চাঁদপুরের ঈদ আনন্দ ত্রিমোহনায়
চাঁদপুর প্রতিনিধি ॥
পবিত্র ঈদুল আযহার দিন বিকেল থেকেই চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন পদ্মা, মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মিলনস্থল ত্রিমোহনায় দর্শনার্থীদের ভীড় শুরু হয়েছে। শিশু, কিশোর, তরুন-তরুনীসহ সব বয়সী মানুষের আগমনে এ স্থানটি ঈদন আনন্দের মিলস্থলে পরিণত হয়েছে। মুখোরিত হয়ে উঠেছে পুরো এলাকা। সূর্য উঠার পর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নদী আর ও ওই স্থানটির বিভিন্ন রূপে দেখা যায়। নদী পাড়ের খোলা বাতাস আর নদীর ঢেউ যে কোন মানুষের হৃদয় ছোঁয়া লাগায়। তাইতো প্রিয়জনদের নিয়ে এ অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসে।
রোববার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ত্রিমোহনায় গিয়ে দেখা গেছে হাজার হাজার মানুষ। এর মধ্যে শিশুদেরকে বেশী আনন্দ করতে দেখা গেছে। বাসা-বাড়ীতে নির্দিষ্ট আবদ্ধ জায়গার বাহিরে খোলা জায়গা পেয়ে ছুটাছুটি করছে শিশুরা। আবার অনেক শিশু খেলনা ও খাবারের দোকানে ভীড় জমাচ্ছে। ঈদকে কেন্দ্র করে মোহনায় ভ্রাম্যমান খাবারসহ অনেক ছোট ছোট অস্থায়ী দোকান গড়ে উঠেছে।
দর্শনার্থীদের বেশীর ভাগ তরুর তরুনি এবং অনেক দম্পত্তিকে নদীর পাড়ে গিয়ে স্মার্টফোনে সেলফি ও ছবি তুলছেন। আবার কেউ কেউ মেঘনা নদীর পশ্চিম পাড় চরাঞ্চলে যাচ্ছেন ইঞ্জিন চালিত ট্রলার দিয়ে। মেঘনা পার হতে জনপ্রতি নেয়া হচ্ছে ৫০ টাকা। ডাকাতিয়া নদীতে ¯্রােত কম থাকায় সাউন্ড সিস্টেম নিয়ে ট্রলারে নাচে গানে মেতে উঠছে তরুনরা। আবার অনেক দর্শনার্থী স্পিডবোটেও নদীতে ঘুরতে দেখা গেছে।
জেলার কচুয়া উপজেলা থেকে ঘুরতে আসা খালেদ হাছান বলেন, স্ত্রী ও বন্ধুসহ তারা ৩ পরিবারের লোক এখানে ঘুরতে এসেছেন। পরিবারের লোকদেরকে সারা বছর সময় দেয়া সম্ভব হয় না। তাই এখানে এসে তারা খুব আনন্দ উপভোগ করছেন। অনেক ছবি তুলেছেন এবং সবাই মিলে মজা করেছেন।
শহরের বাসিন্দা কলেজ শিক্ষক মোশাররফ হোসেন বলেন, ত্রিমোহনা একটি অপরূপ দর্শনীয় স্থান। শহরে কোন পার্ক কিংবা বিনোদনের জায়গা না থাকায় বর্তমানে এটিই একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র। পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে সরকার ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছেন। প্রায় সময় আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে সময় কাটাই। তবে আলোর ব্যবস্থা না থাকায় সন্ধ্যার পর কোন মানুষ থাকা সম্ভব হয় না। নিরাপত্তাজনিত কারণে সবাই চলে যায়। এছাড়াও বসার স্থানগুলো উন্নত করা এবং বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে চাউনী তৈরী করা জরুরি।
চাঁদপুর প্রেসক্লাবের সেক্রেটারী ও জেলা ব্র্যান্ডিং কমিটির সদস্য জিএম শাহীন বলেন, ত্রিমোহনা এখন জেলা ও জেলার বাহিরের লোকের কাছে পরিচিত বিনোদন কেন্দ্র। এ স্থানটিকে আরো দৃষ্টিনন্দন ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জেলা ব্র্যান্ডিং কমিটি বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। আগামী ১ মাসের মধ্যে আলোর ব্যবস্থা করা হবে। বৃষ্টি থেকে রক্ষা পেতে চাউনী করা হবে। ইলিশের বাড়ী চাঁদপুর লগো সম্বলিত একটি স্থাপনা এবং সেলফি স্ট্যান্ড তৈরী করা হবে।
চাঁদপুর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সবুর মন্ডল বলেন, ত্রিনদীর মোহনার সৌন্দর্য বাস্তবে এসে না দেখলে কেউ বিশ^াস করতে পারবে না। আমরা এ স্থানটিকে শুধু দেশবাসী নয়, বিশ^বাসীর কাছে আকর্ষনীয় বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। সে আলোকে জেলা ব্র্যান্ডিং কমিটি কাজ করছে।