স্টাইলিশ হতে চান?
খরচ করুন জুতায়
অনেকেই প্রথম দেখায় খেয়াল করে পায়ের দিকে। তাই চেহারা সুন্দর রাখার পাশাপাশি জুতাও চকচকে রাখা দরকার। আপনি হয়তো একটা ভাইভা বোর্ডে দামি স্যুটের সঙ্গে সাদামাটা জুতা বেছে নিলেন, পুরো সাজটাই ভেস্তে যাবে। সংগ্রহ থেকে জুতা পরার আগে সেটা ঠিকমতো পলিশ করে নিন। সম্ভব হলে ভালো মানের জুতা সংগ্রহে রাখুন। কারণ, এক জোড়া জুতা আপনার স্টাইলের অন্য অনেক দিকের খুঁত ঢেকে দিতে পারে।
চুলে বিশেষ নজর
ছেলেদের স্টাইলে চুল একটি বিশেষ দিক। পুরুষের চুলের স্টাইল সহজেই বদলে দিতে পারে তার পুরো লুক। তার মানে এই নয় যে আপনাকে ঘন ঘন চুল ছাঁটতে হবে। আপনার চুল বেশি বাড়তে থাকলে ছয় সপ্তাহে একবার করে ছেঁটে নিতে পারেন। চাহিদামতো ট্রিম করালেও ভালো দেখাবে। তবে মুখের গড়ন বুঝে চুলের ছাঁট দিন, স্টাইলিশ দেখাবে।
নিয়মিত শরীরচর্চা
শরীরের বাড়তি ওজন আপনার স্টাইল ও জীবনযাপনে বাধা হয়ে দাঁড়াবে। এ ছাড়া চেহারা ও বডি ঠিক রাখতে শরীরচর্চা খুব জরুরি। আপনি অতিরিক্ত মোটা হলে যতই ভালো কাপড় পরুন না কেন, আকর্ষণীয় দেখাবে না। তাই ফিট থাকতে প্রতিদিন ব্যায়াম করুন এবং নিয়ম মেনে খাবার খান।
ভালো মানের আন্ডারওয়্যার
ব্যাপারটা নিয়ে অনেকেই তেমনটা ভাবেন না। কিন্তু একটা ভালো মানের আন্ডারওয়্যার আপনার ভেতরে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে কাজ করে। সারা দিন ফুরফুরে থাকতে আন্ডারওয়্যার আপনার জন্য টনিকের মতো কাজ করবে। অফিসে হোক বা কোনো দাওয়াতে, বাইরের পোশাকের মতো আপনার ভেতরের পোশাকটাও পরিষ্কার ও আরামদায়ক দেখে বেছে নিন। ছয় মাস পর আন্ডারওয়্যার বা মোজা আর ব্যবহার না করে নতুন কিনুন।
পরিপাটি পোশাক ও অনুষঙ্গ
অনেকেই একটা ভুল ধারণা নিয়ে বসে থাকেন যে স্টাইলিশ হতে হলে আপনাকে প্রতিদিন নতুন ও দামি পোশাক পরতে হবে। অথচ এর বদলে আপনার আলমারির পোশাকগুলো পরিষ্কার রাখা জরুরি। একই পোশাক বারবার পরবেন, তাতে সমস্যা নেই। সেটা শুধু পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখলেই চলবে। তাই বলে আপনি যদি আজকে পরা পোশাকটা না ধুয়ে আবার পরদিন পরেন, তাহলে আপনার স্টাইল মার খেয়ে যাবে। পোশাকগুলো পরিষ্কারের পর শুকিয়ে ইস্তিরি করে রাখুন। এ ছাড়া শার্টের সঙ্গে প্যান্ট বা জুতাটা কেমন পরছেন, সেটা মাথায় রাখুন। সঙ্গে রোদচশমা, ঘড়ি, বেল্ট, টাই বা সাসপেন্ডার (পোশাকের সঙ্গে ব্যবহৃত বিশেষ ধরনের বেল্ট) কোথায়, কীভাবে ব্যবহার করছেন, তার ওপর আপনার সৌন্দর্যের সম্পর্ক গভীর।
দরজির জ্ঞান নিজেরও থাকা চাই
