দেশে ফিরে বাসায় মায়ের কঙ্কাল পেল ইঞ্জিনিয়ার ছেলে
ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে চাকরি নিয়ে প্রায় ২০ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান ছেলে ঋতুরাজ সাহানি। চার বছর আগে স্বামীকে হারিয়ে একা হয়ে যান মা আশা সাহানি। এরপর প্রায়শই নিজের একাকিত্বের কথা ছেলেকে বলতেন মা। প্রয়োজনে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসতে বলেছিলেন তিনি।
রোববার সকালেই যুক্তরাষ্ট্র থেকে মুম্বাইয়ের লোখণ্ডওয়ালার ওশিয়ারার ‘ওয়েলস কট সোসাইটি’ ফ্ল্যাটে পৌঁছেছিলেন ৪৩ বছরের ঋতুরাজ। ফ্ল্যাটের দরজা ভেঙে বিছানায় দেখলেন মায়ের কঙ্কাল।
ঋতুরাজ ১৯৯৭ সালে একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ফার্মে চাকরি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যান। আর ২০১৩ সালে স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকে ওই বহুতল ভবনের ১০তলায় একা থাকতেন তার মা আশা সাহানি।
ফ্ল্যাটে পৌঁছে ঋতুরাজ দেখেন ফ্ল্যাটের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। বারবার ডাকা সত্ত্বেও কেউ দরজা না খোলায় সন্দেহ হয় ঋতুরাজের। তড়িঘড়ি একজন চাবিওয়ালাকে ডেকে ফ্ল্যাটের তালা ভাঙেন তিনি। শোওয়ার ঘরে গিয়ে দেখেন, বিছানায় পড়ে রয়েছে ৬৩ বছরের মায়ের ‘দেহ’। সেই দেহে অবশ্য মাংসের কণামাত্র অবশিষ্ট ছিল না। শুধুই পড়ে ছিল মায়ের কঙ্কাল।
এরপরেই ওশিয়ারা থানায় খবর দেন ঋতুরাজ। ওশিয়ারা থানার সিনিয়র ইন্সপেক্টর সুভাষ কনভিলকর জানিয়েছেন, সম্ভবত বহু দিন আগেই মারা যান আশা সাহানি। তার শরীর খুবই ক্ষীণকায় থাকায় পচন ধরার কয়েক মাসের মধ্যে শুধু কঙ্কালই অবশিষ্ট ছিল।
দরজার ভেতর থেকে বন্ধ থাকায় একে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই প্রাথমিকভাবে অনুমান পুলিশের।
আশা সাহানির প্রতিবেশীদেরও এনিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাদের দাবি, বন্ধ ফ্ল্যাট থেকে কোনো রকম গন্ধ পাননি তারা।
তবে প্রশ্ন উঠেছে দীর্ঘ দিন ধরে ঋতুরাজ তার মায়ের কোনো ধরনের খোঁজ-খবর নেননি কেন? জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে ঋতুরাজকেও। তা হলে কি মা-ছেলের সম্পর্কে কোনো রকম তিক্ততা ছিল? নাকি চরম ঔদাসিন্যই এর মূল কারণ? অত্যাধুনিক কর্মব্যস্ত জীবনে অতি প্রিয় সম্পর্কগুলোর পরিণতি কি এতটাই শোচনীয়?