চাঁদপুরে বোরোর বাম্পার ফলন; ধান কাটা হবে ২৪টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিনে
অমরেশ দত্ত জয়:
চাঁদপুরে দিগন্ত জুড়ে ইরি-বোরো ধানের সবুজ ও সোনালী রঙে ভরে উঠেছে মাঠ। উড়ছে ধানের সবুজ কেতন। করোনাকে উপেক্ষা করে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শুরু হয়েছে কৃষকের প্রধান আবাদ বোরো ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলার কাজ। আর নতুন ধান কাটার মৌ মৌ গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে কৃষকের আঙিনায়। ২৬শে এপ্রিল রবিবার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ৬২ হাজার হেক্টর। যেখানে উৎপাদন হয়েছে ৬০ হাজার ৮’শ ৩০ হেক্টর। ধানের এই বাম্পার ফলন ঘরে উঠাতে শ্রমিক সংকট অন্তত এই জেলায় নেই। তার উপর করোনা পরিস্থিতির মধ্যে বোরো ধান কাটা, ঝাড়া, প্রক্রিয়াজাত করতে ব্যবহৃত হচ্ছে ২৪টি কম্বাইন হারভেস্টার। যা পূর্বে ১৬টি ছিলো এবং বর্তমানে নতুন করে ৮টি বরাদ্দ এসেছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি অফিসার নরেশ চন্দ্র দাস জানান, এই সংকটময় সময়ে কৃষকের কষ্ট লাঘবে বাংলাদেশ সরকারের উপহার এই কম্বাইন হারভেস্টার। কৃষি মন্ত্রণালয়ের বাজেটের আওতায় ভর্তূকি মূল্যে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে কৃষকরা যন্ত্রটি ক্রয় করছেন। এই যন্ত্র মাত্র ২০ মিনিটে প্রতি ১ বিঘা জমির ধান কাটা হতে শুরু করে মাড়াই, ঝাড়াই করে বস্তা বন্দি করে দেয়। তিনি আরো জানান, জেলায় হাজীগঞ্জে কম্বাইন হারভেস্টার নেই। তবে ফরিদগঞ্জে ২টি এবং বাকি অন্য সব উপজেলায় ১টি করে নতুন করে মোট ৮টি কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন বরাদ্দ এসেছে। কৃষি যন্ত্রপাতিতে উন্নয়ন সহায়তা প্রদান কার্যক্রমের আওতায় জেলাগুলোতে কম্বাইন হারভেষ্টার, রিপার ও রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্রগুলো বরাদ্দ এসেছে। এর মধ্যে পূর্বে রিপার ছিলো ২২টি এবং আর নতুন বরাদ্দ এসেছে ৪টি। তবে কৃষককের আগ্রহ কম থাকায় ২টি দেওয়া হবে এবং অন্য ২টি ফেরত দেওয়া হবে। আর এই কম্বাইন হারভেস্টার ও রিপার ক্রয়ে সরকার ভর্তূকি দিয়েছে ৫০% হারে মোট ১ কোটি ৩লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা। এ দিকে চাঁদপুরের কৃষকদের দাবি, এ বছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই সরকারিভাবে ন্যায্যমূল্যে ধান যেন প্রকৃত কৃষকের কাছ থেকেই কেনা নিশ্চিত করা হয়। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর চাঁদপুরের উপ-পরিচালক মোঃ আবদুর রশীদ জানান, ইতিমধ্যে কম্বাইন হারভেস্টার সদর ও মতলব দক্ষিণ, শাহরাস্তি ও কচুয়ায় হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিগুলো হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। রিপারগুলোও দ্রুত দিয়ে দেওয়া হবে। তিনি রাইস ট্রান্সপ্লান্টার যন্ত্র প্রসঙ্গে জানান, এই যন্ত্রটি মূলত চারা রোপনের কাজে ব্যবহৃত হয়। ৫টি সেবা কেন্দ্রে এই যন্ত্রটি রয়েছে। চাঁদপুরের কচুয়ায় ১জন কৃষকের কাছেও এটি রয়েছে শুনেছি। তবে জেলায় নতুন করে কোন বরাদ্দ আসেনি।