ফরিদগঞ্জে ওসিসহ দুই পুলিশ কর্মকর্তার অপসারণের দাবিতে মুক্তিযোদ্ধাদের থানা অবরোধ ও বিক্ষোভ মিছিল
ঘটনার শিকার উপজেলার পাইকপাড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের বালিচাটিয়া গ্রামের অধিবাসী মুক্তিযোদ্ধা আলী আকবর পাটওয়ারী জানান, তার একমাত্র পুত্র মমিন হোসেন মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবী। এছাড়া সে থানার দালালি করে। নেশার টাকার জন্যে সে প্রায়ই তার সাথে খারাপ আচরণ করতো। সর্বশেষ গত ১০ সেপ্টেম্বর তিনি বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে ও তার নাতিকে মারার চেষ্টা করে। এই বিষয়ে ফরিদগঞ্জ থানায় প্রথমে ওসি বরাবর ও পরে ইউএনওর মাধ্যমে দ্বিতীয় দফায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে এএসআই বিল্লাল ও কেমং চাকমা গত ৩০ সেপ্টেম্বর ও ২ অক্টোবর মমিন হোসেনকে ২বার আটক করে আনলেও ওসির নির্দেশে তাকে ছেড়ে দেয়। আলী আকবর জানান, ছাড়া পেয়ে তার ছেলে তার উপর আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। সে ওসির নাম ভাঙ্গিয়ে তাকে মেরে ফেলে বস্তায় করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়।
এদিকে উক্ত বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার শহীদুল্লা তপাদার থানায় ওসির সাথে কথা বলতে গেলে তিনি তার সাথে অশোভন আচরণ করেন বলে কমান্ডার অভিযোগ করেন।
এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা বুধবার সকালে বিক্ষোভ সমাবেশ এবং থানা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। ঘটনা জানতে পেরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবদিন থানার ওসি ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করেন। সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা সরাসরি ওসির বিরুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগ করেন। বৈঠক ফলপ্রসূ না হওয়ায় কয়েকশ’ মুক্তিযোদ্ধা দুপুরে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে থানা ঘেরাও করে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করেন। এ সময় উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার সহিদউল্যা তপাদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সহকারী কমান্ডার মহসীন পাঠান, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডার শাহাদাত হোসেন সাবু পাটওয়ারী, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার সারোয়ার জামাল, সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আলী আহাম্মেদ, আঃ জলিল, দেলোয়ার পাটওয়ারীসহ বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা।
ঘটনা শুনে চাঁদপুর সহকারী পুলিশ সুপার (সার্কেল) নজরুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবদিন, পৌর মেয়র মাহফুজুল হক ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। এ সময় মুক্তিযোদ্ধারা ওসির অপসারণের দাবিতে অনড় থেকে তাদের আলোচনার আহ্বানে সাড়া দিয়ে উপজেলা পরিষদে বৈঠকে বসেন। তবে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের অবস্থান ধর্মঘট অব্যাহত রাখে।
এ ব্যাপারে ফরিদগঞ্জ থানার ওসি আবুল কালাম জানান, তিনি মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমান্ডারের সাথে অশোভন আচরণ করেন নি। তাছাড়া মুক্তিযোদ্ধা বাবা ছেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা ধর্তব্য অপরাধ নয়।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জয়নাল আবদিন জানান, সমস্যা সমাধানের জন্য প্রথম দফা বৈঠক ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় দফা বৈঠকে সমস্যার সমাধান হয়েছে।