচার হয়।
জানা যায়, পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তৃতীয় জান্নাত। দিনমজুর বাবা ও মা ফিরোজা বেগম অন্যের বাড়িতে কাজ করে যা পায় তা দিয়ে চলে সংসার। গত একবছর আগে অভাব অনটন থেকে মুক্তি মিলবে এমন আশার কথাই শুনিয়েছিলেন গাজীপুরের জয়দেবপুর এলাকার বাসিন্দা ওমর ফারুক ও মনি বেগম। মাধ্যম হয়ে কাজ করেন জান্নাতের খালূ মোস্তফা সরদার। গত এক সপ্তাহ আগে জান্নাতকে তার খালুর কাছে দিয়ে যায় ওমর ফারুক ও মনি বেগম। প্রাথমিক ভাবে খালু মোস্তফা সরদার ঢাকার বাড্ডায় চিকিৎসা করলেও অবস্থা দ্রুত ভালো না হওয়ায় গত বুধবার রাত পৌনে দশটার দিকে চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলার নয়ানী লক্ষ্মীপুর গ্রামের বেড়ি বাঁধের উপরে এনে ছেড়ে দেয়। শিশু জান্নাতের এ অবস্থা ধেকে মোস্তফা সরদারকে স্থানীরা আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে।
যন্ত্রণায় কাতর শিশু জান্নাতুল ফেরদৌসী বলে, আমাকে খাইতে দেয় না। কতায় কতায় মারচে।
জান্নাতের মা ফিরোজা বেগম জানান, গেল একবছর আগে আমার মেয়েকে নিয়ে গেছে। এরপর তার সাথে আর কথা বলতে পারিনি। একবছর পর আমার মাইয়ার কী হাল কইরা দিয়া গেলো ওরা। এমন ভাবে নির্যাতন করচে, পশু পাখিরেও এভাবে মারে না মানুষ। আমি এ নির্যাতনের সঠিক বিচার চাই।
চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার আসিবুল আহসান চৌধুরী জানান, একটি ক্ষত শুকিয়েছেতো আরেকটি দগদগে ক্ষতের যন্ত্রণা বয়ে বেড়াচ্ছে সে। এছাড়া কিছুটা মানসিক সমস্যাও দেখা দিয়েছে তার। সুস্থ্য হতে অনেক সময় লাগবে।
খবর পেয়ে চাঁদপুরের পুলিশ সুপার শামছুন্নাহার উন্নত চিকিৎসার জন্যে বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এসে ভর্তি করান। অবশ্য এর আগে শিশুটিকে হাইমচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করানো হয়েছিল। পুলিশ সুপার জানান, ইতোমধ্যে মনি বেগম ও ওমর ফারুককে ধরতে গাজীপুরে টিম চলে গেছে। ইতোমধ্যে মধ্যস্থতাকারী মোস্তফা সরদারকে আটক করা হয়েছে। আমরা অবশ্যই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি।