চাঁদপুরে বাঁধের গোড়ায় পুকুর কাটলেন চেয়ারম্যান
চাঁদপুর প্রতিনিধিঃ
চাঁদপুরের হাইমচরে মেঘনা নদীর তীর তথা হাইমচর রক্ষা বাঁধের ভেতরে ড্রেজার বাসিয়ে ৮৫ শতাংশ জমির উপর পুকুর খনন করলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির শেখ। তিনি ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে গত একবছর ধরে মাটি কেটে টুমচর গাজীনগর এলাকার হাজার পরিবারকে ভাঙনের মুখে ফেলেছেন। এ কারণে সরকারের প্রায় দু’শ কোটি টাকা ব্যয়ে হাইমচর রক্ষা বাঁধ মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। আতঙ্ক দেখা দিয়েছে ওই এলাকার সাধারণ মানুষসহ হাইমচরবাসীর মনে। স্থানীয়দের অভিযোগ চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেনের যোগসাজেশে এহেন কান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন কবির শেখ। মোদ্দাকথা ভাইস চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির শেখের আপন ছোট ভাই হলেন জাহাঙ্গীর হোসেন।
সোমবার সকাল সাড়ে সাতটায় টুমচর গাজীনগর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, হাইমচর রক্ষা বাঁধের কোল ঘেষে ড্রেজার দিয়ে মাটি কেটে বিশাল পুকুর খনন করা হয়েছে। যে কারণে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে হাইমচর রক্ষা বাঁধ। এছাড়া চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়ি বাঁধও হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয়দের মতে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির শেখ প্রতি ফুট মাটি ৭টাকা দরে বিক্রি করেছেন। অথচ আবাদি এ জমিতে তিন ফসল হয়ে থাকে। শুধু তাই নয়, এ পুকুরের ঠিক দক্ষিণ দিকে আরো একটি পুকুর খনন করেছে। তাই যে কোনো মুর্হূতে শুরু হতে পাওে ভয়াবহ ভাঙন।
স্থানীয় বাসিন্দা লতিফ শেখ, রোকেয়া বেগমসহ আরো অনেকেই জানান, হাইমচর রক্ষা বাঁধ দিয়া সরকার আঙ্গো উপকার করছে। অহন নেতারা আমাগো কাপাল ভাঙতে এরুম কাম শুরু করছে। ওই পুকুর না পুরাইলে আমরা ঘুমাইতে পারুম না।
এ ব্যাপারে স্থানীয় চেয়াম্যান হারুনুর রশিদ ভুট্টু জানান, পুকুর দুটিতে প্রায় ৩০ফুট করে মাটি কাটা হয়েছে। যা হাইমচর রক্ষা বাঁধের জন্যে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আমি স্থানীয় চেয়ারম্যান হয়ে নিষেধ করেছি। কারণ এখানেই আমার বসতবাড়ি। আতঙ্কটা আমারই বেশি। এ ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন বলে আশা করছি।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির শেখ জানান, এটা করা ঠিক হয়নি। আগামী সুষ্ক মৌসুমে আমি এগুলো ভরাট করে দেবো।
হাইমচর উপজেলা নির্বার্হী কর্মকর্তা আবু হাসনাত মোঃ মঈনউদ্দিন জানান, আমরা খবর পেয়ে গত পড়শু তথা শুক্রবার ওই এলাকায় অভিযান চালিয়ে দুইজনকে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানা করেছি। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বলেছে আর মাটি কাটবে না। এরপরেও যদি নিষেধ অমান্য করে তবে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর এর নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান জানান, আমি বিষয়টি জানার সাথে সাথে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্যে উপজেলা প্রশাসনকে বলেছি। এছাড়া সহকারী প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর হোসেন ও ভাইস চেয়ারম্যান সর্ম্পর্কের বিষয়ে তিনি বলেন, কে কার ভাই সেটা জানার বিষয় নয়। যদি কেউ অবৈধ কাজ করে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ।