বোল পাল্টালেন রওশন
ডেস্ক নিউজ, চাঁদনিউজটোয়েন্টিফোর.কমঃ
ঢাকা : জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ আগে মিডিয়ার সামনে বলেছিলেন, ঊনচল্লিশ ধারা অগণতান্ত্রিক, এ ধারা বাতিল করতে হবে। আর প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে বৃহস্পতিবার (১২ মে) বললেন, সংশোধনী আনা প্রয়োজন। এ ধারা প্রয়োগের সময় প্রেসিডিয়ামের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে।
রওশন এরশাদের এই দ্বিমুখী নীতির কারণে বিষ্ময় প্রকাশ করেছেন অনেকেই। তারা বলেছেন, এখন নিজে সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান পদ পেয়েছেন বলেই সবকিছু বেমালুম ভুলে গেছেন।
বৈঠকে রওশন এরশাদ পার্টির কঠোর সমালোচনা করেন বলে সূত্র জানিয়েছে। একাধিক প্রেসিডিয়াম সদস্য বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, রওশন এরশাদ বলেছেন, পার্টিতে নমিনেশন বাণিজ্য হয়। টাকার কাছে যোগ্যতা বিক্রি হয়ে যায়। যোগ্য লোক মনোনয়ন পান না। এতে পার্টি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে।
বৈঠকে পার্টির গঠণতন্ত্রের সংশোধনী প্রস্তাবের নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়। গঠণতন্ত্রে কো-চেয়ারম্যান পদ ছিল না। কিন্তু নতুন করে দু’জন কো-চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টির প্রস্তাব দেওয়া হলে প্রেসিডিয়ামের বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ১৪ মে কাউন্সিলে অনুমোদনের জন্য তোলা হবে।
বহুল সমালোচিত ৩৯ ধারায় দু’একজন সংশোধনী আনার প্রস্তাব দিলেও তা নাকচ হয়েছে। যে কারণে ৩৯ ধারা অবিকৃত থাকছে বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, এই ধারা ব্যবহার করে পার্টির চেয়ারম্যান তার খেয়াল খুশি মতো যখন যা খুশি তাই করছেন। কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে যাকে তাকে বহিস্কার করা হচ্ছে। আবার যাকে তাকে পদায়ন করা হচ্ছে।
৩৯ ধারায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানকে একক ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। চেয়ারম্যানের বিশেষ ক্ষমতা নামে এই ধারায় মতে, ‘চেয়ারম্যান প্রয়োজনবোধে প্রতিটি স্তরের কমিটি গঠন, পুর্নগঠন, বাতিল ও বিলোপ করিতে পারবেন। চেয়ারম্যান জাতীয় পার্টির যেকোনো পদে যেকোনো ব্যক্তিকে নিয়োগ, যেকোনো পদ থেকে যেকোনো ব্যক্তিকে অপসারণ ও যেকোনো ব্যক্তিকে তার স্থলাভিষিক্ত করতে পারবেন। তিনি এই ধারার প্রদত্ত ক্ষমতাবলে পার্টির পার্লামেন্টারি বোর্ডের দায়িত্ব গ্রহণ ও পালন করতে পারবেন। তবে শর্ত থাকে যে, তাকে প্রদত্ত উপরোক্ত ক্ষমতাগুলো প্রয়োগের সময় তিনি প্রেসিডিয়ামের সঙ্গে আলোচনা করবেন’।
ঊনচল্লিশ ধারাকে অসংবিধানিক মনে করেন অনেকেই। তাদের সঙ্গে একমত নন পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও গঠণতন্ত্র সংশোধন উপ-কমিটির আহবায়ক জিএম কাদের। তিনি বাংলানিউজকে বলেছেন, ‘এ ধারাটি কোনোভাবেই অগণতান্ত্রিক বলা যাবে না। কারণ, কাউন্সিলে ভোটের মাধ্যমে এ ধারাটি অনুমোদিত হয়েছে’।
জিএম কাদের বলেন, ‘দেখেন, জরুরি অবস্থা জারি হলে সংবিধানের কিছু ধারা রহিত হয়। তাহলে কি জরুরি অবস্থাকে অসংবিধানিক বলা যাবে? যাবে না’।
পার্টি চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সভাপতিত্বে প্রেসিডিয়ামের সভায় আরও বক্তব্য দেন প্রেসিডিয়াম সদস্য জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, গোলাম হাবিব দুলাল, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন খান, অ্যাডভোকেট শেখ সিরাজুল ইসলাম প্রমুখ।