এইচএসসির ফরম পূরণের কিছু টাকা ফেরত পাবে শিক্ষার্থীরা
বিশেষ প্রতিনিধি :
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিলের পর ফরম পূরণের কিছু টাকা শিক্ষার্থীদের ফেরত দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড।
বুধবার (২১ অক্টোবর)আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।
পরীক্ষা কেন্দ্র ফি থেকে কিছু অংশ, ইনভিজিলেটর ফি, ব্যবহারিক পরীক্ষার ফি থেকে শিক্ষার্থীরা অর্থ ফেরত পাবে বলে জানান আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সভাপতি জিয়াউল হক।
করোনা মহামারির কারণে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি গত ৭ অক্টোবর অনলাইনে সংবাদ সম্মেলনে চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণা দেন। এ পরীক্ষা বাতিল করা হলেও জেএসসি-জেডিসি এবং এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।
পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্তের পর শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের কেউ কেউ ফরম পূরণের অর্থ ফেরত দেওয়ার দাবি তোলেন। এর পরই খরচের অবশিষ্ট টাকা ফেরতের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ফলাফল তৈরির জন্য তারা কাজ করছেন জানিয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সভাপতি জিয়াউল হক বলেন, ডিসেম্বরের শেষ দিকে এবারের এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে।
তবে কীভাবে বা কোন পদ্ধতিতে এবং কী পরিমাণ অর্থ শিক্ষার্থীদের হাতে টাকা ফেরত দেওয়া হবে তা নিয়ে তারা কাজ করছেন বলেও জানান।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলাম বলেন, এ নিয়ে ফলাফল কমিটি কাজ করছে। শিক্ষা বোর্ড সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান। করোনাকালে কেউ যাতে বঞ্চিত না হয় সেজন্য কাজ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা রেজিস্ট্রেশনের কাজ করেছি, ফরম ফিলাপের কাজ করেছি, আমরা ফলাফল দেবো, খাতা বানানো হয়েছে, প্রশ্ন তৈরি করেছি। এতে আমাদের টাকা তো খরচ হয়ে গেছে। বাকি যা আছে তা নিয়ে কাজ করছি।
শিক্ষা বোর্ড থেকে জানা যায়, এইচএসসির ফরম পূরণের জন্য গত বছরের নভেম্বরে কেন্দ্র ফি’সহ বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের ২৫০০ টাকা এবং মানবিক ও বাণিজ্য শাখার শিক্ষার্থীদের ১৯৪০ টাকা করে ফি ধরা হয়। এরমধ্যে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের বোর্ড ফি ১৬৯৫ টাকা, মানবিক ও বাণিজ্যে ১৪৯৫ টাকা করে এবং বিজ্ঞানে কেন্দ্র ফি (ব্যবহারিক ফি’সহ) ৮০৫ টাকা ও মানবিক ও বাণিজ্যে ৪৪৫ টাকা করে নেওয়া হয়।
কেন্দ্র ফি থেকে ট্যাগ অফিসারের সম্মানিসহ অন্যান্য ব্যয় নির্বাহ করতে বলা হয়। কিন্তু যাদের ব্যবহারিক বিষয় আছে তাদের টাকার সঙ্গে প্রতিপত্রের জন্য আরও ২৫ টাকা করে দিতে হয়েছে। এছাড়া ব্যবহারিক উত্তরপত্র মূল্যায়নে অভ্যন্তরীণ ও বহিরাগত পরীক্ষকের জন্য পত্র প্রতি ২৫ টাকা করে কেটে নেওয়া হয়।
ফরম পূরণের জন্য একজন নিয়মিত শিক্ষার্থীকে প্রতি পত্রের জন্য ১০০ টাকা, ব্যবহারিক প্রতি পত্রের জন্য ২৫ টাকা, একাডেমিক/ট্রান্সক্রিপ্ট ফি ৫০ টাকা, সনদ ফি ১০০ টাকা, রোভার স্কাউট/গার্লস গাইড ফি ১৫ টাকা এবং জাতীয় শিক্ষা সপ্তাহ ফি ৫ টাকা ধরা হয়েছিল।
করোনাকালে এ টাকা ফেরতের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বাংলানিউজকে বলেন, এটা মহতি উদ্যোগ। এ উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। করোনাকালে যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের এ টাকা অনেক কাজে লাগবে।
তিনি বলেন, যেহেতু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার সম্ভাবনা নেই সে কারণে অনলাইন কার্যক্রম জোরদার করতে হবে। যাদের ইন্টারনেট ও ডিভাইস নেই তাদের সাবসিটি দিতে হবে।