সাকিব-কন্যার যে ‘অনুরোধ’ চোখ ভেজায়
এই ফাইনালে তিনি যদি থাকতেন…
কালও সাকিব আল হাসানের প্রয়োজনীয়তা বাংলাদেশ অনুভব করেছে ক্ষণে ক্ষণে। সাকিব নিজেও কি তীব্র তাড়না অনুভব করেননি, ‘আহ, দুবাইয়ে এশিয়া কাপের ফাইনালে যদি থাকতে পারতাম!’ দল যখন ভারতের সঙ্গে লড়ছে, বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার তখন হাসপাতালের বিছানায় আঙুলের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। তীব্র ব্যথা খেলা থেকে দূরে রাখতে পারেনি তাঁকে। কেবিনের টিভিতে অসহায় চোখে দেখেছেন ফাইনাল। হারের পর আঙুলের সঙ্গে নিশ্চয়ই যন্ত্রণা অনুভব করেছেন হৃদয়েও।
সাকিবকে হাসপাতালে থাকতে হয়েছে আজও । বিকেলে জানা গেল, অস্ত্রোপচার করা বাঁ হাতের ব্যথা আজও কমেনি। কমেনি ফোলাও। অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসকেরা তাই আজ ছাড়েননি সাকিবকে। কাল যদি অবস্থার উন্নতি হয়, মানে ব্যথা আর ফোলা কমে, হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেতে পারেন বাংলাদেশের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। সাকিবকে দেখতে হাসপাতালে পরিবারের লোকজন থেকে শুরু করে সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের ভিড়। যদিও তাঁর কেবিনে দর্শনার্থী যাওয়ার সুযোগ নেই। কাছে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন খুব কাছের মানুষেরাই। সাকিব-কন্যা আলায়না হাসান তো এখন চিকিৎসকদেরও তাঁর বাবার কাছে আসতে দিতে চায় না!
সাকিব ও তাঁর স্ত্রী উম্মে আহমেদ শিশির কেবিনে বাবার কোলঘেঁষা আলায়নার একটা হৃদয়স্পর্শী ছবি পোস্ট করেছেন আজ রাতে। যে ছবি আপনার চোখ ভেজাবে। চোখ ভেজাবে সাকিব-কন্যার চাওয়াটা শুনলেও। সেখানে সাকিব লিখেছেন, ‘সে আমার চোখের আড়াল হতে চায় না। ঢাল হয়ে থাকা আমার মেয়ে চিকিৎসকদেরও কাছে আসতে দিতে চায় না, যাতে তার বাবাকে তাঁরা (চিকিৎসকেরা) ব্যথা না দিতে পারে’!
শিশিরও সাকিবের কথারই প্রতিধ্বনি করেছেন, ‘সে (আলায়না) তাকে (সাকিব) ছাড়তে চায় না। ঢাল হয়ে থাকা এক কন্যা তার বাবার কাছে কিছুতেই কাছে চিকিৎসকদের আসতে দিতে চায় না। সে ভাবছে, চিকিৎসকেরা বুঝি ওর বাবাকে ব্যথা দেবে। তার হৃদয় কাঁদছে, চিকিৎসক থেকে বাবাকে দূরে রাখতে কোলেই ঘুমিয়ে পড়েছে।’
কাল যদি হাসপাতাল থেকে ছাড়াও পান সাকিব, সপ্তাহ দুয়েক তাঁকে থাকতে হবে পুরো বিশ্রামে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ধরার কথা ছিল সাকিবের। কিন্তু সেদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে চোট পাওয়া হাতে তীব্র ব্যথা অনুভব করেন। দেরি না করে ছুটে যান অ্যাপোলো হাসপাতালে। চোট পাওয়া বাঁ হাতের কড়ে আঙুল থেকে সংক্রমণ ধরা পড়ে পরীক্ষায়, দেখা যায় পুঁজ জমে মারাত্মক অবস্থা। পরশু অস্ত্রোপচার করে বের করা হয়েছে পুঁজ। মাস তিনেক মাঠের বাইরে থাকতে হবে সাকিবকে। সংক্রমণটা সারার আগ পর্যন্ত অস্ত্রোপচারও করানো যাবে না। সাকিব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন, আলায়না-শিশিরের মতো এই আশাতেই দিন গুনছে বাংলাদেশের অনেক ক্রিকেটভক্ত।