গাদ্দাফির স্বৈরশাসনই ভালো ছিল

 In দেশের বাইরে

 

লিবিয়ার বর্তমান বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে অতিষ্ঠ দেশের সাধারণ মানুষ। দেশের সংঘাত-নৈরাজ্য পরিস্থিতিতে তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। এ অরাজক পরস্থিতিতে অনেকে উপহাস করে বলছেন, এর চেয়ে স্বৈরশাসক গাদ্দাফির শাসনামলই ভালো ছিল। লিবিয়ার নেতা মুয়াম্মার গাদ্দাফি নিহত হয়েছেন পাঁচ বছর আগে।

সম্প্রতি বার্তা সংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে লিবিয়ার রাজধানী ত্রিপোলির মানুষদের এ কষ্টের অনুভূতি তুলে ধরা হয়।

লিবিয়ার লোকজনের অভিযোগ, তেলসমৃদ্ধ দেশটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে প্রতিপক্ষগুলো পরস্পর সংঘাতে লিপ্ত। এখানে বিদ্যুৎ, টাকা ও নিত্যপণ্যের অভাব লেগেই আছে।

৪২ বছর বয়সী ফার্মাসিস্ট ফায়জা আল-নাস বলেন, ‘গাদ্দাফি চার দশকের বেশি সময় এ দেশ শাসন করেছেন। বলতে বাধ্য হচ্ছি আগের আমলেই আমাদের জীবন অনেক ভালো ছিল।’

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা ব্যাংকে দাঁড়িয়ে থেকেও এখন নিজের জমানো টাকা তুলতে পারি না। তার মধ্যে আবার সবকিছুর দাম প্রায় তিন গুণ বেড়ে গেছে।’

২০১১ সালে স্বৈরশাসক গাদ্দাফির পতনের পর চরম অরাজক পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে লিবিয়া। এরপর থেকেই দেশটিতে গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব ও সংঘাত মারাত্মক রূপ ধারণ করে। আর এ সুযোগেই সেখানে আস্তানা গড়ে তুলে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)।

গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব মেটাতে ব্যর্থ কেন্দ্রীয় সরকার এখন আইএস দমনে লড়ে যাচ্ছে। এক সময়ের সমৃদ্ধ অর্থনীতি এখন নড়বড়ে। লিবিয়ার সাধারণ মানুষের জীবনের কোনো নিরাপত্তা নেই। যুদ্ধ-বিগ্রহে সেখানে বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। অনেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাঁচার আশায় শরণার্থীর জীবন বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে।

রফিক হারিরি সেন্টার ফর দ্য মিডল ইস্টের লিবীয় বিশ্লেষক মোহাম্মেদ আলজার বলেন, ‘লিবিয়ার অধিবাসীরা মহাসঙ্কটে আছে। তাদের সামনে কোনো ভালো সুযোগ নেই।’

লিবীয় বিশেষজ্ঞ মতিয়া তোয়ালদোর মতে, দেশটিতে শিগগিরই স্থিতিশীলতা আসবে—এমন প্রত্যাশা না করাই ভালো।

তবে লিবিয়ার অনেক বিশ্লেষকই মনে করছেন, স্বৈরশাসক গাদ্দাফির অধীনে চার দশকের বেশি সময় ধরে চলা অপশাসনের পরিণামই আজকে লিবিয়ার দুর্দশা।

Recent Posts

Leave a Comment