কিম বলেন, আমরা বাংলাদেশের উন্নয়নের সঙ্গেই আছি। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা, অবকাঠামো উন্নয়নসহ বিভিন্ন খাতে আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত আছে।
তিনি বলেন, দারিদ্র বিমোচনে বাংলাদেশের অগ্রগতি ‘অসাধারণ’। এ কারণেই এবারের দারিদ্র্য বিমোচন দিবস বাংলাদেশ পালন করতে এসেছি।
বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, আগামী দুই বছরে শিশু পুষ্টি খাতে বাংলাদেশকে বর্তমানের চেয়েও ১০০ কোটি ডলার বেশি সহায়তা দেবে বিশ্ব ব্যাংক। আগামীতে বিশ্ব ব্যাংকের বিভিন্ন দেশকে দেওয়া সহায়তার তহবিল ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে। এরই অংশ হিসেবে বাংলাদেশও আরও বেশি সহায়তা পাবে। আগামীতে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা সহায়তার মূল উদ্দেশ্য হবে।
সব ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে জানিয়ে বিশ্ব ব্যাংক প্রেসিডেন্ট বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং নারী কর্মসংস্থানের বিষয়টিতে বাংলাদেশকে আরও গুরুত্ব দিতে হবে।
জিম ইয়ং কিম বলেন, আগামী তিন বছরে বিশ্ব ব্যাংকের সহযোগী সংস্থা আইডা বাংলাদেশকে ৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তা দেবে। মানি মার্কেট থেকে আইডা টাকা সংগ্রহ করতে পারলে বাংলাদেশকে আরও ৫০ শতাংশ বা আড়াই বিলিয়ন অতিরিক্ত সহায়তা দিতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে আইডার শর্ত কিছুটা কঠিন হলেও হতে পারে।
বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের বিষয়টিকে বিশ্ব ব্যাংক কীভাবে নিয়েছে? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের উত্তরে কিম বলেন, পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের যে অর্থায়ন করার কথা ছিল সেই টাকা অন্য প্রকল্পে দেওয়া হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, এটি বাংলাদেশে তার (কিম) প্রথম সফর। বিশ্ব ব্যাংক আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বাংলাদেশের যোগাযোগসহ সব খাতেই বিশ্ব ব্যাংক সহায়তা দিয়ে থাকে। পদ্মা সেতুতে বিশ্ব ব্যাংকের যে তহবিল সহায়তা দেওয়ার কথা ছিল তারা অন্যান্য প্রকল্পে সেটি দিয়েছে। আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ দরিদ্রের হার শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনা হবে, তা বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্টকে জানানো হয়েছে।
তিন বছরের প্যাকেজে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিসটেন্স (আইডিএ) হিসেবে বাংলাদেশকে ঋণ দিয়ে থাকে বিশ্ব ব্যাংক। এর অংশ হিসেবে গত ২০১৫-১৬ অর্থবছরে বাংলাদেশকে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয় বিশ্ব ব্যাংক। তবে শেষ পর্যন্ত ১ দশমিক ১৬ বিলিয়ন ডলার ছাড় করে।
বর্তমানে আইডিএ প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হবে আগামী অর্থবছরে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাংলাদেশের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের এই স্বল্প সুদের ঋণ-সহায়তার পরিমাণ এখনকার তুলনায় বাড়ানো হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন কিম।
তিন দিনের সফরে রোববার ঢাকায় এসেছেন বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিম। দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য ও বিমোচনের কৌশল সরেজমিনে দেখতেই বাংলাদেশে এসেছেন তিনি।
বিশ্ব ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট জিম ইয়ং কিমের সঙ্গে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট এনেডডিকসন এবং বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্ব ব্যাংকের প্রধান চিমিয়াও ফান। বাংলাদেশের পক্ষে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অর্থপ্রতিমন্ত্রী এমএ মান্নান, বিশ্বব্যাংকে নিযুক্ত বাংলাদেশের বিকল্প নির্বাহী পরিচালক মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, ইআরডির সিনিয়র সচিব মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ এবং অর্থবিভাগের অতিরিক্ত সচিব জালাল উদ্দিন আহমেদ।