কুমিল্লায় পরকীয়ার জেরে খুন, ৭ মাস পর ডোবা থেকে লাশ উদ্ধার
কুমিল্লার মুরাদনগরে সাড়ে সাত মাস পর সৌদি প্রবাসী ময়নাল হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার দুপুরে গোয়েন্দা পুলিশ জেলার মুরাদনগর উপজেলার আন্দিকোট ইউনিয়নের জাড্ডা হাহাতি খাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অতিরিক্ত) আলী আশ্রাফ ভূইয়া, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মো. আলী আজগর, ডিবির ওসি একেএম মঞ্জুর আলম, বাঙ্গরা থানার ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই সহিদুল ইসলাম। মরদেহ উদ্ধারের সময় ওই প্রবাসীর ২ ঘাতক বদি ডাকাত ও বাবু মিয়া সেখানে উপস্থিত রাখা হয়।মূলত এই দুই হত্যাকারী লাশ গুমের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মরদেহের উদ্ধারের খবর শুনে আশপাশের এলাকার কয়েক হাজার নারী-পুরুষ ঘটনাস্থলে সমবেত হয়। মরদেহ দেখতে এসে ময়নালের মা ও বোনসহ স্বজনরা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবির এসআই সহিদুল ইসলাম জানান, গত ১২ জুন কসবা থেকে প্রবাসী ময়নালের ঘাতক মযরাদনগর উপজেলার জাড্ডা গ্রামের সোনা মিয়া পুত্র বদি আলম ওরফে বদি ডাকাত (৩৫) এবং একই উপজেলার সোনারামপুর গ্রামের চারু মিয়ার পুত্র বাবু মিয়াকে (২৫) গ্রেফতারের পরই তারা লাশ গুম করার স্থানটি সনাক্ত করা হয়। পরে মরদেহ উদ্ধারে রোববার আদালতে আবেদন করলে আদালত মরদেহ উদ্ধার ও ময়নাতদন্ত করতে ফরেনসিক বিভাগকে ৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দেয়।
এসআই সহিদুল ইসলাম জানান, গত বছরের ৩০ অক্টোবর ময়নাল হোসেন দেশে আসেন। তিনি বিদেশ থেকে পাঠানো অর্থের হিসাব চান স্ত্রীর কাছে। এ ছাড়া স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ দেখা দেয়। এতে তার স্ত্রী ক্ষিপ্ত হয়ে ৫ লাখ টাকার বিনিময়ে ছয় সন্ত্রাসীর সাথে চুক্তি করে। পরিকল্পনা মোতাবেক গত বছরের ১ নভেম্বর রাতে সন্ত্রাসীরা কৌশলে ওই প্রবাসীকে তার শ্বশুর বাড়ি থেকে উঠিয়ে নিয়ে বাড়ির অদূরে খাল পাড়ে হত্যা করে লাশ সেখানে ফেলে দেয়। গত ৮ মার্চ কুমিল্লা নগরী থেকে মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির এসআই শাহ কামাল আকন্দ নিহতের স্ত্রী তাছলিমাকে গ্রেফতার করার পরই তার স্বীকারোক্তিতে বেড়িয়ে আসে হত্যার চাঞ্চল্যকর কাহিনী। পরদিন গ্রেফতার করা হয় তাছলিমার প্রেমিক শরিফুল ইসলামকে।
গত ১০ মার্চ নিহতের স্ত্রী তাছলিমা আক্তার হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িতদের নাম প্রকাশ করে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার পরই ডিবি পুলিশ অপর আসামিদের গ্রেফতারে অভিযানে নামে। বর্তমানে এই মামলায় কারাগারে আটক রয়েছে ওই প্রবাসী স্ত্রী তাছলিমা আক্তার, তার নিকটাত্বীয় জাকির, জুয়েল ও পরকীয়া প্রেমিক শরিফুল ইসলাম। সর্বশেষ ১২ জুন গভীর রাতে বি-বাড়িয়া জেলার কসবা থেকে গ্রেফতার করা হয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বদি আলম ও বাবু মিয়া।