১০ টাকা কেজি দরে চাল পাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতার স্বজনরা!

 In লিড নিউজ

১০ টাকা কেজি দরে চাল পাচ্ছেন আওয়ামী লীগ নেতার স্বজনরা

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীদের প্রভাবের কারণে ১০ টাকা কেজি দরে চাল গরিবদের মাঝে বিক্রি না হয়ে চলে যাচ্ছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের স্বজনদের কাছে। এছাড়া পরিমাপে কারচুপি, তালিকাতে নাম থাকলেও চাল প্রদান ও তদারকির অভাবসহ দেখা গেছে নানা অব্যবস্থাপনার চিত্র।

 

সরকারি নিয়মানুযায়ী হতদরিদ্র পরিবারের তালিকা প্রস্তুতের দায়িত্ব ইউপি চেয়ারম্যান ও একজন সরকারি কর্মকর্তার নেতৃত্বে গঠিত ইউনিয়ন কমিটির। তবে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। তালিকা প্রস্তুত করছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্পাদকের নেতৃত্বে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগণ। স্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের কারণে দুর্নীতি ও অনিয়মের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে পারছে না তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা প্রশাসন ও খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তারা। ফলে দলীয় নেতাকর্মীদের স্বজনরা তালিকাভুক্ত হয়েছে। এতে করে হত দরিদ্র যাদের জন্য এই কার্যক্রম তারা বঞ্চিত হচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক মেম্বার ও টেংগারচর ইউনিয়নের উত্তর শাহাপুর গ্রামের এক হতদরিদ্র জানান, যেই তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে তার মধ্যে স্থানীয় জন প্রতিনিধিদের স্বজনদের নাম দেওয়া হয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতার সাদা কাগজে স্বাক্ষর দেখিয়ে দেওয়া হচ্ছে চাল। বেশকিছু ডিলার কেন্দ্রে মাপে কম দিয়ে অবশিষ্ট চাল খাদ্য অধিদপ্তরের সিল সংযুক্ত বস্তা থেকে অন্য বস্তায় সরিয়ে নিয়ে বাজারে বিক্রি করছে। একাধিক কেন্দ্রে ডিজিটাল মেশিনের পরিবর্তে চাল বিক্রি হচ্ছে বালতি দিয়ে।

টেংগারচর ইউনিয়নের সামছুল হকের স্ত্রী আছমা টেংগারচর ইউনিয়নের ডিলার মো. খবির আহম্মদ খানের কেন্দ্রে হাতে লিখা একটি টোকেন ডিলারকে দেখিয়ে ৩০ কেজি চাল দিতে বলেন। চাল ক্রয়ের জন্য ছবিসহ কার্ড পেয়েছেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মেম্বার আতাউর আমাকে এ কাগজ দিয়ে বলেছেন এটা দেখালে চাল নেওয়া যাবে।

মেম্বার আতাউরের সঙ্গে ফোনে কথা বললে তিনি জানান, তিনি এই ব্যাপারে অবগত নন। তার কাছে কেউ চালের জন্য সুপারিশ করতে আসলে তিনি নিজ থেকে সাহায্য করে দেন। তার নাম ভাঙ্গিয়ে যদি কেউ এই রকম করে তাহলে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।

ওজনে কম দেওয়া প্রসঙ্গে ডিলার মো. খবির আহম্মদ জানান, সেপ্টেম্বর মাসে ৬০০ কার্ডের জায়গায় ৫০০ কার্ডের চাল তিনি পেয়েছেন। তিনি ১৮ টন চালের ডিউ কাটিয়েছেন। প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি চাল লেখা থাকলেও চাল রয়েছে ৪৮ কেজি। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কম দেয়া হচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. সোহরাব হোসেন জানান, অনিয়মের অভিযোগ কোথাও পাওয়া যায়নি। সেপ্টেম্বর মাসের ডিউ থেকে কোনো চাল ফেরত আসেনি। কেউ অভিযোগ করলেই অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে। আগামীতে ত্রুটিমুক্ত তালিকা প্রণয়ন ও অন্যান্য ভুলত্রুটি এড়িয়ে কিভাবে নীতিমালা অনুসরণ করে চাল বিতরণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা যায়, সে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

Recent Posts

Leave a Comment