৯০ ভাগ নৌযানে নেই আধুনিক যন্ত্রপাতি

 In চাঁদপুর

স্টাফ রিপোর্টার:

ঘন কুয়াশায় ক্রমশ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে চাঁদপুরের নৌপথ। যদিও এপথে চলাচলকারী প্রায় ৯০ ভাগ যাত্রীবাহী নৌযানে নেই কুয়াশার ভেতরে চলাচল উপযোগী আধুনিক যন্ত্রপাতি। ফলে ঝুঁকি নিয়েই চলছে চাঁদপুরের যাত্রীবাহী নৌযান। এতে করে নৌযান চালকরা প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার আশংকা করছেন।
যদিও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষ বলছেন, চলতি পথে কুয়াশা হলে নৌযান থামিয়ে বাজাতে হবে হুইসেল। কোন ভাবেই ঝুঁকি নিয়ে লঞ্চ চলাচল করা যাবে না। তবে ইতোমধ্যে বিজ্ঞপ্তি জারির মাধ্যমে নিয়ম মেনে নৌযান চালানোর নির্দেশনা দিয়েছি।
চাঁদপুরে ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই শীতের পাশাপাশি ঘন কুয়াশার কারণে দূরের কোনো জিনিসও দেখা যাচ্ছে না। দিনের বেলাতেও সূর্যের আলো অনেক সময় কুয়াশা ভেদ করতে পারছেনা। আর এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়েই চলছে চাঁদপুর-ঢাকা ও দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীবাহী নৌযান।
অপরদিকে প্রতিবছর ঘন কুয়াশার কবলে পড়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় ও চাঁদপুর-ঢাকার মধ্যে চলাচলকারী লঞ্চগুলো বিভিন্ন চরে আটকা পড়ছে। এতে নদীর মাঝে আটকে পরে প্রচন্ড শীতে শিশু, নারী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাসহ বিভিন্ন বয়সের শত-শত যাত্রীর সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এমনকি বিগত বছরগুলোতেও মাঝে মধ্যে ঘটেছে মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে অনেক।
চাঁদপুর লঞ্চঘাটে বোগদাদিয়া-৭ লঞ্চের মাস্টার মো. কলিমুল্লাহ বলেন, প্রতিবছর এই মৌসুমে ঘন কুয়াশার কারনে লঞ্চ চলাচলে সমস্যা হয়। বিশেষ করে রাত্রে চলাচলকারী নৌযানগুলোতে রাডার প্রয়োজন হয়। কিন্তু চাঁদপুরের চলাচল উপযোগী লঞ্চগুলোতে আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই। লঞ্চ চলাচলের জন্য উন্নত মানের যন্ত্রপাতি খুবই প্রয়োজন বলে তিনি জানান।
বেশির ভাগ লঞ্চেই আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় প্রতিবছরই শীত মৌসুমে লঞ্চগুলো দূর্ঘটনায় পড়ছে স্বীকার করে এমভি ঈগল ও ময়ূর-৭ লঞ্চের সুপারভাইজার আলী আজগর হোসেন জানান, নদীতে কুয়াশা বেশি হলে লঞ্চ চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, এতে কোন সন্দেহ নেই। এতে দূর্ঘটনার পাশাপাশি সঠিক সময়ে লঞ্চ গন্তব্যে পৌঁছতে পারে না। ফলে যাত্রী সাধারণ চরম দুর্ভোগে পড়ে। তাই আমিও চাই আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের মাধ্যমে লঞ্চগুলো চলাচল করুক। এতে প্রানহানি ও যাত্রী দূর্ভোগ অনেক কমবে।
চাঁদপুর নৌ থানার ওসি জহিরুল হক বলেন, কুয়াশার মধ্যে লঞ্চ চলাচলে আমরা সবসময়ই সতর্কবার্তা দিয়ে থাকি। এমনকি আধুনিক যন্ত্রপাতি রাখার বিষয়েও আমরা সার্বক্ষনিক তদারকি করছি। কিন্তু এখনো বেশিরভাগ লঞ্চেই তা নেই।
বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুর নদী বন্দর কর্মকর্তা মো. কায়সারুল ইসলাম জানান, প্রতিবছরই ঘন কুয়াশায় লঞ্চ চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটে। তাই বিআইডব্লিউটিএর পক্ষ থেকে সকল লঞ্চ মালিকদের নিয়ম কানুন মেনে লঞ্চ চালানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। যদিও হাতেগোনা কয়েকটি লঞ্চ ছাড়া অধিকাংশ লঞ্চে আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই। তবে পর্যাক্রমে সকল লঞ্চ আধুনিক করার ব্যাপারে আমাদের নজরদারী রয়েছে বলে জানান তিনি।

Recent Posts

Leave a Comment