স্ত্রীর মর্যাদা পেতে প্রেমিকের বাড়িতে…
সংবাদদাতা, টাঙ্গাইল:
বিয়ের প্রলোভন ও প্রেমের ফাঁদে ফেলে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার পাথরাইল ইউনিয়নের এক এনজিও কর্মীকে দেড় বছর ধরে ধর্ষণ করে আসছিলেন হাবিব (৩২) নামের এক লম্পট যুবক। ওই যুবক ১ লাখ ৮০ হাজার টাকাও হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ এনজিও কর্মী ওই নারীর। শেষে বিয়ের দাবিতে ছয়দিন ধরে ছেলের বাড়িতে অবস্থান করছেন ওই নারী।
প্রতারক হাবিব পলাতক থাকলেও তার বিরুদ্ধে দেলদুয়ার থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন প্রতারণার শিকার এনজিও কর্মী (২৬)। এ ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযুক্ত হাবিব পাথরাইল গ্রামের জোহের মিয়ার ছেলে।
নির্যাতনের শিকার ওই এনজিও কর্মী জাগো নিউজকে বলেন, ‘আমার মা মারা গেছেন অনেক আগেই। বাবা আরেকটি বিয়ে করে ঢাকায় থাকেন। হতদরিদ্র দাদা-দাদি আমাকে ভরণ-পোষণ করছেন। আমি পেটের দায়ে কয়েক বছর ধরে স্থানীয় একটি এনজিওতে কাজ করছি। দারিদ্র্যতা ও সরলতার সুযোগ নিয়ে গত দুই বছর ধরে হাবিব আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ে করবে বলে আমার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে। এ কারণে আমরা বিভিন্ন হোটেলেও রাতযাপন করেছি।
আমি সাধারণ ডায়েরি করেছি বলে হাবিব আমাকে ভুলিয়ে ভালিয়ে নির্জন একটি স্থানে নিয়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে হত্যার চেষ্টা করে। পরে স্থানীয়রা টের পেয়ে আমাকে সেখান থেকে উদ্ধার করে। পরে এলাকার সাধারণ মানুষ, মাতুব্বর ও মেম্বারের কথায় হাবিব বিয়ে করতে রাজি হওয়ায় আমি স্থানীয় মাতুব্বরদের নিয়ে তার বাড়ি চলে আসি। কিন্তু হাবিব আমাকে বাড়িতে রেখেই পালিয়ে যায়। এরপর গোপনে রাতে এসে আমাকে মারধর করে আবার পালিয়ে যায়।
তিনি বলেন, আমি কোনো অর্থ জরিমানা নয় বরং হাবিবের স্ত্রী হিসেবে মর্যাদা পেতে চাই। অন্যথায় আত্মহত্যা করা ছাড়া আমার কোনো বিকল্প পথ নেই।
এদিকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, লম্পট হাবিব একজন সুদ ব্যবসায়ী। সুদের ফাঁদে ফেলে অনেককেই সে পথের ফকির বানিয়েছে। সময় মতো টাকা না দিলে সে গ্রাহকদের মারধর করে। নারী গ্রাহকরা টাকা দিতে না পারলে তাদের অবৈধ কাজে লিপ্ত করতে বাধ্য করে। হাবিব কৌশলে এর আগেও তিনটি বিয়ে করেছে।
হাবিবের তিন স্ত্রীর মধ্যে এক স্ত্রী থাকেন নাগরপুর উপজেলায় আরেকজন তার বাড়িতেই। অপর একজনকে কয়েক বছর আগেই তালাক দিয়েছেন। স্থানীয়রা তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন, যাতে আর কোনো নারীকে হাবিবের লালসার শিকার হতে না হয়।
অন্যদিকে হাবিবের বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তার বাবা জোহের মিয়া জানান, আমার ছেলে আমাদের ভাত কাপড় দেয় না। আমি তার ব্যাপারে কোনো কথা বলব না। আমাকে কোনো প্রশ্ন করবেন না।
ঘটনার সতত্য স্বীকার করে ইউপি সদস্য রশিদ মিয়া জানান, বিয়ের দাবিতে মেয়েটি গত কয়েক দিন ধরে হাবিবের বাড়িতে অবস্থান করছে। হাবিব অত্যন্ত বাজে একটা ছেলে। সে কারও কথা শোনে না। আমি বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি কিন্তু তারা মানেননি।
এ ব্যাপারে দেলদুয়ার থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আনিছুর রহমান জানান, ওইদিন আটিয়া ইউনিয়নের ভুরভুরিয়া গ্রামে জনতার হাতে আটক হওয়ার পর স্থানীয়রা খবর দিলে আমি ঘটনাস্থলে যাই। পরে দুপক্ষের মাতুব্বররা বিষয়টি নিয়ে এলাকায় বসে সমাধানের আশ্বাস দিলে আমি তাদের জিম্মায় দুজনকে পাঠিয়ে দেই। এরপর কোনো পক্ষই আর আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি