উৎকণ্ঠার মাঝেও কচি মুখে হাসির ফুলকি!

 In চাঁদপুর

বিল্লাল ঢালী:

করোনায় দীর্ঘদিন বন্ধ স্কুল। ছাত্র-ছাত্রীদের মনে নেই আনন্দ। কেননা প্রায় পুরো বছর জুড়ে তারা বঞ্চিত ছিল ক্লাসের হৈ-হুল্লোড় এবং শিক্ষকদের পরম মমতায় দেওয়া পাঠদান কার্যক্রম থেকে। সর্বদা মহামারী করোনা চোখ রাঙাচ্ছিলো কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের। যদিও অনলাইনে নির্ভর করে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস পরিচালনা করছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। বাসায় থেকে ছাত্রছাত্রীরা উপভোগ করেছে সেসব ক্লাস। তাতে বিন্দুমাত্র ছিলনা বিদ্যালয়ের পাঠদানের আনন্দ। অবশেষে বছর শেষ। নতুন বছরের আগমণ। ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবক প্রতীক্ষার প্রহর গুণছিলেন নতুন শ্রেণির নতুন বইয়ের। পহেলা জানুয়ারি বই উৎসব যেন দূর করে দিলো সবার মন থেকে করোনা নামক ভাইরাসের কথা। উদগ্রীব ছাত্র-ছাত্রী; উদগ্রীব ছিল অভিভাবকরাও দিনটির জন্য। তাইতো বছরের প্রথম দিন বই নিতে আশা ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিভাবকদের চোখে মুখে পাশাপাশি ছিল আনন্দের ছাপ। চাঁদপুর জেলায় ১২শতাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বিতরণ করা হয় নতুন পাঠ্যবই। যদিও করোনার কারণে একদিনে শেষ হয়নি বই বিতরণ কার্যক্রম। চলবে স্কুল চালু হওয়া পর্যন্ত। যে সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবক তাদের সন্তান নিয়ে এখন বই সংগ্রহ করতে আসতে পারেননি তারা স্কুল খোলার পরও সংগ্রহ করতে পারবে নতুন বই।

বই উৎসব কে ঘিরে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকদের পদচারণায় মুখরিত। কারও মাথায় রঙিন টুপি। কেউ স্কুলে এসেছে নতুন পোশাক পড়ে। আজ নতুন বই দেওয়া হবে শুনে শীত উপেক্ষা করে ভিড় জমায় বিদ্যালয়ে। পরে এক যোগে বিতরণ করা হয় নতুন পাঠ্যবই। বই হাতে পেয়ে কেউবা কাভার পৃষ্ঠা উল্টায়। আবার কেউবা দেখে ছবি। সবার চোখে মুখে আনন্দের সীমা নেই। নতুন বই বিতরণের মধ্য দিয়ে সবাই মেতেছে বইয়ের নতুন গন্ধ্যে।
শিক্ষার্থী সুমাইয়া, সানজিদা, তানিয়া, ও তাছমিয়াসহ বেশ কিছু ক্ষুদে শিক্ষার্থী জানায়, অনেকদিন পর স্কুলে এসেছি। ভালো লাগছে। বই পেয়ে আমরা খুবই খুশি। এখন স্কুল খুললে নিয়মিত স্কুলে এসে ক্লাস করবো।
চাঁদপুর হাসান আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ইশমাত আরা সাফি জানান, আমরা সকাল ৯টা থেকে সামাজিক দূরত্ব মেনে বই বিতরণ শুরু করি। বিশেষ করে প্রাক প্রাথমিকের শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা এসেছে বই নিতে। উপরের ক্লাসের শিক্ষার্থীরাই এসে বই নিয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে সুশৃংখল ভাবেই বই বিতরণ করা হয়েছে।
চাঁদপুর সদর উপজেলার সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা মনসুর আহমেদ জানান, আমরা দুই ধাপে বই বিতরণ করেছি। প্রথম ধাপে প্রাক প্রাথমিক, প্রথম, দ্বিতীয় শ্রেণীর বই বিতরণ করা হয়েছে। দুপুর ১২টার পর থেকে তৃতীয় চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণীর বই বিতরণ করা হয়েছে।
চাঁদপুরের বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বই বিতরণের হালচিত্র ঘুরে দেখেছেন চাঁদপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ সাহাব উদ্দীন। তিনি জানান, অল্প কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিশৃংলা হলেও বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই সুন্দর ভাবে বই বিতরণ করেছে। যারা বই পায়নি তারা অন্যান্য যে কোনো দিন প্রতিষ্ঠানের অফিসে এসে বই সংগ্রহ করতে পারবে।

Recent Posts

Leave a Comment