স্টাইলিশ হতে চাইলে পোশাকের সঠিক মাপজোখ, রং আর নকশা সম্পর্কে টুকটাক জ্ঞান থাকাও জরুরি। খুব কম পুরুষই ফ্যাশন হাউসের সঠিক তাকে হাত রাখেন। কেনার আগে পোশাকের সেলাই, রং, নকশার সঙ্গে চলতি ধারা (ট্রেন্ড) কী, সেটা মাথায় থাকলেই আপনি ঠিক পোশাকটা বেছে নিতে পারবেন। প্রয়োজনে একজন বিশেষজ্ঞ বা ডিজাইনারের সঙ্গে আলাপ করে আপনার সঠিক পোশাক নির্বাচন করুন।
কিছু প্রসাধনী সংগ্রহে থাক
প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে নিজেকেই আগে দেখতে হয়। ফ্রেশ চেহারা একটা ভালো লাগা তৈরি করে দিতে পারে দিনের শুরুতেই। তাই ত্বক ও চুলের যত্নে সচেতন থাকবে হবে। যাঁরা শেভ করেন, তাঁরা সকালেই এই পর্বটা সেরে নিন। সে ক্ষেত্রে ভালো মানের রেজর, ফোম বা জেল, আফটার শেভ লোশন ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া ফেশিয়াল ও শ্যাম্পু ব্যবহার করলে মুখ ও চুল থাকবে সতেজ। মুখে ছোট-বড় দাড়ি রাখলে সেটা নিয়মিত ছেঁটে ছোট করে নিন।
আত্মবিশ্বাস অতি জরুরি
যতক্ষণ পর্যন্ত আপনার মধ্যে আত্মবিশ্বাস তৈরি না হবে, ততক্ষণ আপনি পুরোপুরি স্টাইলিশ হিসেবে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারবেন না। নিজেই দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগলে আপনাকে কখনই আকর্ষণীয় দেখাবে না। তাই নিজের ওপর পুরো আস্থা রেখে চলতে শুরু করুন। তার ছাপ আপনার চেহারাতেও ফুটে উঠবে।
নিজের ওপর নজর থাক
নিজেকে দেখার চোখ থাকতে হবে। বিশেষ করে আপনি বাইরে যাওয়ার জন্য তৈরি হওয়ার পর একবার নিজের ওপর চোখ বোলান। শার্টের বোতামগুলো ঠিকমতো লাগানো হলো কি না। প্যান্টের জিপার ঠিকমতো লাগানো হয়েছে কি না, জুতায় ধুলাবালু লেগে নেই তো? বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডায় থাকলেও সেসব মাথায় রাখুন। গন্তব্যে পৌঁছে একবার ওয়াশরুমে গিয়ে ‘চেক’ করে নিন।
হাওয়া বুঝে ছাতা সঙ্গে রাখুন
একটা দারুণ সাজ-পোশাকে বাইরে এলেন আর তখনই শুরু হলো ঝুম বৃষ্টি। আপনার সঙ্গে যদি একটা ছাতা না থাকে, তাহলে কী আর করা, দে দৌড়! একটু আগেই আপনার দিকে যারা হাঁ করে তাকিয়ে ছিল, তারাই আপনার দুর্গতি দেখে হেসে ফেলতে পারে। তাই বৃষ্টির দিনে ছাতা সঙ্গে রাখা বা গরমে একটি রুমাল—স্টাইলিশ পুরুষের জন্য এসব খুব দরকারি। আবহাওয়ার হাওয়া বুঝে বিব্রতকর পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার মতো পর্যাপ্ত উপকরণ সঙ্গে রাখতে হবে।
মোট কথা, আপনার রুচির সঙ্গে মিলিয়ে যত্ন নিয়ে নিজেকে সাজান, আপনাকে স্টাইলিশ দেখাবেই। সেটা সব সময় দামি পোশাক বা অনুষঙ্গে না-ও হতে পারে।
সূত্র: মেনস্টাইলফ্যাশন ডটকম