চাঁদপুরে বিদ্যুতের ভেল্কিবাজিতে দিশেহারা মানুষ
এম এ লতিফ, চাঁদপুর
তীব্র গরমের সাথে পাল্লা দিয়ে চাঁদপুরে বিদ্যুতের ভেল্কিবাজিতে দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। একদিকে ঝাঁঝালো রোদ আর তীব্র খরতাপে যেমনি জনজীবনে নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি। অপরদিকে বিদ্যুতের আসা যাওয়ায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন যাত্রা। তবে বিদ্যুতের এ লোডশেডিংয়ের যাতাকলে চরম ব্যাঘাত ঘটছে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাঠদান। এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে চাঁদপুরে বিদ্যুতের এহেন পরিস্থিতির কারনে ব্যবসা বানিজ্যেও নেমেছে ধস। ফলে বাড়ছে বেকারত্বের সংখ্যা, ঘটছে অপরাধ প্রবনতা।
সারা দেশের ন্যায় চাঁদপুরেও এইচএসসি পরীক্ষার পাশাপাশি চলছে বিভিন্ন বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম সাময়িক পরীক্ষা। অথচ সকাল থেকে রাত অবধি পর্যন্ত বিদ্যুতের ভেল্কিবাজিতে স্কুল-কলেজ পড়–য়া শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বিঘœতা ঘটছে। ফলে শিকাষার্থীদের মাঝে দেখা দিয়েছে অমনোযোগীতা। এ কারনে তাদের পড়া-লেখা নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন অধিকাংশ অভিভাবক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চাঁদপুর শহর থেকে শুরু করে পুরো জেলায় দিনে রাতে কমপক্ষে ৫/৭ বার চলছে লোডশেডিং। শহরে ১ বার গেলে কমপক্ষে ১ থেকে দেড় ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। আর গ্রামাঞ্চল তথা পল্লীবিদ্যুতের এলাকায় একবার গেলে ফিরে আসতে কয়েক ঘন্টা সময় লাগে। এতে করে চাঁদপুরের ব্যবসায়ী ও সাধারণ গ্রাহক জেনারেটরের উপর নির্ভর হয়ে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে চাঁদপুর শহরের শামিমা আক্তার ও রোকসানা আক্তার নামে দু’গৃহিনী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের ছেলে মেয়েদের এখন পরীক্ষা চলছে। কিন্তু শহরে বাস করেও ২/১ ঘন্টা পর পরই বিদ্যুৎ থাকে না। বিদ্যুৎ না থাকলে ছেলে-মেয়েরা গরমে পড়তে চায় না। ফলে তাদের পড়ালেখায় চরম ব্যাঘাত ঘটছে। আর এ অবস্থা অপরিবর্তিত থাকলে তাদের পরীক্ষার ফলাফল ভাল হওয়ার সম্ভাবনা দেখছি না। তাই অতিশীঘ্রই সমস্যার সমাধান করে গ্রাহকের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করার দাবি জানায় তারা।
চাঁদপুর পিডিবি অফিস সুত্রে জানা যায়, চাঁদপুরে পিডিবি’র ৪৩ হাজার গ্রাহক রয়েছে। এসব গ্রাহকের চাহিদা মেটাতে প্রতিদিন ২২ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ প্রয়োজন। কিন্তু চাহিদার বিপরীতে পাওয়া যাচ্ছে ৮ থেকে ১৩ মেঘাওয়াট। যে কারনে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন এলাকাতে লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। এছাড়াও চাঁদপুর পল্লীবিদ্যুতের ৯৬ মেঘাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদা রয়েছে। কিন্তু তাদের চাহিদার অনেক কম পাওয়ায় এবং সেচ প্রকল্পে বিদ্যুৎ ব্যবহার হওয়ায় গ্রাহকরা বিদ্যুৎ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চাঁদপুর পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী আ ফ ম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বর্তমানে তীব্র গরম চলছে। এ মৌসুমে গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সুবিধা প্রদানে আমরা নিরলস ভাবে চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, শুধু লোডশেডিংয়েই বিদ্যুৎ বন্ধ থাকছে না। অনেক সময় ফিকুয়েন্সীর কারনে জাতীয় লোড ডেসপার্ড সেন্টার থেকেও বন্ধ করে দেয়া হয়। এছাড়াও ট্রান্সফরমার বিকল, ফিডারের সমস্যা ও যান্ত্রিক ক্রুটির কারনেও বিদ্যুৎ বন্ধ রাখতে হচ্ছে। অন্যথায় বিদ্যুৎপৃষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।