‘মেয়ের লাশ রেখে পালিয়ে গেলেন বাবা’
নারায়ণগঞ্জ বন্দর কামতাল এলাকায় নানার বাড়িতে নিজের কন্যা সন্তানের লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক পিতার বিরুদ্ধে। যদিও আলমগীর ওরফে আলম নামের ওই ব্যক্তি দাবি, দাফনের টাকা যোগাড় করার উদ্দেশ্যে মেয়ের লাশ রেখে চলে আসতে হয়েছে তাকে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) সকালে কামতাল গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। যা ওই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
ওই কিশোরীর নাম নাম আখি আক্তার (১৩)। সিদ্দিরগঞ্জ সানারপাড় এলাকায় তারা ভাড়া থাকতো। বুধবার সকালে কিশোরীটি আত্মহত্যা করে।
আখির মামা মাসুম মিয়া জানান, সিদ্দিরগঞ্জ থানার দক্ষিণ সানারপাড় আনু মিয়ার বাড়িতে ভগ্নিপতি আলমগীর ওরফে আলম ভাগনি আখি আক্তার ও ভাগিনা মামুনকে নিয়ে ভাড়া থাকেন। ভাগিনা-ভাগনি দুইজনই মাদ্রসায় পড়ে।
বুধবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে ভগ্নিপতি আলম টেক্সিক্যাব দিয়ে ভাগনি আখির লাশ নানার বাড়িতে নিয়ে এসে সে স্ট্রোক করে মারা গেছে বলে লাশ রেখে চলে যায়। পরে নিরুপায় হয়ে নানার বাড়ির লোকজন পুলিশকে খবর দেয়।
পুলিশের ধারণা আখি আত্মহত্যা করেছে। পরে পুলিশ ভাগিনা মামুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে বলেছেন, ‘বুধবার সকালে নাস্তা আনতে বাহির হই। নাস্তা এনে ঘরে দেখতে পায় আখি ঘরের ফ্যানের রডের সঙ্গে ঝুলে রয়েছে। এরপর বাবাকে ফোন করি। বাবা বাড়িতে এসে লাশ নামিয়ে নানার বাড়িতে নিয়ে আসে।’
তবে মেয়ের লাশ ফেলে পালিয়েছেন এমন অভিযোগ অস্বীকার আলমগীর ওরফে আলম বলেছেন, ‘সকাল বেলা মাদরাসা না যাওয়ার জন্য মেয়ে বায়না ধরে। এ সময় মাদরাসা যাওয়ার জন্য চরধাপ্পর ও গালাগালি করে কাজে বাহির হই। পরে ছেলে মামুন ফোন করে জানায় আখি ওড়না দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে আছে। পরে কোন উপায় খুঁজে না পেয়ে লাশ শশুরবাড়িতে নিয়ে আসি। দাফন-কাফনের টাকা ম্যানেজ করতে লাশ রেখে চলে আসতে হয়েছে।’
আখির লাশ নিয়ে বিভ্রান্তের পড়ে বন্দর থানার পুলিশ। এ বিষয়ে কোন থানার পুলিশ দায়িত্ব নিবে তা নিয়ে বন্দর ও সিদ্দিরগঞ্জ দুই থানার মধ্যে মতভেদ দেখা দেয়। পরে জেলা পুলিশের উধ্বর্তন কর্মকর্তাদের নিদের্শে সিদ্দিরগঞ্জ থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে।
কামতাল তদন্ত কেন্দ্রর ইনচার্জ ইনপেক্টর মোস্তাফিজুর রহমান জানিয়েছেন, সিদ্দিরগঞ্জ দক্ষিণ সানারপাড় এলাকায় ভাড়া বাড়িতে ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী আখি গলায় ওড়না দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করে । পরে কামতাল নানার বাড়িতে মেয়ের লাশ ফেলে রেখে বাবা পালিয়ে যায়। সিদ্দিরগঞ্জ থানা পুলিশের মাধ্যমে লাশ উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ মর্গে প্রেরণ করা হয়