রাষ্ট্রব্যবস্থায় ‘ভাইরাস’ রয়েছে: নওয়াজ
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
পাকিস্তানের সদ্য বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেছেন, বিচারের আগেই তাঁকে সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছিল। রায়ের মাধ্যমে কেবল সেটাকে বৈধ করা হয়েছে। গতকাল সোমবার রায় নিয়ে টেলিভিশন উপস্থাপকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
নওয়াজ বলেন, কোটি মানুষের একজন প্রতিনিধিকে পাঁচজন ‘মহান ব্যক্তি’ যেভাবে সরিয়ে দিলেন, সেটা ঠিক নয়।
পানামা পেপারস কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুর্নীতির অভিযোগে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ আদালত গত ২৮ জুলাই নওয়াজকে প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করার পর ওই দিনই তিনি পদত্যাগ করেন।
গত রোববার পাঞ্জাবের রাওয়ালপিন্ডিতে পাঞ্জাব হাউসে নিজের দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজের (পিএমএল-এন) নেতা-কর্মীদের সঙ্গে এক বৈঠকে নওয়াজ বলেন, রাষ্ট্রব্যবস্থায় তিনি ‘ভাইরাস’ দেখতে পাচ্ছেন, যা নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীদের তাঁদের মেয়াদ পূর্ণ করার সুযোগ দিচ্ছে না।
বৈঠকে নওয়াজ আরও বলেন, পাকিস্তানে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীরা যেখানে জনগণকে সেবা দিতে পেরেছেন গড়ে দেড় বছর করে, সেখানে স্বৈরশাসকদের গড় নয় বছর।
বৈঠকে দেশকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে নওয়াজ শরিফ দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি রাষ্ট্রব্যবস্থার এই ত্রুটি চিহ্নিত করে তা সমাধানের আহ্বান জানান। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী এক ব্যক্তি বলেন, নওয়াজ তাঁদের বলেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগই প্রমাণ করা যাবে না। তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে, কারণ তিনি ‘ছেলের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নেননি’।
দ্য নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, এর আগে গত শনিবার নওয়াজ শরিফ তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায়কে ‘কৌতুক’ বলে মন্তব্য করেন। পাকিস্তানের রাজধানী ইসলামাবাদে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। এ সময় তিনি আরও বলেন, নিজের এলাকা লাহোরে জনসভা করার পরিকল্পনা করছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নওয়াজ বলেন, জাতির সঙ্গে, এবং একজন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এর চেয়ে বড় আর কী কৌতুক হতে পারে? তিনি বলেন, ‘দুর্নীতি বা ঘুষ বা রাষ্ট্রীয় তহবিল তছরুপ করার অভিযোগে এই রায় ঘোষিত হয়নি। তা যদি হতো, তাহলে আমি অত্যন্ত লজ্জিত বোধ করতাম।’
নওয়াজের পদত্যাগের পর পিএমএল-এন নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর দীর্ঘদিনের অনুগত শহিদ খাকান আব্বাসিকে নির্বাচিত করেছে। আগামী বছর পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আগ পর্যন্ত তিনিই সরকার পরিচালনা করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত শুক্রবার নতুন মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা শপথ নিয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশই নওয়াজ শরিফ নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রিসভার সদস্য ছিলেন।