চাঁদপুরে পাইকদী জননী ব্রিককনস্ট্রাকশনের মালিক উধাও

 In চাঁদপুর, প্রধান খবর, শীর্ষ খবর



শাহরিয়ার খাঁন কেশিক ॥

চাঁদপুর সদর উপজেলার শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের পাইকদী খেয়াঘাট সংলগ্ন মেসার্স জননী ব্রিক কনস্ট্রাকশন এর সত্ত্বাধিকারী কেফায়েত উল্যাহ ঢালী (সানু ঢালী) ক্রেতাদের প্রায় কোটি টাকা নিয়ে এক মাসেরও অধিক সময় ধরে লাপাত্তা। ক্রেতাদের পাওনা দিতে না পেরে মোবাইল ফোনও বন্ধ রেখেছেন তিনি। নির্ধারিত সময়ে ক্রেতাগণ ইট না পাওয়ায় প্রতিদিন এসে ভীড় জমাচ্ছে ইট ভাটায়। কিন্তু কোন দায়িত্বশীল লোক না পাওয়ায় প্রত্যেক ক্রেতাই ফিরে যেতে হচ্ছে খালি হাতে। না পাচ্ছে ইট না পাচ্ছে তাদের প্রদেয় লাখ লাখ টাকা।

সরেজমিন খোঁজ নিয়ে কথা হয় ইটভাটার ম্যানেজার দেলোয়ার হোসেনের সাথে। তিনি জানান, ইট দেওয়ার জন্য সানু ঢালী মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছেন তা সত্য। কিন্তু লেনদেন তিনি করেননি। চাঁদপুরে সানু ঢালীর বাসায় এইসব টাকার লেন দেন হয়েছে। তিনি শুধু ইট সরবরাহ করার দায়িত্ব পালন করেছেন। এর বেশী কিছুই জানেননি। বর্তমান এই পরিস্থিতির কারণে তিনি ইট ভাটায়ও তেমন যায় না।

ইট ভাটার আরেক সহকারী ম্যানেজার মজিবুল হক মিজি জানান, আমরা নাম মাত্র দায়িত্ব পালন করছি। ক্রয়-বিক্রয় সকল লেন-দেনই করেছেন মালিক সানু ঢালী। তিনি অসুস্থ্য থাকায় এখন ঢাকায় রয়েছেন।

সাংবাদিকদের দেখে তাৎক্ষনিক ভীড় জমায় কিছু পাওনাদার। এদের মধ্যে কাজল তপাদার জানান, সানু ঢালী যে হারে মানুষের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, ইট উৎপাদন করতে পারলে এই সময় পর্যন্ত সকল পাওনাদার তাদের ইট বুঝে পেতেন। কিন্তু ২ রাউন্ড ইট পোড়ানোর পর হঠাৎ তার শ্রমিকরা চলে যায়। এরপর থেকে তিনিও আসেননি

ইট ভাটায়। এই অবস্থায় পাওনাদার লোকজন প্রতিদিনই ইট ভাটায় আসছেন। এক পাওনাদার চাঁদপুর গোয়েন্দা পুলিশে অভিযোগ দিয়ে সরেজমিন এসে পরিস্থিতি দেখে ফিরে যান।

এদিকে স্থানীয় কয়েকজন পাওনাদার মালিকের অনপুস্থিতিতে ইট ভাটায় বর্তমানে সংরক্ষিত প্রায় পৌনে ২ লক্ষ ইটা রাঁতের আধাঁরে, দিনের বেলায় নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। লাভের আশা করে অনেকেই সানু ঢালীকে ১০/২০লাখ করে টাকা দিয়েছেন। ইট ভাটায় থাকা ইটগুলো জোরপূর্বক নিয়ে যাওয়া হলে সাধারণ পাওনাদাররা ইট ও টাকা সব কিছু থেকেই বঞ্চিত হবে।

উপস্থিত পাওনাদারদের তথ্য মতে স্থানীয় পাইকদী গ্রামের বাসিন্দা আলীম পাটওয়ারী পাবেন ১৬ লাখ টাকা, মিলন পাটওয়ারী পাবে ৬০ হাজার ইট, আহসান হাবীব পাবে ১লক্ষ ইট, বাবর পাটওয়ারী পাবে ৭০ হাজার ইট, শরীফ পাটওয়ারী পাবে ৭০ হাজার ইট, আবদুল হক পাটওয়ারী পাবে ৭০ হাজার ইট। এছাড়া উপজেলা বিভিন্ন এলাকার মানুষ বিভিন্ন অংকে ইটের জন্য অগ্রিম টাকা দিয়েছেন। সব মিলিয়ে প্রায় ১ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন সানু ঢালী।

জননী ব্রিক কনস্ট্রাকশনের ম্যানেজার দেলোয়ার আরো জানায়, স্থানীয়দের টাকা পয়সার লেনদেন করেছেন সানু ঢালীর বাগিনা মনির হোসেন (কুট্টু)। সেও বর্তমানে মোবাইল ফোন বন্ধ রেখে গত কয়েকমাস পলাতক রয়েছেন। এই বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য সানু ঢালীর বহু খোঁজ করেও পাওয়া যায়নি।

ভুক্তভোগী এসব পাওনাদারদের দাবী তাদের পাওনা বুঝে পেতে সানু ঢালীকে উপস্থিত করানো হউক। আর ইট ভাটায় যেসব ইট বর্তমানে রয়েছে তা সংরক্ষণে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

Recent Posts

Leave a Comment